বিশ্বকাপ

পাকিস্তানকে বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইংল্যান্ড

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 18:52 শনিবার, 11 নভেম্বর, 2023

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

পাকিস্তানের সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা ছিল না বললেই চলে। তবুও যে ক্ষীণ সম্ভাবনা ছিল সেই সমীকরণ মেলানো ছিল প্রায় অসম্ভব। আগে ব্যাটিং করলে ইংলিশদের ২৮৬ রানে হারাতে হতো। এমন সমীকরণের ম্যাচে টস জিততে পারেননি বাবর আজম। তবুও একটি সমীকরণ ছিল তাদের সামনে। ইংল্যান্ডকে একশর আগে গুঁড়িয়ে দিয়ে সেটি তাড়া করতে হবে তিন ওভারের মাঝে। যেখানে ইংল্যান্ডকে ১০০ রানের মাঝে অল আউট করতে হতো সেখানে জনি বেয়ারস্টো, জো রুট এবং বেন স্টোকসদের হাফ সেঞ্চুরিতে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা তোলে ৩৩৭ রান।

সেমিফাইনালে যেতে হলে পাকিস্তানকে সেই রান তাড়া করতে হতো ৬.৪ ওভারের মাঝে। সেসময় বাবরের দল তোলে ২ উইকেটে ৩০ রান। তাতে করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় পাকিস্তান। তখন ম্যাচের বাকি সময়টা ছিল কেবলই আনুষ্ঠানিকতার। সেখানে ব্যাটিং ব্যর্থতায় পাকিস্তানকে হারতে হয়েছে ৯৩ রানে। বাবরের দলকে হারিয়ে ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির টিকিট কাটল ইংল্যান্ড।

জয়ের জন্য ৩৩৮ রান তাড়ায় ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় পাকিস্তান। ডেভিড উইলির ইনসুইং ডেলিভারিতে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েছেন আব্দুল্লাহ শফিক। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ফখর জামানও। উইলির বলে মিড অফের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্টোকসের হাতে ধরা পড়েন ১ রান করা এই ব্যাটার। এরপর বাবর ও মোহাম্মদ রিজওয়ান মিলে খানিকটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন।

যদিও বড় লক্ষ্য তাড়ায় দ্রুত গতিতে রান তুলতে পারেননি তারা দুজন। ৩৮ রান করা বাবরের বিদায়ে ভাঙে রিজওয়ানের সঙ্গে ৫১ রানের জুটি। থিতু হলেও ৩৬ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নিয়েছেন রিজওয়ানও। মঈন আলীর বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন তিনি। আরেক ব্যাটার সাউদ শাকিল ফিরে গেছেন ২৯ রানের ইনিংস খেলে।

বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের একমাত্র ব্যাটার হিসেবে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন আঘা সালমান। উইলির বলে ফেরার আগে খেলেছেন ৫১ রানের ইনিংস। শেষ দিকে শাহীন শাহ আফ্রিদির ২৫, হারিস রউফের ৩৫ এবং মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়রের ১৬ রান কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে। ইংল্যান্ডের হয়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন উইলি। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন গাস অ্যাটকিনসন, রশিদ ও মঈন।

এর আগে সেমি ফাইনাল খেলতে পাকিস্তানের যতটুকু স্বপ্ন বাকি ছিল সেটাকে আরও কঠিন করে তুলেছেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার। দাভিদ মালান ও জনি বেয়ারস্টোর ব্যাটে করে উদ্বোধনি জুটিতেই ৮২ রান তুলে ইংলিশরা। তবে পাকিস্তানের হয়ে সেই ঝড়টা থামান ইফতেখার আহমেদ। এই স্পিনারের বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ৩১ রান করে ফেরেন মালান। 
 
অবশ্য এরপরই চলতি বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলেন বেয়ারস্টো। তবে ৫৯ রান করা এই ব্যাটার হারিস রউফের বলে কভারে শট খেলতে গিয়ে আঘা সালমানের হাঁতে ধরা পরেন। এতে অবশ্য চাপ কমেনি বরং শাহীন শাহ আফ্রিদি, রউফদের উপর চড়াও হন জো রুট ও বেন স্টোকস। এই দুজনের ব্যাটেই দুশ রান পার করে ইংলিশরা। এসময় চলতি বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির সুযোগ পান স্টোকস। মাত্র ৭৬ বলে ৮৪ রান করা এই ব্যাটারকে থামান আফ্রিদি।
 
দুই ছক্কা ও ১১ চারে সাজানো এই ইনিংসের সমাপ্তি হয় এই পেসারের ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে। ১৩২ রানের এই জুটি ভাঙার কিছুক্ষণ পর রুটও ফেরেন ৬০ রান করে। এই ডানহাতি ব্যাটারকে স্লোয়ার ডেলিভারিতে ক্যাঁচের ফাঁদে ফেলেন আফ্রিদি।ইংল্যান্ড অবশ্য তিনশ পার করেছে অধিনায়ক জশ বাটলার (২৭) ও হ্যারি ব্রুকের (৩০) ব্যাটে করে। দুই মিডল অর্ডার ব্যাটার ঝড়ো গতিতে ব্যাটিং শুরু করেন। মাত্র ২৬ বলেই এই জুটি তুলে ৪৫ রান।
 
অবশ্য চার বলের ব্যবধানেই ফেরেন দুই ব্যাটার। ইংলিশদের হয়ে শেষ কাজটা করেন উইলি। মাত্র ৫ বলে ১৫ রানের ইনিংসে ভর করেই ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৩৭ রানের লক্ষ্য পায় ইংল্যান্ড। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করেন রউফ। ৬৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট পেয়েছেন তিনি। এদিকে আফ্রিদি ও মোহাম্মদ ওয়াসিম নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। একটি উইকেট পেয়েছেন ইফতেখার।