অমিত-সোহানদের ছাপিয়ে দিনটা নিউজিল্যান্ডের

ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

আগের দিনের নাইম শেখ, সাইফ হাসানের হাফ সেঞ্চুরির সঙ্গে বিজয়, অমিত ও সোহানের ব্যাটে বাংলাদেশের রান সাড়ে তিনশ পেরিয়ে গেছে অনায়াসে। বাংলাদেশের এমন রানের জবাবে নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের শুরুটাও ছিল আশা জাগানিয়া। খালেদ আহমেদ জুটি ভাঙলেও সফরকারীদের দাপট থামানো যায়নি। শেষ বিকেলে এক উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ড দাপুটে দিন শেষ করেছে ১০৪ রানে। বাংলাদেশের চেয়ে ২৫৩ রানে পিছিয়ে থেকে তৃতীয় দিন সকালে ব্যাটিংয়ে নামবেন জো কার্টার ও কার্টিস হিফি।
নাইম-বিজয়ের আক্ষেপের দিনে মিরপুরে বৃষ্টির দাপট
২১ মে ২৫
বাংলাদেশের ৩৫৭ রানের জবাবে নিউজিল্যান্ডকে ভালো শুরুর আভাসই দিয়েছিলেন রাইস মারিয়ু ও হিফি। একেবারে শুরু থেকেই ইতিবাচক ব্যাটিং করতে থাকেন তারা দুজন। যদিও ২ চারে ১৯ বলে ১৪ রান করা মারিয়ুকে ইনিংস বড় করতে দেননি খালেদ আহমেদ। ডানহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। মারিয়ু ফেরার পর দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন হিফি ও জো কার্টার। তাদের দুজনের বিপক্ষে খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা।
শেষ বিকেলের পুরোটা সময় দারুণভাবে সামাল দিয়েছেন কার্টার ও হিফি। শুরুতে দ্রুত রান তুললেও পরবর্তীতে দেখেশুনে খেলতে থাকেন তারা। ফলে হাসান মুরাদ, নাসুম আহমেদ, নাঈম হাসানদের বিপক্ষে চাপে পড়তে হয়নি তাদের। ১ উইকেটে ১০৪ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে নিউজিল্যান্ড। হিফি ৮৯ বলে ৪১ ও কার্টার অপরাজিত রয়েছেন ৬৬ বলে ৪৮ রানের ইনিংস খেলে। বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র উইকেটটি নিয়েছেন খালেদ।
বৃষ্টির কারণে প্রথম দিনে খেলা হয়েছে ৫৭.৩ ওভার। বৃষ্টির প্রভাব ছিল দ্বিতীয় দিনের সকাল থেকেই। মেঘলা আকাশের সঙ্গে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে ভেস্তে গেছে দিনের প্রথম সেশন। আগের দিনের ৪ উইকেটে ২২৫ রান নিয়ে অমিত হাসান ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ব্যাটিংয়ে নামেন দুপুর নাগাদ। উইকেট অনেকটা ঢাকা থাকার পরও অধিনায়ক জো কার্টার বল তুলে দিলেন স্পিনার জেডন লেনক্সের হাতে। বাঁহাতি স্পিনার আঁটসাঁট বোলিং করলেও নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলকে উইকেট এনে দিতে পারেননি।

সাবধানী ব্যাটিংয়ে দিনের প্রথম ঘণ্টার বেশিরভাগ সময়ই পার করেছেন দুজন। শুরুতে চাপে থাকলেও পরবর্তীতে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে খেলার চেষ্টা করেন অঙ্কন। যদিও ইনিংস বড় করতে পারেননি ডানহাতি এই ব্যাটার। অমিতের মতো ফক্সক্রফ্টকে আক্রমণাত্বক করতে চেয়েছিলেন তিনি। যদিও ডানহাতি অফ স্পিনারের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে লং অনের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় ফিরেছেন ম্যাট বয়েলের হাতে ক্যাচ দিয়ে। অঙ্কন আউট হয়েছেন ৫৯ বলে ২৪ রান করে।
মুরাদ-নাঈমের ঘূর্ণির পর ব্যাটারদের ব্যর্থতায় হারল বাংলাদেশ ‘এ’
১৭ মে ২৫
একটু পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন অমিত। ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের বন্যা বইয়ে দেয়া ডানহাতি ব্যাটার চলতি সিরিজে পেয়েছেন প্রথম হাফ সেঞ্চুরির দেখা। ডেল ফিলিপসের বলে স্কয়ার কাট করে চার মেরে ৯৬ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন অমিত। হাফ সেঞ্চুরির পরও নিজের সাবলীল ব্যাটিং করছিলেন তিনি। তবে সোহানের সঙ্গে জমে ওঠা জুটি ভাঙেন বেন লিস্টার। ডানহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে ভেতরে ঢোকা গুড লেংথ ডেলিভারিতে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন অমিত। ১ ছক্কা ও ৮ চারে ১১০ বলে ৬৭ রানের ইনিংস খেলে ফিরতে হয় তাকে। পরের বলে আউট হয়েছেন নাসুম আহমেদও।
লিস্টারের অফ স্টাম্পের বাইরের বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। নাসুম ফেরার পর আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের রান বাড়াতে থাকেন সোহান। তবে তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি নাঈম। ৫ বল খেলা ডানহাতি ব্যাটার লিস্টারের বলে আউট হয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই। পরবর্তীতে সোহানকে বেশ ভালোভাবেই সঙ্গ দিতে থাকেন মুরাদ। সুযোগ পেয়ে সোহানও রান বাড়ানোর চেষ্টা করেন।
যদিও হাফ সেঞ্চুরির আগে ফিরতে হয়েছে বাংলাদেশের অধিনায়ককে। লেনক্সের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ফিলিপসকে ক্যাচ দিয়েছেন। সমান তিনটি ছক্কা ও চারে ৪০ বলে ৪৮ রান করে আউট হয়েছেন সোহান। শেষের দিকে টিকতে পারেন খালেদ। ছক্কা মারার চেষ্টায় তিনিও ফিরেছেন সীমানায় ক্যাচ দিয়ে। নাইম, সাইফ, অমিতের হাফ সেঞ্চুরির সঙ্গে সোহানের ব্যাটে ৩৫৭ রান তুলে অল আউট হয়েছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের হয়ে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন লেনক্স ও লিস্টার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর—
বাংলাদেশ ‘এ’ দল— ৩৫৭/১০ (৮৯.৫ ওভার) (নাইম ৮২, বিজয় ৪৮, সাইফ ৫১, অমিত৬৭, সোহান ৪৮; লিস্টার ৩/৪৩, লেনক্স ৩/৯৬)
নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দল— ১০৪/১ (২৯ ওভার) (মারিয়ু ১৪, হিফি ৪১*, কার্টার ৪৮*; খালেদ ১/১৯)