স্টার্ক ‘ম্যাজিকের’ পর সুপার ওভারে জিতল দিল্লি

ছবি: বিসিসিআই

অভিজ্ঞ পেসার ১৯তম ওভারে দিয়ে গেছেন ১৪ রান। এমন অবস্থায় জিততে হলে শেষ ওভারে ৯ রান করতো হতো রাজস্থানকে। দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রথম পাঁচ বলে ৭ রান করেন তারা দুজন। ফলে শেষ বলে ২ রান প্রয়োজন ছিল রাজস্থানের। আর একটি রান করতে পারলেই ম্যাচ গড়াতো সুপার ওভারে। স্টার্কের লেগ স্টাম্প বরাবর করা ইয়র্কারে এক রানের বেশি করতে পারেননি জুরেলে। ফলে ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। আইপিএলের চলতি আসরে এটিই প্রথম সুপার ওভারের ঘটনা।
নারিন-রঘুবংশিদের নৈপুণ্যে কলকাতার দিল্লি জয়
৩০ এপ্রিল ২৫
অধিনায়ক অক্ষর প্যাটেল সুপার ওভারেও বল তুলে দেন স্টার্কের হাতে। রাজস্থানের হয়ে ব্যাটিংয়ে আসেন হেটমায়ার ও রিয়ান পরাগ। এক চারের সঙ্গে প্রথম তিন বল থেকে ৫ রান নিয়ে আসেন ক্যারিবীয়ান হেটমায়ার। নিজের প্রথম বলেই থার্ডম্যান দিয়ে চার মেরেছেন পরাগ। পরের বলে ফ্রি হিট থাকলেও রান আউট হয়ে ফিরতে হয় তাকে। একই ঘটনা পরের বলেও। দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়েছেন জয়সাওয়াল। শেষ পর্যন্ত ২ উইকেট হারিয়ে ৫ বলে ১১ রান তোলে রাজস্থান।
জয়ের জন্য ১২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে ব্যাটিংয়ে আসেন ট্রিস্টিয়ান স্টাবস ও লোকেশ রাহুল। বোলিংয়ে রাজস্থান আস্থা রাখে সন্দীপ শর্মার উপর। প্রথম বলে দুই রান নেয়ার পরের বলে কভারের উপর দিয়ে চার মারেন রাহুল। সন্দীপের ইয়র্কারের পরের বলে এক রানের বেশি নিতে পারেনি রাহুল। ফলে শেষ তিন বলে দিল্লিকে করতে হতো ৫ রান। সন্দীপের স্লোয়ার শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে ডিপ মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছক্কা মেরে দিল্লির জয় নিশ্চিত করেন স্টাবস।
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ১৮৮ রান তাড়ায় মিচেল স্টার্কের করা প্রথম ওভারে মাত্র ২ রান করতে পেরেছিলেন স্যামসন ও জয়সাওয়াল। তবে পরের ওভারে মুকেশ কুমারকে দুই ছক্কা মেরে ১৪ রান এনেছেন তারা দুজন। প্রথম ওভারে ২ রান দেয়া স্টার্ক অবশ্য নিজের দ্বিতীয় ওভারে দিয়েছেন ১৯ রান। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখে পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ভিপরাজ নিগামের উপর ঝড় তোলার চেষ্টা করেন স্যামসন।

আইপিএল শেষ ম্যাক্সওয়েলের
১ ঘন্টা আগে
প্রথম দুই বলে চার ও ছক্কা মারার পর অবশ্য চোট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় রাজস্থানের অধিনায়ককে। ১৯ বলে ৩১ রান করা স্যামসন ড্রেসিং রুমে ফিরে গেলেন মাঠে আসেন রিয়ান পরাগ। যদিও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। অক্ষর প্যাটেলের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় ডানহাতি এই ব্যাটারকে। তবে অন্যপ্রান্তে দ্রুত রান তুলতে থাকেন জয়সাওয়াল। একটু পর ৩৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন রাজস্থানের বাঁহাতি ওপেনার।
সবশেষ চার ইনিংসে জয়সাওয়ালের এটি তৃতীয় পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। যদিও হাফ সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জয়সাওয়াল। স্পিনার কুলদীপ যাদবের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে ছক্কা মারতে গিয়ে ওয়াইড লং অনে স্টার্ককে ক্যাচ দিয়েছেন ৩৭ বলে ৫১ রান করা তরুণ এই ওপেনার। স্ট্র্যাটেজিক টাইম আউট শেষে ফিরতে পারতেন নীতিশও। তবে সীমানার কাছে দাঁড়িয়ে ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি ট্রিস্টিয়ান স্টাবস। জীবন পেয়ে দ্রুত রান তোলায় মনোযোগ দেন নীতিশ।
একটু পর অবশ্য ফিরতে পারতেন ধ্রুব জুরেল। তবে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে বেঁচে গেছেন তিনি। পরবর্তীতে মুহিত শর্মাকে ছক্কা মেরে রাজস্থানের রান দেড়শ ছুঁয়েছেন ডানহাতি ব্যাটার। চারে নেমে দারুণ ব্যাটিংয়ে ২৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন নীতিশ। ইনিংসের ১৮তম ওভারে বাঁহাতি ব্যাটারকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলে আউট করেছেন ৫১ রানে। জুরেল ২৬ ও হেটমায়ার ১৫ রানে অপরাজিত থাকলেও দলকে জেতাতে পারেননি।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আরেকবার দ্রুতই জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্কের উইকেট হারায় দিল্লি। পর্যাপ্ত সুযোগ পেলেও ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি ৯ কোটি রুপির অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে হাফ সেঞ্চুরি করা কারুন নায়ার রাজস্থান ম্যাচে রানের খাতাই খুলতে পারেননি। ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে ফিরেছেন। দ্রুতই দুই উইকেট হারানোর পর জুটি গড়ে তোলার চেষ্টা করেন অভিষেক পোরেল ও লোকেশ রাহুল।
তাদের দুজনের ব্যাটেই এগিয়ে যেতে থাকে দিল্লি। দলের রান একশ হওয়ার আগেই তাদের দুজনের পঞ্চাশ পার করা জুটি ভাঙেন জফরা আর্চার। ডানহাতি পেসারের বলে হেটমায়ারের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৩৮ রান করা রাহুল। একটু পর ফিরেছেন পোরেলও। দারুণ ব্যাটিং করলেও হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি তার। ৫ চার ও এক ছক্কায় ৩৭ বলে ৪৯ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার বলে পরাগের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
ছয়ে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করেছেন অক্ষর। শ্রীলঙ্কান স্পিনার মাহিশ থিকশানার বলে ফেরার আগে করেছেন ১৪ বলে ৩৪ রান। শেষের দিকে দিল্লির রান বাড়িয়েছেন স্টাবস ও আশুতোষ শর্মা। ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮৮ রানে পুঁজি পাওয়ার দিনে স্টাবস ৩৪ ও আশুতোষ অপরাজিত ছিলেন ১৫ রানে। রাজস্থানের হয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন আর্চার। একটি করে উইকেট শিকার করেছেন হাসারাঙ্গা ও থিকশানা।