৯ বছরের খরা কাটিয়ে ৭ উইকেটে জিতল বাংলাদেশ

ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মুস্তাফিজ, তাসকিন আহমেদরা মিলে পাকিস্তানকে আটকে দিলেন মাত্র ১১০ রানে। সহজ লক্ষ্য তাড়ায় ৭ রানেই লিটন ও তানজিদ হাসান তামিমের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে তৃতীয় উইকেটে রেকর্ড জুটিতে বিপদ সামাল দিয়েছেন পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহীদ হৃদয়। জয়টাও এসেছে তাদের জুটিতে ভর করেই। হৃদয় ফিরে গেলেও অপরাজিত ৫৬ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন পারভেজ। ৭ উইকেটের জয়ে ৯ বছরের খরা কাটিয়ে সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেলেন লিটনরা।
‘ওরা হয়ত মানিয়ে নিতে পারেনি’ হেসনের সমালোচনার জবাবে ইমন
৩ ঘন্টা আগে
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ১১১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। পেসার সালমান মির্জার শর্ট ডেলিভারিতে পুল করতে চেয়েছিলেন তানজিদ হাসান তামিম। তবে টাইমিংয়ে গড়বড় হওয়ায় মিড অনে ফখর জামানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। দারুণ ছন্দে থাকা তানজিদ আউট হয়েছেন মাত্র ১ রানে। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি লিটন।
সালমানের ষষ্ঠ স্টাম্পের দারুণ এক ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে আউট সাইড এজ হয়ে ওয়াইড স্লিপে থাকা খুশদিলের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। তিনিও ফিরেছেন ১ রানেই। লিটন আউট হওয়ার পর ছক্কা মেরে চাপ থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন হৃদয় ও পারভেজ ইমন। দারুণভাবে শুরুর ধাক্কা সামলে পাওয়ার প্লেতে ৩৮ রান তোলেন তারা দুজন। পাওয়ার প্লে শেষেও দেখেশুনে ব্যাটিং করতে থাকেন ইমন ও হৃদয়।
ইনিংসের নবম ওভারে আবরার আহমেদকে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চার মেরে ৩৬ বলে জুটির পঞ্চাশ পূরণ করেন হৃদয়। একই ওভারে আউট হতে পারতেন ডানহাতি এই ব্যাটার। পাকিস্তানের স্পিনারের বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটকিপারকে ক্যাচ দিলেও সেটা লুফে নিতে পারেননি মোহাম্মদ হারিস। তবে ইনিংসের ১তম ওভারে তাদের দুজনের জুটি ভাঙেন আব্বাস আফ্রিদি। ডানহাতি পেসারের গুড লেংথ ডেলিভারিতে বড় শট খেলার চেষ্টায় বোল্ড হয়েছেন হৃদয়।

৩৭ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলেছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। হৃদয়ের বিদায়ে ভেঙে পারভেজ ইমনের সঙ্গে ৭৩ রানের জুটি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১০ রানের কমে ২ উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেটে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি। হৃদয় না পারলেও দারুণ ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন পারভেজ ইমন। পেসার ফাহিম আশরাফকে ছক্কা মেরে ৩৪ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত ছিলেন ৫৬ রানে। বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ৭ উইকেটে।
ম্যাচ হেরে মিরপুরের উইকেটের সমালোচনা করলেন সালমান
৪ ঘন্টা আগে
এর আগে টস জিতে বোলিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয় বাংলাদেশের। ইনিংসের চতুর্থ বলেই উইকেট নেয়ার সুযোগ ছিল স্বাগতিকদের। শেখ মেহেদীর বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন ফখর। তবে সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি তাসকিন। যদিও দ্বিতীয় ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন ডানহাতি পেসারই। তাসকিনের ব্যাক অব লেংথের বল ফ্লিক করতে গিয়ে ডিপ ফাইন লেগে মুস্তাফিজের হাতে ক্যাচ দেন ৬ রান করা সাইম।
তৃতীয় ওভারে পাকিস্তানি ব্যাটারদের তোপের মুখে পড়েন মেহেদী। সেই ওভারে তিন চার হজম করলেও শেষ বলে হারিসকে ফেরান ডানহাতি এই অফ স্পিনার। একটু পর সালমান আলী আঘার উইকেট তুলে নেন তানজিম হাসান সাকিব। দলেল রান পঞ্চাশ হওয়ার আগে হাসান নাওয়াজকে বিদায় করেছেন মুস্তাফিজ। দেড় বছর পর সুযোগ পেয়ে দ্রুতই ফিরেছেন মোহাম্মদ নাওয়াজ। রান আউটে ফিরতে হয় তাকে।
ইনিংসের ১০ম ওভারে আবারও জীবন পান ফখর। তবে একটু পরই তাসকিনের থ্রোতে লিটনের তৎপরতায় রান আউট হয়ে ফিরতে হয় ৩৪ বলে ৪৪ রানের ইনিংস খেলা ব্যাটারকে। একটি ছক্কার সঙ্গে ছয়টি চার মেরেছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। পরবর্তীতে খুশদিল ও আব্বাস মিলে পাকিস্তানের রান একশ পার করেছেন। মুস্তাফিজের স্লোয়ার ডেলিভারিতে ১৭ রান করা খুশদিল ফিরলে ভাঙে তাদের জুটি।
শেষ ওভারে টানা তিন বলে তিন উইকেট হারিয়ে ১১০ রানে অল আউট হয় পাকিস্তান। সেই ওভারে ফাহিম আশরাফ, সালমান ও আব্বাসকে ফিরিয়েছেন তাসকিন। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন তিনটি ও মুস্তাফিজ দুইটি উইকেট নিয়েছেন। মিতব্যয়ী বোলিংয়ে রেকর্ড গড়েছেন মুস্তাফিজ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে এক ইনিংসে অন্তত ৪ ওভার বোলিং করে সবচেয়ে কম ৬ রান দিয়েছেন বাঁহাতি এই পেসার।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
পাকিস্তান— ১১০/১০ (১৯.৩ ওভার) (ফখর ৪৪, আব্বাস ২২, খুশদিল ১৮; তাসকিন ৩/২২, মুস্তাফিজ ২/৬)
বাংলাদেশ— ১১২/৩ ( ১৫.৩ ওভার) (তানজিদ ১, পারভেজ ইমন ৫৬*, হৃদয় ৩৬, জাকের ১৫*; সালমান ২/২৩)