সাকিবের দুবাইকে উড়িয়ে টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে রংপুর

ছবি: ফাইল ছবি

এদিকে বিপরীতে চার ম্যাচের তিনটিতে হেরে ফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে গেছে দুবাই ক্যাপিটালস। এমন ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন রংপুরের অধিনায়ক সোহান।
আবারও খালেদের ৪ উইকেট, হোবার্টকে হারাল রংপুল
১৩ জুলাই ২৫
ব্যাটিংয়ে নেমে রংপুরকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি ইব্রাহিম জাদরান ও সৌম্য সরকার। ইনিংসের প্রথম ওভারেই তাদের দুজনের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন ডমিনিক ড্রেকস। বাঁহাতি পেসারের ভেতরে ঢোকা লেংথ ডেলিভারিতে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন ইব্রাহিম। ডানহাতি ওপেনারকে হারানোর পর দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেন সৌম্য ও মেয়ার্স। কানাডার পেসার কালিম সানাকে এক ওভারে তিন ছক্কা মারেন তারা দুজন।
যদিও মেয়ার্স ও সৌম্যর জুটি ভেঙেছে পাওয়ার প্লে শেষের আগেই। মুস্তফার লেংথ ডেলিভারিতে লং অনের উপর দিয়ে খেলার চেষ্টায় ড্রেকসের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ২ ছক্কা ও এক চারে ১১ বলে ১৯ রান করা মেয়ার্স। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে চারে নামলেও সেটা কাজে লাগাতে পারেননি মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। আফগান স্পিনার কাইস আহমেদের বলে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় তাঁরই হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১৫ বলে ১১ রান করে।
একটু পর আউট হয়েছেন সৌম্যও। বাঁহাতি ওপেনার লম্বা সময় খেললেও প্রত্যাশিতভাবে দ্রুত রান তুলতে পারেননি। সাকিবের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলেই ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মেরেছিলেন তিনি। তবে চতুর্থ বলেই তাকে ফেরান বাঁহাতি এই স্পিনার। সাকিবের আর্ম ডেলিভারিতে সুইপ করে ছক্কা মারতে গিয়ে টপ এজ হয়ে সেদিকউল্লাহকে ক্যাচ দিয়েছেন। রংপুরের ওপেনার আউট হয়েছেন ৪ ছক্কায় ২৯ বলে ৩৬ রান করে।
দেখেশুনে ব্যাটিং করলেও আবারও জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হয়েছেন ওমরজাই। গুলবাদিনের অফ স্টাম্পের বাইরের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে মিড অফের উপর দিয়ে খেলতে গিয়ে ড্রেকসের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১৩ বলে ৮ রান করে। তবে ইফতিখার ও সোহান মিলে রংপুুরের রান বাড়িয়েছেন। যেখানে তারা দুজনে মিলে শেষ ২ ওভারে ৩৭ রান তুলেছেন। তাদের ব্যাটেই ৫ উইকেটে ১৫৮ রান তোলে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

সাকিব থাকার সময় আমাদের ল্যাক্সারি করার সুযোগ ছিল: সালাহউদ্দিন
১৫ জুলাই ২৫
রংপুরের হয়ে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ১৮৮.৮৯ স্ট্রাইক রেটে ১৮ বলে অপরাজিত ৩৪ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেছেন অধিনায়ক সোহান। এ ছাড়া পাকিস্তানি অলরাউন্ডার ইফতিখারের ব্যাট থেকে এসেছে অপরাজিত ৩২ বলে ৪১ রান। দুবাইয়ের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন ড্রেকস, নাইব, মুস্তফা, কাইস ও সাকিব। এক উইকেট নিতে ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়েছেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার।
এরপর দুবাই ক্যাপিটালসের বিপক্ষে প্রথম ওভারেই উইকেট এনে দেন কাইল মেয়ার্স। ডানহাতি মিডিয়াম পেসারের স্লোয়ার ডেলিভারিতে এক রানে বোল্ড হয়েছেন কাদিম অ্যালিইনে। পরের ওভারে শুন্য রান করা গুলবাদিন নাইবের উইকেট নিয়েছেন ইফতিখার আহমেদ। ডানহাতি অফ স্পিনারের অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের ডেলিভারিতে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন দুবাইয়ের অধিনায়ক।
পঞ্চম ওভারের শেষ বলে রংপুরকে উইকেট এনে দেন সাইফ হাসান। তার লেংথ বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অনে ধরা পরেন নিরোশান ডিকওয়েলা। এ দিন তিনি করেন ১২ বলে ৯ রান। পাওয়ার প্লে'তে দুবাই করে তিন উইকেটে ৩৮ রান।
১১ ওভারের মধ্যে সঞ্জয় কৃষ্ণমূর্তিকে ফেরান রাকিবুল হাসান। রাকিবুলের গুড লেংথের বলটি মিড অফে খেলতে চেয়েছিলেন সঞ্জয়, যদিও বলটি তিনি শর্ট কাভারে তুলে ক্যাচ আউট হন ২২ বলে ২৭ রান করা এই ব্যাটার। এরপর সাইফ হাসানের বলে স্টাম্পিং হন সাকিব। সাত বলে মাত্র তিন রানে আউট হন এই অলরাউন্ডার। সাইফের গুড লেংথের বলে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন সাকিব, কিন্তু লাইন মিস করেন তিনি। সুযোগ পেয়ে একটুও দেরি করেননি সোহান।
সাকিব ফেরার পর এক রান যুক্ত করতেই ফিরে যান ওপেনার সেদিকউল্লাহ আতাল। তাকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন সাইফ। ফেরার আগে ৩১ বলে ৩৮ রান করেম আতাল। ১৪ ওভারের মধ্যে দলীয় শতরান পার করে দুবাই। দলীয় ১১৫ রানে রান আউটে কাটা পরেন জেসি বুটান। খালেদ আহমেদের লেংথ ডেলিভারিটি বুটানের পায়ে লাগে, বলটি খালেদের বাম পাশে থাকলেও সিঙ্গেলস নিতে যান বুটান। অপরপ্রান্তের ব্যাটার না করে দিলে উইকেটের মাঝপথ থেকে স্ট্রাইকে ফিরতে চান তিনি। যদিও খালেদ ততক্ষনে থ্রো করে স্টাম্প ভাঙেন।
১১ বলে ১৫ রান করে বুটান ফিরে যান। ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে যায় দুবাই। কিন্তু ১৯তম ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে দুটি ছক্কা ও একটি চার মেরে দুবাইকে ম্যাচে ফেরান কাইস আহমেদ। তার ফুলার লেংথের বলে আরেকটি ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন আট বলে ১৮ রান করা কাইস। শেষ ওভারে দুবাইয়ের দরকার ছিল ৯ রান। কিন্তু শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলেই খালেদ বিদায় করেন ১৬ বলে ২২ রান করা ডমিনিক ড্রেকসকে। ফলে আট রানে ম্যাচটি জিতে যায় রংপুর।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
রংপুর রাইডার্স— ১৫৮/৫ (২০ ওভার) (ইব্রাহিম ১, সৌম্য ৩৬, মেয়ার্স ১৯, অঙ্কন ১১, ইফতিখার ৪১*, সোহান ৩৪*; সাকিব ১/১৬)
দুবাই ক্যাপিটালস— ১৫০/১০ (১৯.২ ওভার) (সেদিকউল্লাহ ৩৮, সঞ্জয় ২৭, ড্রেকস ২২; সাইফ ৩/২০, খালেদ ২/১৪)