শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালের দৌড়ে টিকে গেল পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক
শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালের দৌড়ে টিকে গেল পাকিস্তান
শাহীন শাহ আফ্রিদি
Author photo
ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
· ১ মিনিট পড়া
তিন ম্যাচে তিন জয়—ভারতের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে চলতি এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের সবকটি ম্যাচে জয় পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। গ্রুপ পর্ব অপরাজেয় থাকলেও সুপার ফোরে এসেই হোঁচট খায় তারা। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪ উইকেটে হারায় এশিয়া কাপের ফাইনালে যাওয়ার দৌড়ে থাকতে পাকিস্তানের বিপক্ষে জেতা গুরুত্বপূর্ণ ছিল লঙ্কানদের জন্য। এমন ম্যাচে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারলেন না টুর্নামেন্ট জুড়ে দাপট দেখানো কুশল মেন্ডিস, পাথুম নিশাঙ্কারা।

শাহীন আফ্রিদি, হুসাইন তালাত ও হারিস রউফের পেস আগুনে পুড়ে গেছে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং ইউনিট। একপ্রান্ত আগলে রাখা কামিন্দু মেন্ডিসের হাফ সেঞ্চুরি একশ ছাড়িয়ে যায় তারা। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ১৩৩ রানের পুঁজি পাওয়ার পর বোলিংয়ের শুরুটাও ভালো করতে পারেনি তারা। শাহিবজাদা ফারহান ও ফখর জামান মিলে জয়ের ভিতটা গড়ে দেন উদ্বোধনী জুটিতে। যদিও দ্রুতই কয়েকটি উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে পাকিস্তান। তালাত ও মোহাম্মদ নাওয়াজ মিলে অবশ্য সেটা সামাল দিয়েছেন ভালোভাবেই।

বিপর্যয় সামলানোর পাশাপাশি কার্যকরী ব্যাটিংয়ে ৫৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে পাকিস্তানের ৫ উইকেটের জয়ও নিশ্চিত করেছেন তারা দুজন। ভারতের কাছে হারলেও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে টিকে থাকলো পাকিস্তান। সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ। তাদের বিপক্ষে জিততে পারলেই ফাইনালের টিকিট পেয়ে যেতে পারে তারা। টানা দুই ম্যাচে হেরে যাওয়ায় ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হলো লঙ্কানদের। খালি চোখে তাদের বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেলেও এখনো কাগজে-কলমে টিকে আছে ক্ষীণ সম্ভাবনা।

আবুধাবির শেষ জায়েদ স্টেডিয়ামে সহজ লক্ষ্য তাড়ায় পাকিস্তানকে ভালো শুরু এনে দেন শাহিবজাদা ও ফখর। উদ্বোধনী জুটিতে তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৪৫ রান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ১৫ বলে ২৪ রান করা শাহিবজাদাকে ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কাকে উইকেট এনে দেন মাহিশ থিকশানা। একই ওভারে নিয়েছেন ফখরের উইকেটও। তিন বলের মধ্যে ২ উইকেট নিয়ে লঙ্কানদের স্বস্তি এনে দেন ডানহাতি এই স্পিনার।

পরের ওভারে আউট হয়েছেন সাইম আইয়ুবও। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার গুগলি বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়েছেন তিনি। আগের ম্যাচে ব্যাট হাতে রান পেলেও সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি সাইম। দ্রুতই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। সেই চাপ কাটিয়ে ওঠার আগেই ফিরেছেন সালমান। পাকিস্তানের অধিনায়কও হাসারাঙ্গার গুগলিতে পরাস্ত হয়ে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন। ৫৭ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ার চেষ্টা করেন তালাত ও মোহাম্মদ হারিস।

ধাক্কা সামাল দিলেও জুটি বড় করতে পারেনি তারা দুজন। দুশমন্থ চামিরাকে বোলিংয়ে এনে উইকেটের দেখা পায় শ্রীলঙ্কা। ডানহাতি পেসারের বলে হয়েছেন অফ ফর্মে থাকা হারিস। যদিও সেটার প্রভাব পড়তে দেননি তালাত ও নাওয়াজ। তারা দুজনে প্রত্যাশিতভাবেই রান তুলেছেন। তাদের দুজনের ব্যাটেই শেষ পর্যন্ত জয় নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান। তালাত ৩২ ও নাওয়াজ অপরাজিত ছিলেন ৩৮ রানে।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শ্রীলঙ্কাকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি মেন্ডিস ও নিশাঙ্কা। ছন্দে থাকা মেন্ডিস ফিরেছেন ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই। শাহীন আফ্রিদির ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে তালাতকে ক্যাচ দিয়েছেন। নিজের দ্বিতীয় ও ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে শাহীন আফ্রিদি ফিরিয়েছেন আরেক ওপেনার নিশাঙ্কাকে। বাঁহাতি পেসারের বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে আউট সাইড এজ হয়ে উইকেটের পেছনে হারিসকে ক্যাচ দিয়েছেন।

পাওয়ার প্লে শেষের আগে আউট হয়েছেন কুশল পেরেরাও। ১২ বলে ১৫ রান করা বাঁহাতি ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন হারিস রউফ। দলের রান পঞ্চাশ পেরিয়ে যাওয়ার পর আউট হয়েছেন আসালাঙ্কাও। ১৯ বলে ২০ রান করেছিলেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরি করা দাসুন শানাকা আউট হয়েছেন পরের বলেই। এক ওভারে দুই উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এনে দেন তালাত।

পরবর্তীতে কামিন্দু ও হাসারাঙ্গা মিলে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। যদিও ১৫ রান করা হাসারাঙ্গাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আবরার আহমেদ। দলের বিপর্যয়ে কামিন্দুতে সঙ্গ দিয়ে ১৭ রান করেছেন চামিকা করুনারত্নেও। অন্যপ্রান্ত আগলে রেখে ৪৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি ‍তুলে নেন কামিন্দু। ১৯তম ওভারে ফেরার আগে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪৪ বলে ৫০ রান করেছেন তিনি। কামিন্দুর হাফ সেঞ্চুরিতেই শেষ পর্যন্ত ১৩৩ রানের পুঁজি পায় শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তানের হয়ে আফ্রিদি তিনটি, রউফ ও তালাত নিয়েছেন দুইটি করে উইকেট।

আরো পড়ুন: পাকিস্তান