বেশ কয়েকবার জীবন পেয়ে সেটা কাজেও লাগিয়েছেন সাইফ হাসান। একের পর এক ছক্কা চারে ৩৬ বলে করেন হাফ সেঞ্চুরি। ডানহাতি ওপেনারের একার লড়াই থামে ৫০ বলে ৬৯ রানের ইনিংস খেলে। বাকিদের ব্যর্থতায় ১২৭ রানে অল আউট হয়েছে বাংলাদেশ। টাইগারদের ৪১ রানে হারিয়ে সবার আগে এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠল ভারত। এখনো ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ আছে বাংলাদেশ। ২৫ সেপ্টেম্বর নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারাতে হবে লিটন দাস-মুস্তাফিজুর রহমানদের। এদিকে বাংলাদেশের হারে এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ১৬৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই তানজিদ হাসান তামিমের উইকেট হারায় টাইগাররা। জসপ্রিত বুমরাহর লেংথ ডেলিভারিতে লেগ সাইডে খেলার চেষ্টায় লিডিং এজ হয়ে মিড অনে শিভাম দুবের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের ওপেনার ফেরেন ৩ বলে ১ রান করে। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারছিলেন না পারভেজ হোসেন ইমন।
বাঁহাতি ব্যাটার যেন জসপ্রিত বুমরাহকে খেলতেই পারছিলেন না। তবে পঞ্চম ওভারে টানা দুই চার মেরে জড়তা কাটান ইমন। পরের ওভারে বুমরাহকে ছক্কা মেরেছেন লং অনের উপর দিয়ে। যদিও পাওয়ার প্লে শেষ হতেই ফেরেন তিনি। কুলদীপ যাদবের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে অভিষেককে ক্যাচ দিয়েছেন ১৯ বলে ২১ রান করা ইমন। চারে নেমে সাইফের সঙ্গে জুটি গড়তে পারেননি তাওহীদ হৃদয়।
অক্ষর প্যাটেলের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে অভিষেকের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। আগের ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করা হৃদয় ফেরেন ১০ বলে ৭ রান করে। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেলেও সেটা কাজে লাগাতে পারেননি শামীম হোসেন পাটোয়ারি। রানের খাতা খোলার আগেই ফেরেন তিনি। বরুণ চক্রবর্তীর ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে জায়গা বানিয়ে খেলার চেষ্টায় বোল্ড হয়েছেন শামীম। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জাকের আলীও।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। বরুণের বলে কভারে ঠেলে দিয়ে দ্রুততার সঙ্গে এক রান নিতে চেয়েছিলেন সাইফ। ডানহাতি ওপেনারের ডাকে সাড়া দিয়ে দৌড়ও দিয়েছিলেন জাকের। তবে তিনি ব্যাটিং প্রান্তে পৌঁছানোর আগেই সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভাঙেন সূর্যকুমার। তাতে রান আউট হয়ে ফেরেন ৫ বলে ৪ রান করা বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। পরের ওভারে অক্ষরকে ছক্কা মেরে ৩৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন সাইফ।
টানা দুই ম্যাচেই পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন তিনি। চলতি এশিয়া কাপে প্রথমবার সুযোগ পেলেও সেটা লুফে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন সাইফউদ্দিন। বোলিংয়ে ৩ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে এক উইকেট নেয়া এই অলরাউন্ডার ব্যাটিংয়ে ৭ বলে ৪ রান করে আউট হয়েছেন। রিশাদ হোসেন-তানজিম হাসান সাকিবদের কেউই ব্যাটিংয়ে অবদান রাখতে পারেননি। একপ্রান্ত আগলে রেখে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়া সাইফ আউট হয়েছেন ৫১ বলে ৬৯ রানের ইনিংস খেলে।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় ভারত। অভিষেক ও গিলের ব্যাটে পাওয়ার প্লেতে ৭২ রান তোলে তারা। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরিও। অভিষেক মাত্র ৩৭ বলে খেলেন ৭৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। যেখানে ৬টি চারের সঙ্গে ৫টি ছক্কা মেরেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন গিল। তিনি ১৯ বলে করেন ২৯ রান।
তাদের দুজনের বিদায়ের পর আর কেউ বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। মাঝে হার্দিক পান্ডিয়া কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও (২৯ বলে ৩৮ রান), শেষদিকে চাপ সামলাতে ব্যর্থ হয় ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপ। সূর্যকুমার যাদব (৫), তিলক ভার্মা (৫) ও শিভাম দুবে (২) বড় ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হন। শেষ পর্যন্ত অক্ষর অপরাজিত ১০ রানে ভর করে ইনিংসে ভারত থামে ১৬৮ রানে।
বাংলাদেশের বোলাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন শেষদিকে। রিশাদ হোসেন ৩ ওভারে ২৭ রান দিয়ে নেন গুরুত্বপূর্ণ ২ উইকেট। মুস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ৩৩ রান খরচায় শিকার করেন একটি। এ ছাড়া তানজিম হাসান সাকিব ও সাইফউদ্দিনও একটি করে উইকেট নেন।