দুই দলের হয়ে শিরোপা জয়ী ক্রিকেটাররা

ছবি: ছবি- সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
আইপিএলে সেরা দল কোনটি? উত্তর দিতে আপনি কিছুটা দ্বিধা-দন্দে পড়ে যেতে পারেন। আবার যদি আইপিএলের সেরা দুটি দলের নাম বলতে বলা হয়, নিঃসন্দেহে আপনি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স আর চেন্নাই সুপার কিংসের কথাই বলবেন। কারণ আইপিএলের বারো আসরে চারবার শিরোপা জিতেছে মুম্বাই।
অপরদিকে চেন্নাই জিতেছে তিনবার। শুধু তাই নয়, দশ বার খেলে দশ বারই প্লেঅফে কোয়ালিফাই করেছে মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। অবশ্য এদিক দিয়ে মুম্বাই একটু পিছিয়েই রয়েছে। বারো বার খেলে তারা আট বার কোয়ালিফাই করেছে প্লেঅফে।
সুতরাং পরিসংখ্যানের বিচারে আইপিএলের সেরা দল দুটি যে মুম্বাই এবং চেন্নাই এতে সন্দেহের অবকাশ নেই। আর এই দুই দলে খেলতে পারাটা যেকোনো ক্রিকেটারের জন্যই যে সৌভাগ্যের সেটিও বলার অপেক্ষা রাখে না।
তবে যারা চেন্নাই এবং মুম্বাই দুই দলের হয়েই আইপিএল জিতেছেন তাদের ক্ষেত্রে আপনার বক্তব্য কি হতে পারে! তাঁদেরকে কি হিসেবে অভিহিত করবেন? ভাগ্যবান? এমনই কয়েকজন ক্রিকেটার নিয়ে আজকের এই প্রতিবেদন। চলুন দেখে নেয়া যাক দুই দলের হয়ে আইপিএল জেতা ক্রিকেটারদের তালিকাটিঃ
আম্বাতি রাইডুঃ ২০১০ সালে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে আইপিএল অভিষেক হয় রাইডুর। ২০১৭ সাল পর্যন্ত একই দলের হয়ে খেলা এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান পরের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে পাড়ি জমান চেন্নাই সুপার কিংসে।

এই দুই দলের হয়ে চারবার আইপিএল শিরোপা জেতার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। ২০১৩ সালে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয় মুম্বাই। সেবার ১৯ ম্যাচে ২৬৫ রান করেন রাইডু। এরপর ২০১৫ সালে তাঁর ব্যাট থেকে আসে ১৫ ম্যাচে ২৮১ রান। সেবারও শিরোপা জয় করে তাঁর দল।
২০১৭ সালেও চ্যাম্পিয়ন মুম্বাইয়ের সদস্য ছিলেন ৩৪ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। সেবার ৫ ম্যাচে ৯১ রান করেন তিনি। অবশ্য দল বদলের সঙ্গে বদলে যায় রাইডুর ব্যাটিং অর্ডার এবং পারফরম্যান্স। চেন্নাইয়ে গিয়ে ওপেনিংয়ে ফেরেন দুর্দান্ত ফর্মে। একই সঙ্গে চেন্নাইকে শিরোপা জেতাতে রাখেন বিশেষ ভূমিকা। ১৬ ম্যাচে ৪৩ গড়ে রাইডুর ব্যাট থেকে আসে ৬০২ রান।
হরভজন সিংঃ আইপিএলের প্রথম আসর থেকেই মুম্বাইয়ের হয়ে খেলেছেন ভারতের তারকা স্পিনার হরভজন সিং। দলটির হয়ে ২০১৩, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে শিরোপা জেতেন তিনি। এরপর ২০১৮ সালে তাঁকে দলে ভেড়ায় চেন্নাই সুপার কিংস। চেন্নাইয়ের হয়েও সে বছর আইপিএলে জেতেন এই অফস্পিনার।
২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন মুম্বাইয়ে তাঁর অবদান ছিল ১৯ ম্যাচে ২৪ উইকেট। এরপর ২০১৫ সালে ১৫ ম্যাচে ১৮টি উইকেট শিকার করেন তিনি। তবে ২০১৭ সালের আইপিএলে তেমন ভালো সময় যায়নি ৩৯ বছর বয়সী হরভজনের। সেবার ১১ ম্যাচে মাত্র ৮ উইকেট শিকার করতে সক্ষম হন তিনি। পরের আসরে আরো ২ ম্যাচ বেশি খেলে ৭ উইকেট নেন জাতীয় দলের এই তারকা ক্রিকেটার।
পার্থিব প্যাটেলঃ চেন্নাই ও মুম্বাইয়ের হয়ে ৩ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে পার্থিবের। তবে এই দুই দল বাদেও তিনি খেলেছেন আরো চারটি দলে। চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে ২০০৮ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত খেলেন বাঁহাতি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। যেখানে ২০১০ সালে চ্যাম্পিয়ন চেন্নাইয়ের হয়ে ৪ ম্যাচে ৭৮ রান করেন তিনি।
এরপর কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি দলে বেশিদিন খেলেননি পার্থিব। ২০১২ সালে ডেকান চার্জার্সের হয়ে খেলার পর ২০১৩ সালে পাড়ি জমান হায়দ্রাবাদে। এর পরের আসরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর জার্সিতে মাঠে নামেন তিনি।
২০১৫ সালে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের ঠিকানা হয় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে। সেবার দলটির হয়ে শিরোপা জেতেন তিনি। সেই আসরে তাঁর ব্যাট থেকে আসে ১৪ ম্যাচে ৩৩৯ রান। ৫ফুট ৩ইঞ্চি উচ্চতার এই ব্যাটসম্যান পরের দুই আসরেও খেলেন মুম্বাইয়ের হয়ে। ২০১৭ সালে ১৬ ম্যাচে ৩৯৫ রান করে দলকে শিরোপা এনে দিতে অন্যতম ভূমিকা রাখেন তিনি।
টিম সাউদিঃ ২০১১ সালে প্রথমবার আইপিএল খেলেই শিরোপা জেতেন টিম সাউথি। সেবার চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে ৫ ম্যাচে ৪ উইকেট শিকার করেন নিউজিল্যান্ডের এই তারকা পেসার। তবে পরের দুই আসরে ভাগ্যের শিকে ছেঁড়েনি তাঁর। কারণ কোনো দলই সাউদির প্রতি আগ্রহ দেখায়নি।
এরপর ২০১৪ সালে রাজস্থান রয়্যালসে ঠাই হয় ৩১ বছর বয়সী এই ডানহাতি পেসারের। রাজস্থানের হয়ে অবশ্য খুব বেশিদিন থিতু হননি তিনি। ২০১৬ সালে মুম্বাইয়ের হয়ে মাঠ মাতানো সাউদিকে পরের বছরও ধরে রাখে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। সেবার মুম্বাইয়ের হয়ে শিরোপা জেতেন ৩ ম্যাচে ৩ উইকেট নেয়া সাউদি। পরিবর্তীতে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে ব্যাঙ্গালুরুতে পাড়ি জমান তিনি।
কার্ন শর্মাঃ ডানহাতি এই লেগ স্পিনার তিনটি ফ্রাঞ্চ্যাইজির হয়ে আইপিএল শিরোপা জিতেছেন। ২০১৬ সালে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে প্রথম শিরোপা জেতার পর ২০১৭ সালে ৩ কোটি টাকায় তাঁকে দলে ভেড়ায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
সেবার মুম্বাইকে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জেতাতে কার্ন শর্মার অবদান ছিল ৯ ম্যাচে ১৩ উইকেট। পরের আসরে চেন্নাইতে গিয়েও চ্যাম্পিয়নের স্বাদ পান ৩২ বছর বয়সী এই লেগি। ৫ কোটি টাকায় চেন্নাইয়ে যাওয়া এই স্পিনার ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে অবশ্য ছিলেন নিস্প্রভ। সেবার ৬ ম্যাচে মাত্র ৪টি উইকেট নেন তিনি।