‘২-১ সপ্তাহে পাওয়ার হিটিং শেখা যাবে না’

ছবি: বিসিবি

ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের হাত ধরে সবশেষ কয়েক বছরে আমূল পরিবর্তন এসেছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। আধুনিক ক্রিকেটে টিকে মারকাটারি ব্যাটিং চার-ছক্কা মারার বিকল্প নেই ব্যাটারদের হাতে। নিকোলাস পুরান, আন্দ্রে রাসেল, লিয়াম লিভিংস্টোন, ট্রাভিস হেড, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, হেনরিখ ক্লাসেনরা আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে টি-টোয়েন্টির ধরণই পাল্টে দিয়েছেন। তবে পাওয়ার ক্রিকেটের সঙ্গে বাংলাদেশের পার্থক্যটা অনেক।
জ্যোতিদের নিয়ে চলছে জুলিয়ান উডের পাওয়ার হিটিং ক্লাস
১৩ আগস্ট ২৫
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এগিয়ে গেলেও সেটার সঙ্গে একেবারেই তাল মেলাতে পারেনি বাংলাদেশ। বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট এলে ঘাটতিটা আরও স্পষ্ট হয়। সেই ঘাটতি কাটিয়ে উঠতেই জুলিয়ান উডের দ্বারস্থ হয়েছে বিসিবি। ভারত না আসায় আগষ্টের সময়টা ক্যাম্প করে কাটাচ্ছে। সেই ক্যাম্পের জন্যই চার সপ্তাহের জন্য লিটনদের সঙ্গে কাজ করতে উডকে এনেছে বিসিবি। বাংলাদেশে এসেই স্থানীয় কোচদের ক্লাস নিয়েছেন তিনি। বিকেএসপিতে কাজ করেছেন নারী ক্রিকেটারদের সঙ্গেও।
মিরপুরে ফিটনেস ক্যাম্প শেষে লিটন, জাকের, শামীমদের সঙ্গে শুরু হয়েছে উডের পাওয়ার হিটিং অনুশীলন। নিজের সব বিশেষ টুলস দিয়ে ক্রিকেটারদের পাওয়ার হিটিংয়ে উন্নতি করার চেষ্টা করছেন তিনি। অনেকের ধারণা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের মতো শারীরিক গঠন না থাকায় বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে পাওয়ার নেই। উড অবশ্য এমন কথা বিশ্বাস করেন না। বরং ইংলিশ কোচ জানালেন, বাংলাদেশের ব্যাটারদের পাওয়ার আছে। তবে সেই পাওয়ার কিভাবে ম্যাচে ব্যবহার করতে হবে সেটাই শেখানোর চেষ্টা করছেন তিনি।

নতুন চুক্তিতে সিলেটে দলের সঙ্গে যোগ দিলেন অ্যানালিস্ট অক্ষয়
৩৮ মিনিট আগে
সিলেটে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে উড বলেন, ‘একটা মিথ আছে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে পাওয়ার নেই। আপনি যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজের দিকে তাকান তাহলে শারীরিকভাবে একটু বড় গড়নের, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা শক্তিশালী। বাংলাদেশের ছেলেরা শারীরিক গঠনের দিক থেকে একটু ছোট কিন্তু তাদের পাওয়ার আছে। আমাকে বিশ্বাস করুন, তাদের যথেষ্ট পাওয়ার আছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে আপনি পাওয়াটাকে কিভাবে ব্যবহার করবেন। আপনাকে জানতে হবে পাওয়ারকে আপনি কিভাবে একসেস করবেন।’
‘ছেলেরা এখন যেভাবে খেলছে...এটা আসলে একটা প্রক্রিয়ার ব্যাপার। এক কিংবা দুই সপ্তাহের মধ্যেই হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন না। আপনি হয়ত কিছুটা পার্থক্য দেখতে পারবেন। যেটা বললাম এটা একটা প্রসেস, আপনাকে বুঝতে হবে এবং প্রসেসকে বিশ্বাস করতে হবে। যারা একটু ছোট গড়নের তারা বেশিরভাগ সময়ই রিদম, টাইমিং এবং মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে। এসব জিনিস যখন ঠিক থাকবে তখন ভেলোসিটি বেড়ে যায়। এটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তাদেরকে বুঝানো হচ্ছে শরীর এবং হাতের সমন্বয়ে কিভাবে পাওয়ার বাড়াতে হবে।’
বাংলাদেশের ব্যাটাররা পাওয়ার হিটিংয়ের সঙ্গে খুব বেশি পরিচিত না হওয়ায় অনেকের ধারণা জাকের, শামীম কিংবা লিটনদের দিয়ে হবে না। বাইরে থেকে এমন মন্তব্য না করার পরামর্শ দিয়েছেন উড। বাংলাদেশের পাওয়ার হিটিং কোচ মনে করেন, এভাবে বলতে থাকলে একটা সময় ক্রিকেটাররাও বিশ্বাস করতে শুরু করবে তাদের দিয়ে হবে না। এজন্য পুরো প্রক্রিয়ার উপর বিশ্বাস রেখে ব্যাটারদের সমর্থন দিতে বলছেন তিনি।
উড বলেন, ‘এই বিষয়টা পুরোপুরি মাইন্ডসেটের উপর নির্ভর করে। এটা আমরা দেখভাল করছি, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছি এবং কাজও করছি। যেটা আগেও বললাম এটা একটা প্রসেস। যারা গ্রুপের বাইরে থাকে তারা অনেক সময়ই বলতে থাকে তারা এটা করতে পারবে না, এটা আসলে তাদের হেল্প করে না। আপনি যখন কাউকে বলতেই থাকবেন সে পারবে না তখন সে বিশ্বাস করতে থাকে সে পারবে না। আমার কাজটা হচ্ছে তাদেরকে টুলস দেয়া, ওই মাইন্ডসেটটা তৈরি করা এবং তারা যেন মনে করে এটা তারা করতে পারবে। বিশ্বাস করুন তারা সেটা করতে পারবে। আপনার যখন নিজের বিশ্বাস থাকবে তখন সেটা কাজে দেবে। এটা অনেক বড় বিষয়।’