আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মিতালি

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
কলম্বোতে পাকিস্তান, আর বেঙ্গালুরুতে ভারতের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ
১৬ জুন ২৫
১৯৯৭ সালের নারী বিশ্বকাপের সময় ভারতের ক্রিকেটে আলোচিত নাম ছিল মিতালি রাজ। মাত্র ১৪ বছর বয়সেই আলোচনায় আসা এই ব্যাটার সেবার বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাননি। তবে এরপর টানা ছয়টি বিশ্বকাপে খেলেছেন মিতালি। ভারতের নারী ক্রিকেটের প্রায় দুই যুগের সাক্ষী এই বর্ষীয়ান ব্যাটার এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন। ৮ জুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘোষণা দেন মিতালি।
কথায় আছে, সকালের সূর্য দেখে, দিনের বাকিটা বলে দেয়া যায়। মিতালির ক্রিকেট ক্যারিয়ারটা যেন এই কথার বড় উদাহরণ। ১৯৯৯ সালের ২৬ জুন মাত্র ১৬ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন এই ব্যাটার। অভিষেক ম্যাচেই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ১১৪ রান করেন তিনি।
এরপর ২০০১-০২ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক হয় মিতালির। ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট খেলতে নেমে মাত্র ১৯ বছর বয়সেই ডাবল সেঞ্চুরি করেন তিনি। এরপর আর কখনো পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি এই টপ অর্ডার ব্যাটারকে। ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই ব্যাট হাতে দাপট দেখিয়েছেন প্রায় দুই যগ ধরে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিতালি লেখেন, 'ছোটবেলাতেই একটা লক্ষ্য স্থির করে নিয়েছিলাম। ভারতের নীল জার্সি পরবো। দেশের প্রতিনিধিত্ব করা আমার কাছে সবচেয়ে সম্মানের ছিল। যাত্রাপথে বেশির ভাগ সময়ই ভালভাবে কাটিয়েছি। খুব কম সময়েই খারাপ অভিজ্ঞতা হয়েছে। প্রত্যেকটা অভিজ্ঞতাই আমার কাছে আলাদা ছিল। গত ২৩ বছর আমার জীবনে সবচেয়ে সুন্দর, পরিপূর্ণ এবং উপভোগ্য বছর ছিল। সব যাত্রাই এক দিন শেষ হয়। আজ সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছি।’
২৩ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে মিতালির নামের পাশে যোগ হয়েছে একাধিক বিশ্ব রেকর্ড। নারী ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি (৭৮০৫) রানের মালিক তিনি। নারী টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে কম বয়সী (১৯ বছর ২৫৪ দিন) ক্রিকেটার হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে (১৫৫) দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার রেকর্ড তার। সবচেয়ে কম বয়সে (১৬ বছর ২০৫ দিন) ওয়নাডে ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করার রেকর্ডও তার দখলে।
মিতালি বলেন, ‘যতবারই মাঠে ঢুকেছি, ভারতকে জেতানোর জন্য নিজের সেরাটা দিয়েছি। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা সারাজীবন মনে রাখব। মনে হয়, এখন ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ করার সেরা সময়।কিছু তরুণ, প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের হাতে আমাদের দল সুরক্ষিত রয়েছে। মহিলা ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল।’
নারী টেস্টে ১২ ম্যাচে প্রায় ৪৪ গড়ে ৬৯৯ রান করেছেন মিতালি। যেখানে তার সর্বোচ্চ সংগ্রহ ২১৪ রান। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে চার হাফসেঞ্চুরির পাশাপাশি ১ টি সেঞ্চুরিও আছে তার। আর নারী ওয়ানডেতে ২৩২ ম্যাচে প্রায় ৫১ গড়ে ৭৮০৫ রান করেছেন তিনি। যেখানে ৬৪ হাফসেঞ্চুরির পাশাপাশি ৭ টি সেঞ্চুরিও হাঁকিয়েছেন তিনি। আর নারী টি-টোয়েন্টিতে ৮৯ ম্যাচে প্রায় ৩৮ গড়ে ২৩৬৪ রান করেছেন মিতালি।
ব্যাট তুলে রাখলেও ক্রিকেটের সঙ্গে মিতালির সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে না। কোনো না কোনোভাবে খেলাটার সঙ্গে যুক্ত থাকতে চান তিনি। ফলে ভবিষ্যতে তাকে কোচ হিসেবেও দেখা যেতে পারে। মিতালি জানিয়েছেন, এত দিন ধরে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে ব্যক্তি হিসাবেও তাঁর অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়াকেও (বিসিসিআই)।