সেরা চারের লড়াইয়ে ৭ দল, কার কী সমীকরণ

ছবি: ফাইল ছবি

হায়দরাবাদ, চেন্নাই ও রাজস্থান ছিটকে গেলেও সেরা চারে যাওয়ার লড়াইয়ে আছে সাতটি দল। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর সঙ্গে তালিকায় আছে পাঞ্জাব কিংস, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, গুজরাট টাইটান্স, দিল্লি ক্যাপিটালস, কলকাতা নাইট রাইডার্স ও লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। সাতটি দলের সম্ভাবনা থাকলেও তাদের কার কী সমীকরণ এক নজরে সেটা দেখে নেয়া যাক—
৩ বছর পর বেঙ্গালুরুর নেতৃত্ব ছাড়া নিয়ে মুখ খুললেন কোহলি
২৬ মিনিট আগে
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু—
১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট, নেট রানরেট— (+০.৪৮২)
বাকি ম্যাচ— লক্ষ্ণৌ (অ্যাওয়ে), হায়দরাবাদ (হোম), কলকাতা (হোম)
আইপিএলে এখন পর্যন্ত শিরোপা জিততে না পারা বেঙ্গালুুরু চলতি মৌসুমে দারুণ ছন্দে আছে। ১১ ম্যাচ খেলা রজত পাতিদার-বিরাট কোহলিরা জয় পেয়েছেন ৮ ম্যাচে। ১৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে সবার উপরে অবস্থান করছে তারা। ৫ মে (সোমবার) রাতে হায়দরাবাদ ও দিল্লির ম্যাচ বৃষ্টির কারণে ভেসে যাওয়ায় সমীকরণ সহজ হয়েছে বেঙ্গালুরুর জন্য। নিজেদের শেষ তিন ম্যাচের মাত্র একটিতে জিততে পারলেই সেরা চারে জায়গা করে নেবেন কোহলিরা।
বেশ কয়েকটি দলের ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় এখনো পাঁচটি দলের ১৮ পয়েন্ট হওয়ার সুযোগ আছে। সবার পয়েন্ট যদি সমান হয় সেক্ষেত্রে ৯ জয় পাওয়া বেঙ্গালুরু সেরা চারে উঠে যাবে। ১৬ পয়েন্ট নিয়েও তারা প্লে-অফে যেতে পারে। তবে সেটার জন্য বাকি দলগুলো দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। এদিকে তিন ম্যাচের দুটিতে জিতলেও তাদের সেরা দুইয়ে থাকা নিশ্চিত নয়। কারণ এখনো তিনটি দলের ২০ কিংবা তার চেয়ে বেশি পয়েন্ট পাওয়ার সুযোগ আছে।
পাঞ্জাব কিংস—
১১ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট, নেট রানরেট— (+০.৩৭৬)
বাকি ম্যাচ— দিল্লি (হোম), মুম্বাই (হোম), রাজস্থান (অ্যাওয়ে)
আইপিএলে এখন পর্যন্ত নিজেদের লিগ্যাসি তৈরি করতে না পারা পাঞ্জব চলতি মৌসুমে দারুণ ছন্দে। রিকি পন্টিং ও শ্রেয়াস আইয়ার জুটিতে ১১ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে আছে পাঞ্জাব। সেরা চারে যেতে হলে অন্তত আরও দুটি ম্যাচে জিততে হবে তাদেরকে। দুটি ম্যাচ জিতলে পাঞ্জাবের পয়েন্ট হবে ১৯। যদিও রান রেটের হিসেবের উপর নির্ভরশীল না হয়েও ১৫ পয়েন্ট নিয়ে সেরা চারে উঠতে পারে তারা।
এমন কিছুর জন্য বাকি দলগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে পাঞ্জাবকে। তবে তারা যদি শেষ তিনটি ম্যাচেই জয় পায় তাহলে তাদের সেরা দুইয়ে থাকা নিশ্চিত। যদিও কাজটা একেবারেই সহজ নয় তাদের জন্য। কারণ তিন ম্যাচের দুটি খেলা আছে পয়েন্ট টেবিলের সেরা পাঁচে থাকা দলের সঙ্গে। তাদের সঙ্গে কিভাবে জয় পাচ্ছে কিংবা হারছে এগুলো ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেললে প্লে-অফের সমীকরণে।

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স—
১১ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট, নেট রানরেট— (+১.২৭৪)
বাকি ম্যাচ- গুজরাট (হোম), পাঞ্জাব (অ্যাওয়ে), দিল্লি (হোম)
প্রত্যাশিতভাবেই আইপিএল এবারের আসরের শুরুটাও ভালো হয়নি মুম্বাইয়ের। নিজেদের খেলা প্রথম পাঁচ ম্যাচের মাত্র দুটিতে জিতলেও পরবর্তীতে ছন্দ খুঁজে পেয়েছে তারা। সবশেষ ছয় ম্যাচের সবকটিতে জিতে সেরা চারে ওঠার লড়াইয়ে বেশ ভালোভাবেই আছে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। শুধু ছয়টি ম্যাচে তারা জয়ই পায়নি বেশিরভাগ ম্যাচই তারা বড় ব্যবধানে জিতেছে। চারটি ম্যাচে মুম্বাই জয় পেয়েছে ৫০—এর বেশি রান কিংবা ২৫—এর বেশি বল বাকি থাকতে। যার ফলে সবার চেয়ে বেশি রানরেট (+১.২৭৪) তাদের।
শেষ তিন ম্যাচের দুটিতে জিততে পারলেই সেরা চারে উঠবে মুম্বাই। তবে সবগুলো ম্যাচে জিততে পারলে ২০ পয়েন্ট নিয়ে সেরা দুই নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের। ১৬ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলের ফলাফলের উপর। তবে একটি ম্যাচেও যদি জিততে না পারে তখন গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হবে তাদের। কারণ সবগুলো ম্যাচ হারলে তিন প্রতিপক্ষই মুম্বাই উপরে উঠে যাবে। যেখানে আগে থেকেই ১৬ পয়েন্ট নিয়ে বসে আছে বেঙ্গালুরু।
গুজরাট টাইটান্স—
১০ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট, নেট রানরেট— (+০.৮৬৭)
বাকি ম্যাচ— মুম্বাই (অ্যাওয়ে), দিল্লি (অ্যাওয়ে), লক্ষ্ণৌ (হোম), চেন্নাই (হোম)
১০ ম্যাচে ৭ জয়ে গুজরাটের পয়েন্ট ১৪। বেশ কিছু ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিততে পারায় তাদের নেট রানরেটও (+০.৮৬৭) ভালো। তাদের চেয়ে ভালো নেট রানরেট কেবল মুম্বাইয়ের। সেরা চারে যাওয়ার লড়াইয়ে থাকতে অন্তত একটি ম্যাচ জিততে হবে মুম্বাই ও গুজরাটকে। যেখানে দুটি ম্যাচ জিততে পারলে তাদের প্লে-অফে যাওয়া নিশ্চিত। তবে চার ম্যাচের সবগুলোতে হারলে তারা গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেবে গুজরাট। ঘরের মাঠে দুটি খেলা থাকায় প্লে-অফে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কারণ চলতি মৌসুমে আহমেদাবাদে ৫ ম্যাচের চারটিতে জয় পেয়েছেন শুভমান গিলরা।
দিল্লি ক্যাপিটালস—
১১ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট, নেট রানরেট— (+০.৩৬২)
বাকি ম্যাচ— পাঞ্জাব (অ্যাওয়ে), গুজরাট (হোম), মুম্বাই (অ্যাওয়ে)
ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় হায়দরাবাদের সঙ্গে দারুণ এক পয়েন্ট পেয়েছে দিল্লি। আর একটি ম্যাচ জিতলেই ১৫ পয়েন্ট নিয়ে সেরা চারে যেতে পারে তারা। তবে সেটার জন্য তাকিয়ে থাকতে হবে অন্যদলগুলোর ফলাফলের দিকে। এমনকি ১৭ পয়েন্ট নিয়েও প্লে-অফে উঠতে পারবে তারা। এখনো ৬টি দলের ১৭ পয়েন্ট কিংবা তার চেয়ে বেশি পয়েন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। শেষের তিনটি ম্যাচেই যদি জিততে পারে তাহলে তাদের সেরা চারে ওঠা নিশ্চিত। তবে শেষ ৫ ম্যাচের মাত্র একটিতে জয় পাওয়ায় শঙ্কা আছে প্রবল।
কলকাতা নাইট রাইডার্স—
১১ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট, নেট রানরেট— (+০.২৪৯)
বাকি ম্যাচ— চেন্নাই (হোম), হায়দরাবাদ (অ্যাওয়ে), বেঙ্গালুরু (অ্যাওয়ে)
তিন ম্যাচের দুটিতে জিতলেও সেরা চারে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ কলকাতার। বাস্তবিক অর্থে সেরা চারে যাওয়ার লড়াইয়ে থাকতে চাইলে ১৭ পয়েন্ট লাগবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। অর্থাৎ শেষ তিন ম্যাচের সবকটিতেই জিততে হবে তাদের। তখনও অন্য দলগুলোর জয়—পরাজয় কিংবা নেট রান রেটের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে আজিঙ্কা রাহানে-সুনীল নারিনদের।
লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস—
১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট, নেট রানরেট— (-০.৪৬৯)
বাকি ম্যাচ— বেঙ্গালুরু (হোম), গুজরাট (অ্যাওয়ে), হায়দরাবাদ (হোম)
দিল্লির মতো লক্ষ্ণৌও ছন্দ পেতে ধুঁকছে। সবশেষ তিন ম্যাচের তিনটি এবং পাঁচ ম্যাচের চারটিতে হেরেছেন নিকোলাস পুরান-মিচেল মার্শরা। শেষ তিন ম্যাচের তিনটিতে জিতলে তাদের ১৬ পয়েন্ট হবে। এমন অবস্থায় তাদের সেরা চারে যাওয়ার সুযোগ থাকবে। তবে যদি একটি ম্যাচ হারে তাহলে তারা গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেবে। কারণ তাদের নেট রানরেট (-০.৪৬৯) খুবই বাজে।