বিসিবিতে ক্রিকেট বাদে সবকিছুই হচ্ছে: তামিম
ছবি: ভিডিও থেকে নেয়া

তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বর্তমানে পাকিস্তানে অবস্থান করছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। ক্রিকেটাররা যখন পারফর্ম করে দেশের মানুষের মন ভরাতে পারছে না তখন বিসিবিতে যেন চলছে কয়েক পর্বের ধারাবাহিক নাটক। আওয়ামী লীগ সরকারে ক্ষমতা হারানোর পর নাজমুল হাসান পাপনের জায়গায় বিসিবির সভাপতি হয়েছিলেন ফারুক আহমেদ। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের অধীনে জাতীয় দলের সময়টা একেবারেই ভালো যাচ্ছিল না।
জেলা-বিভাগে ক্রিকেটে উন্নতি না করলে তার বোর্ডে আসা প্রয়োজন নেই: তামিম
৩ মে ২৫
এ ছাড়া সভাপতির স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানরকম অভিযোগ তুলে ফারুকের মনোনয়ন বাতিল করতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন বিসিবির ৮ পরিচালক। অভিযোগ আমলে নিয়ে ফারুককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছে জাতীয় ক্রিকেট পরিষদ (এনএসসি)। জাতীয় দল যখন পাকিস্তানে খেলছে তখন ব্যক্তিগত কাজে সেখানেই অবস্থান করছেন তামিম। বোর্ডের চলমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। খানিকটা হতাশা প্রকাশ করে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক জানান, বিসিবিতে ক্রিকেট বাদে সবই হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তামিম বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড—এটা হচ্ছে ক্রিকেটের বোর্ড একটা, ক্রিকেট বাদে সব কিছুই হচ্ছে। কে আসবে, কে যাবে, কে সভাপতি হবে, কে সভাপতি হবে না, কে নির্বাচন করবে, কে নির্বাচন করবে না—ঠিক আছে এটা একটা অংশ, ছোট একটা অংশ। বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রতি মানুষের আগ্রহ কতটা কমে আসতেছে। আমার কাছে মনে হয় কার কী সভাপতি হবে এগুলো তো আমার বলাতে না বলাতে কিছু যায় আসে না। আমি একটাই অনুরোধ করব যারা আছেন বা যারা আসবেন ক্রিকেটটা নিয়ে একটু ভাবেন। কারণ ক্রিকেট তাঁর আকর্ষণ হারাচ্ছে।’

শাস্তি নয়, পারফরম্যান্সের কারণেই ছাঁটাই ফারুক: আসিফ মাহমুদ
২৪ মিনিট আগে
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এই জিনিসটা স্বীকার করা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা স্ট্রাগল করছি। আমরা কোন সময়ই স্বীকার করি না আমরা স্ট্রাগল করছি। স্ট্রাগল করা মানে কী খালি জাতীয় দল ভালো খেলছে না তা না। পুরো ক্রিকেটীয় দিক থেকে আমরা প্রত্যেকটা জায়গা থেকে স্ট্রাগল করছি। এই জিনিসটাকে স্বীকার করে, মেনে নিয়ে কেমনে এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে, ভালোর দিকে এগোতে হবে এই জিনিসটা নিয়ে ভাবা উচিত। ক্রিকেট বাদে আমি সবকিছুই দেখতেছি, ক্রিকেকটা আমি দেখতেছি না।’
পাপনের বিদায়ের পর ফারুক দায়িত্ব নিলেও সবশেষ কয়েক মাসে প্রত্যাশিত পরিবর্তন আনতে পারেননি। যদিও বাংলাদেশে এত অল্প সময়ের মাঝে কিছু করে দেখানো কঠিন। তামিম মনে করেন, বিশ্ব ক্রিকেটে পাওয়ার হাউজ হতে চাইলে এখন থেকেই ৫-৭ বছরের পরিকল্পনা করতে হবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ২-৩ বছরে কিছু করা সম্ভব না বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের ধারণা, ৫-৭ বছর চেষ্টা পরে তখন একটা সুযোগ তৈরি হতে পারে।
বড় কোন দায়িত্ব নেয়ার আগে বেশিরভাগই কথা দেন এটা করবেন , ওটা করবেন। অথচ দায়িত্ব পাওয়ার পর এমন কিছু করে দেখাতে পারেন না তারা। তামিম মনে করেন, চেষ্টা করার পরিবর্তে এটা করে ফেলব এমন ধারণাই ভুল। সাবেক বাঁহাতি ওপেনার বলেন, ‘ স্বীকার করে নেয়ার পর আপনারা একটা পরিকল্পনা করতে পারবেন আজ থেকে ৫/৬/৭ বছর পর কিভাবে বিশ্ব ক্রিকেটে একটা পাওয়ার হাউজ হওয়া যায়। আমরা সবাই জানি ১/২/৩ বছরে আমরা এটা হতে পারব না, অসম্ভব একটা ব্যাপার। কিন্তু এখন থেকে যদি ওই লক্ষ্যের দিকে তাকান তাহলে একটা চান্স আছে। আমি সবসময় একটা জিনিস বলি আমাদের ক্রিকেটে সবচেয়ে বাজে জিনিসটা আমার লাগে—সবাই মনে করে সবাই এসে চেঞ্জ করে ফেলবে।’
‘আপনি চেঞ্জ করতে পারবেন না—সবসময় চেষ্টা করতে পারবেন এবং তারপর চেঞ্জ করতে পারবেন। এখানে বড় একটা পার্থক্য রয়েছে। যখন মানুষজন একটা মন্তব্য করে আমি আসলে এটা করে ফেলব ওইটা করে ফেলবে—এটা ভুল। আমি আসলে আমি এটা করার চেষ্টা করব—এই জিনিসটা বলা শেখা উচিত। এই জিনিসটা বুঝা শেখা উচিত আমার কাছে মনে হয়। এখানে কার কত বয়স এটা ম্যাটার করে না। এটা হচ্ছে ইন্টেনশনের ব্যাপার, আপনি কোন ইন্টেনশন নিয়ে আসছেন। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস।’