সিরাজের দুর্ভাগ্যজনক আউট, ভারতকে হতাশ করে লর্ডসে জিতল ইংল্যান্ড

ছবি: সিরাজের দুর্ভাগ্যজনক আউটে কপাল পুড়ল ভারতের

ওয়াশিংটন কিংবা ট্রেসকোথিক—দুজনের কারও কথাই মেলেনি। দ্বিতীয় সেশনে ৩০ মিনিট বাড়িয়ে দেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত লর্ডস টেস্টের ফল আসেনি। তৃতীয় সেশনে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল এক উইকেট, রবীন্দ্র জাদেজা ও মোহাম্মদ সিরাজের ব্যাটে ভারতের দরকার ছিল ৩০ রান। শেষের রোমাঞ্চের আগে সনি স্পোর্টসের ইনিংস এক্সট্রাতে সুনীল গাভাস্কার জানালেন, লর্ডসের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে কাউকে সৌরভ গাঙ্গুলির মতো করে জার্সি ওড়াতে দেখতে চান। ভারতের সাবেক ব্যাটারের সেই আশাও অবশ্য পূরণ হয়নি।
হায়দরাবাদের নতুন বোলিং কোচ বরুণ
৬ ঘন্টা আগে
বিভিন্ন ক্রিকেটীয় পোল কিংবা প্রেডিক্টরে পুরো দিনই এগিয়ে ছিল ইংল্যান্ড। তবেও বীরোচিত এক ইনিংসে ‘আন্ডারডগ’ হয়েও ভারতকে স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন জাদেজা। জসপ্রিত বুমরাহর পর বাঁহাতি ব্যাটারকে সঙ্গ দিয়েছেন সিরাজ। তবে শেষ বেলায় যা ঘটেছে সেটা মনে করে নিশ্চিতভাবেই রাতে ঘুমাতে পারবেন না সিরাজ। অফ স্পিনার শোয়েব বশিরের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিটা ভালোভাবেই সামলেছিলেন তিনি। তবে সিরাজ বুঝে ওঠার আগেই একটু বাঁক খেয়ে বল আঘাত হানে স্টাম্পে। বল উপরে যেতেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেন ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা।
লর্ডসে পুরো গ্যালারি জুড়ে তখন একের পর এক হাততালি। ইংলিশরা যখন জয় উদযাপনে ব্যস্ত তখন মাথা নিচু করে নিজেকে সামলানোর চেষ্টায় সিরাজ। উদযাপন শেষে হ্যারি ব্রুক হাত মিলিয়ে ডানহাতি ব্যাটারকে অভিবাদন জানালেন। ১৮১ বলে অপরাজিত ৬১ রানের ইনিংস খেলা জাদেজাকেও অভিবাদন জানাতে ভুল করলেন না তারা। দুর্ভাগ্যজনক এক আউটে লর্ডসে ভারত হেরেছে ২২ রানে। তৃতীয় টেস্ট জিতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিক ইংল্যান্ড।

শেষ বিকেলে শুভমান গিল ও আকাশ দীপের উইকেট হারিয়ে খানিকটা চাপেই ছিল ভারত। ৪ উইকেটে ৫৮ রান নিয়ে লর্ডস টেস্টের শেষ দিনে ব্যাটিংয়ে নামা সফরকারীদের চাপ বেড়েছে ঋষভ পান্তের বিদায়ে। স্টোকস ও আর্চারকে দেখেশুনেই খেলছিলেন পান্ত ও লোকেশ রাহুল। তবে উইকেটের আশায় পান্তকে টানা স্টাম্পে বোলিং করে গেছেন আর্চার। শেষ পর্যন্ত ফলও পেয়েছেন ইংলিশ এই পেসার। আর্চারের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন ২ চারে ৯ রান করা পান্ত।
ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন হাসিবউল্লাহ
৯ ঘন্টা আগে
বাঁহাতি উইকেটকিপারের বিদায়ের একটু পর আউট হয়েছেন রাহুলও। স্টোকসের চতুর্থ স্টাম্পে পড়ে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি তিনি। বল প্যাডে আঘাত হানতেই জোরাল আবেদন করেন ইংলিশ ফিল্ডাররা। তবে অনফিল্ড আম্পায়ার তাতে সাড়া দেননি। পরবর্তীতে রিভিউ নিয়ে ৫৮ বলে ৩৯ রান করা রাহুলের উইকেট তুলে নেন ইংল্যান্ড। পরের ওভারে ভারতের বিপদ আরও বাড়িয়েছেন ওয়াশিংটন সুন্দর।
আর্চারে ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে লিডিং এজ হয়ে তাঁরই হাতে ক্যাচ দিয়েছেন রানের খাতা খুলতে না পারা এই ব্যাটার। দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর সফরকারীদের টেনে তোলার চেষ্টা করেন নীতিশ রেড্ডি ও জাদেজা। তারা দুজনে মিলে প্রথম সেশনের বাকিটা সময় প্রায় কাটিয়েই দিচ্ছিলেন। তবে লাঞ্চের ঠিক আগ মুহূর্তে নীতিশকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন ক্রিস ওকস। ডানহাতি পেসারের লেংথ ডেলিভারিতে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে জেমি স্মিথের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১৩ রানে।
দিনের প্রথম সেশনে ৪ উইকেট হারিয়ে ৫৪ রান তোলে ভারত। লাঞ্চ থেকে ফিরে ইংলিশ পেসারদের সামলাতে থাকেন জাদেজা ও বুমরাহ। তাদের দুজনের জুটি টিকেছে ১৩২ বল। ওই সময় বুমরাহ ও জাদেজা মিলে রান তুলেছেন ৩৫। তাদের জুটি ভাঙেন স্টোকস। ইংল্যান্ডের অধিনায়কের শর্ট ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে স্যাম কুকের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৫৪ বলে ৫ রান করা বুমরাহ। তিনি যখন ফেরেন তখনও ম্যাচ জিততে ভারতের প্রয়োজন ৪৬ রান।
সিরাজকে সঙ্গে নিয়ে তবুও ভারতকে জয়ের স্বপ্ন দেখাতে থাকেন জাদেজা। ইংল্যান্ডের একটি উইকেটের প্রয়োজন হওয়ায় চা-বিরতি পিছিয়ে দেয়া হয় ৩০ মিনিট। এমন সময় স্টোকসের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে টপ এজ হয়ে থার্ডম্যান দিয়ে চার মেরে ১৫০ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন জাদেজা। টানা চার ইনিংসেই পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেলেছেন তিনি। দ্বিতীয় সেশনের সময় বাড়িয়ে দিলেও ভারতকে অল আউট করতে পারেনি ইংল্যান্ড। তবে তৃতীয় সেশনে সিরাজকে ফিরিয়ে ভারতকে ১৭০ রানে অল আউট করে ইংল্যান্ড।