রংপুরকে হারিয়ে জিএসএল চ্যাম্পিয়ন গায়ানা

ছবি: জিএসএল

বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি রংপুরের। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারাতে পারত তারা। তবে সে যাত্রায় বেঁচে যান ইব্রাহীম জাদরান অল্পের জন্য স্টাম্পিং হননি। তবে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারিয়েছে রংপুর। রান আউট হয়ে ফিরেছেন ইব্রাহীম জাদরান। ফলে দলীয় ৬ রানেই প্রথম ব্যাটসম্যানকে হারায় দলটি। ইব্রাহীমের ব্যাট থেকে এসেছে ৪ বলে ৫ রান।
ব্যাটিং ব্যর্থতার পর বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত রংপুরের খেলা
১৭ জুলাই ২৫
ব্যর্থ হয়েছেন সৌম্য সরকারও। ১৪ বলে ১৩ রান করা এই ব্যাটার ডুয়াইন প্রিটোরিয়াসের বলে ক্যাচ দিয়েছেন গুড়াকেশ মোতিকে। পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়েছেন রংপুরের এই ব্যাটার। কাইল মেয়ার্সও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তিনি ১০ বলে ৫ রান করে ফিরেছেন। স্লগ করতে গিয়েছিলেন মেয়ার্স। তবে ব্যাটে বলে করতে পারেননি। বল সোজা চলে যায় স্টাম্পে।
বিপর্যয় সামাল দিয়ে দারুণ এক জুটি গড়ে রংপুরকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন সাইফ হাসান ও ইফতিখার আহমেদ। রান আউটে তাদের ৭৩ রানের জুটি ভাঙে। হাফ সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে ২৬ বলে ৪১ রান করে ফেরেন সাইফ। দুই রান নেয়ার চেষ্টায় ভুল বোঝাবুঝিতে ফিরে যেতে হয় তাকে। হাফ সেঞ্চুরি হাতছাড়া হয়েছে ইফতিখারেরও।
পাকিস্তানি এই ব্যাটার ২৯ বলে ৪৬ রান করে প্রিটোরিয়াসের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন। অবশ্য রিভিউ নিয়েছিলেন ইফতিখার। তবে বাঁচতে পারেননি। ১১৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো ম্যাচ থেকেই ছিটকে যায় রংপুর। তিন বল পর প্রিটোরিয়াস আউট করেছেন ৬ বলে ৩ রান করা আজমতউল্লাহ ওমরজাইকেও।

সাকিবের দুবাইকে উড়িয়ে টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে রংপুর
১৬ জুলাই ২৫
এরপর উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই ফিরে গেছেন রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। তিনি ইমরান তাহিরের বলে পা বাড়িয়ে খেলতে গিয়ে বোলারকেই ক্যাচ দিয়ে বসেন। এক বল পর আউট হয়ে গেছেন খালেদ আহমেদও। ফলে রংপুরের হার অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায় তখনই। শেষ দিকে নেমে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন দারুণ এক ক্যামিও খেললেও তা রংপুরের জয়ের জন্য যথেষ্ঠ ছিল না। ইনিংসের শেষ ওভারে রংপুরের জোড়া উইকেট তুলে নেন গুড়াকেশ মোতি। ১৭ বলে ৩০ রান করা অঙ্কনকে আউট করার পর তিনি নেন কামরুল ইসলাম রাব্বির উইকেট। আর তাতেই ১৬৪ রানে গুটিয়ে যায় রংপুর।
টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে রংপুরের বিপক্ষে ঝড়ো শুরু করেছিলেন জনসন চার্লস ও এভিন লুইস। এই দুই ওপেনার মিলে তুলে নিয়েছিলেন ৩ ওভারে ২০ রানও। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে রংপুরকে প্রথম উইকেটের স্বাদ এনে দেন খালেদ আহমেদ। তিনি ফেরান ৯ বলে ৫ রান করা এভিন লুইসকে। আর তাতেই তাদের জুটি ভাঙে ২১ রানে। খালেদের অফ স্টাম্পের বল এক্রস দ্য লাইন খেলতে গিয়ে টপ এজ হয়ে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সাইফের হাতে ক্যাচ দেন লুইস।
এই ওপেনার ফিরে গেলেও গায়ানার হয়ে ঝড়ো ব্যাটিং অব্যাহত রাখেন চার্লস। আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে ষষ্ঠ ওভারে টানা চারটি চার মারেন তিনি। আর তাতেই ৬ ওভারে দলীয় ৫০ তুলে নেয় গায়ানা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাতখুলে খেলেছেন রহমানউল্লাহ গুরবাজও। এই দুজনের পঞ্চাশ পেরুনো জুটিতে ১০ ওভারে গায়ানা ছাড়িয়ে যায় ৮০ রানের গন্ডী।
ওমরজাইকে ১১তম ওভারে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চার মেরে মাত্র ৩৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন চার্লস। গুরবাজ হাফ সেঞ্চুরি পেতে খেলেছেন ৩১ বল। ১৪তম ওভারের শেষ বলে সৌম্য সরকারকে লং অফ দিয়ে ছক্কা মেরে তিনি হাফ সেঞ্চুরি করেন। চার্লস ১৫ ওভারের পর রিটায়ার্ড আউট হয়ে ফিরেছেন ব্যক্তিগত ৬৭ রানে। এরপর শিমরন হেটমায়ার আসেন উইকেটে। তবে এই জুটি বড় হয়নি। তাবরাইজ শামসি আউট করেছেন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা গুরবাজকে।
ইফতিখার আহমেদ থিতু হতে দেননি হেটমায়ারকে। গায়ানার এই ব্যাটার কাভার দিয়ে ড্রাইভ করতে গিয়ে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। বল চলে যায় উইকেটের পেছনে নুরুল হাসান সোহানের হাতে। তিনি স্টাম্পিং করতে সময় নেননি। এরপর রোমারিও শেফার্ড পম শেরফানে রাদারফোর্ড মিলে গায়ানার রান বাড়িয়েছেন।
রাদারফোর্ড ১৫ বলে ১৯ ও শেফার্ড ৯ বলে ২৮ রানের ক্যামিও খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন। খালেদ আহমেদ ইনিংসের শেষ ওভারে এসে দুই ছক্কা ও এক চারে খরচ করেন ১৯ রান। আর তাতেই ১৯৬ রানের সংগ্রহ পেয়ে যায় গায়ানা। রংপুরের হয়ে একটি করে উইকেট নেন খালেদ, শামসি ও ইফতিখার।