আমি কিন্তু সভাপতি হতে আসিনি, হয়ে গেছে: বুলবুল

ছবি: বিসিবি সভাপতি হয়ে প্রথমবার সংবাদ সম্মেলনে আমিনুল ইসলাম বুলবুল, ক্রিকফ্রেঞ্জি

এপ্রিলের শেষের দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সঙ্গে ফোনে কথা হয় বুলবুলের। দেশের ক্রিকেটে কাজ করার প্রস্তাব পেয়ে সপ্তাহখানেক আগেই দেশে ফেরেন তিনি। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক দেশে ফেরার পর থেকেই গুঞ্জন তৈরি হয় বিসিবির পরবর্তী সভাপতি হতে যাচ্ছেন ৫৭ বছর বয়সী বুলবুল। তিনি যখন ঢাকায় তখন বুধবার (২৮ মে) রাতে ফারুককে নিজ বাসায় ডেকে পাঠান ক্রীড়া উপদেষ্টা।
ক্রিকেটকে বিকেন্দ্রীকরণের উদ্যোগ, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে হচ্ছে বিসিবির অফিস
৪ ঘন্টা আগে
বিসিবির সেই আলোচনায় ফারুককে বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়া হয়। তবে সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে না পাওয়ায় পদত্যাগ করতে রাজী হননি তিনি। ফারুকের এমন মন্তব্যের পর সভাপতির প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছে চিঠি দেন বিসিবির ৮ পরিচালক। সেই চিঠিতে ফারুকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, একচ্ছত্র আধিপত্য ও বেশ কয়েকটি অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগ আমলে নিয়ে বিসিবির পরিচালক হিসেবে তাঁর মনোনয়ন বাতিল করে এনএসসি। বিসিবির সাবেক সভাপতির মনোনয়ন বাতিল করার আগেই কাউন্সিরশিপের জন্য বুলবুলকে চিঠি দেয় তারা। কাউন্সিলরশিপ পাওয়ার পর শুক্রবার (৩০ মে) বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ককে পরিচালকের মনোনয়ন দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে এনএসসি। পরবর্তীতে পরিচালকদের ভোটে বিসিবির ১৬তম সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি।

সভাপতির হওয়ার পেছনের গল্প শুনিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বুলবুল বলেন, ‘আমার নতুন একটা ভূমিকা আজকে ৩০ মে শুরু হলো। এটার ছোট্ট একটা জার্নি আছে। জার্নিটা হচ্ছে আমি যখন বাংলাদেশ দল থেকে একজন খেলোয়াড় হিসেবে অবসর নিইনি কিন্তু শেষ হয়ে গিয়েছিল—তারপর গত ১৯ বছর ধরে আমি ক্রিকেট উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছি আইসিসি এবং এসিসিতে। এটা একটা নতুন উচ্চতার আমার জন্য পরীক্ষা বা সুযোগ...। সত্যিকার অর্থে এই প্রথম এপ্রিল মাসের শেষের দিকে আমি একটি কল পাই আমাদের জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে এবং বলা হয় আপনাকে একটা সুযোগ দেয়া হবে আপনি কী সুযোগটা গ্রহণ করবেন?’
শাস্তি নয়, পারফরম্যান্সের কারণেই ছাঁটাই ফারুক: আসিফ মাহমুদ
৬ ঘন্টা আগে
‘আমি আপনাদেরকে এত প্রমিজ করতাম বা অপেক্ষা করতাম একটা কলের জন্য সেই কলটা আমি যখন পেয়ে গেছি তখন আমি পেছনে তাকাইনি। আমার একটাই লক্ষ্যই ছিল কিভাবে এই কলটাকে আমি সম্মান জানাতে পারি। তারপর পর্যায়ক্রমে আজকে ৩০ মে আমাদের সম্মানিত বোর্ড পরিচালকরা আমাকে নির্বাচিত করেছেন। আমি কলটা পেয়েছিলাম আমাদের সম্মানিত ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছ থেকে। তিনি আমাকে এমন একটা কলে করেছিলেন তাতে আমি সম্মানিতবোধ করছি। তার ফলশ্রুতিতে বড় একটা দায়িত্ব পেয়েছি।’
বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব নিলেও গুঞ্জন ছিল দেশের ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহীর চাকরি নিতে পারেন বুলবুল। এমনকি গুঞ্জন ছিল বর্তমান সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরির চেয়ে দ্বিগুণ অর্থাৎ ১২ লাখ টাকা বেতন চেয়েছিলেন তিনি। যদিও এমন গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন বিসিবির নতুন সভাপতি। পাশাপাশি এও জানান, ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে শুধু সিইও নয় এমনকি সভাপতি হওয়ার ব্যাপারেও আলোচনা হয়নি।
বুলবুল বলেন, ‘আমার সাথে মাননীয় উপদেষ্টার সভাপতি হওয়া নিয়েও কথা হচ্ছিল না। আমাকে বলেছিল আপনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য কাজ করতে চান কিনা, আমি এক বাক্যে হ্যাঁ বলে দিয়েছি। আমি কিন্তু এখানে সভাপতি হওয়ার জন্য আসিনি, এটা পরিক্রমার মাধ্যমে হয়ে গেছে। আমি বাংলাদেশের ক্রিকেটকে সার্ভ করতে চাই।’
ক্রিকেটকে এগিয়ে নেয়ার ব্যাপার তিনি বলেন, ‘দায়িত্বটা হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট না ক্রিকেট ইন বাংলাদেশ। আমাদের দেশে কী ক্রিকেট আছে আমরা চেষ্টা করব সেটাকে আরও এগিয়ে নিতে। আমি বিশ্বাস করি ১১ জন ক্রিকেট খেলে না, বাংলাদেশে সবাই ক্রিকেট খেলে। আপনারা একটা গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য। আমি আশা করব আমরা একটা দল হিসেবে কাজ করব।’