বিশ্বকাপ

পাকিস্তানকে ‘সমুদ্রে’ ফেলে সেমির পথে নিউজিল্যান্ড, লাভ বাংলাদেশেরও

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 18:02 বৃহস্পতিবার, 09 নভেম্বর, 2023

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

সেমিফাইনালে উঠার লড়াইয়ে টিকে থাকতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিততেই হতো নিউজিল্যান্ডকে। এমন ম্যাচে ট্রেন্ট বোল্ট, মিচেল স্যান্টনাররা মিলে লঙ্কান ব্যাটারদের একেবারে ধসিয়ে দিয়েছেন। সহজ লক্ষ্য তাড়ায় নিউজিল্যান্ড জয়টা পেয়েছে সহজেই। ৫ উইকেট আর ২৬.৪ ওভার বাকি রেখে কিউইরা জয় পেয়েছে ৫ উইকেটে। সেমিফাইনালের লড়াইয়ে আছে পাকিস্তানও। তবে কিউইদের বড় জয়ে শেষ চারে যাওয়ার সমীকরণটা কঠিন হলো বাবর আজমের দলের। এখন সেমিফাইনালে উঠতে হলে নিশ্চিতভাবেই অসম্ভব কোনো পথ পাড়ি দিতে হবে তাদের। এদিকে নিউজিল্যান্ডের জয়ে লাভ হয়েছে বাংলাদেশেরও। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বড় কোনো ব্যবধানে না হারলে সেক্ষেত্রে অনায়াসে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সুযোগ পাবে টাইগাররা।

বেঙ্গালুরুতে জয়ের জন্য ১৭২ রান তাড়ায় নিউজিল্যান্ডকে প্রত্যাশিত শুরুই এনে দেন ডেভন কনওয়ে এবং রাচিন রবীন্দ্র। দারুণ ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৭৩ রান। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার নিজেদের প্রথম উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। দুশমন্থ চামিরার বলে সোজা ব্যাটে খেলতে চেয়েছিলেন কনওয়ে।

ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক না হওয়ায় ইনসাইড এজ হয়ে বল চলে যায় শর্ট মিড উইকেটে থাকা ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার হাতে। হাফ সেঞ্চুরির আগে কনওয়েকে ফিরতে হয়ে ৪৫ রানের ইনিংস খেলে। হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি রাচিনেরও। মাহিশ থিকশানার স্লোয়ার ডেলিভারিতে সামনের পায়ের উপর ভর দিয়ে মিড অনের উপর দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার।

ধনাঞ্জয়া ক্যাচ লুফে নিলে রাচিনকে ফিরতে হয় ৪২ রানের ইনিংস খেলে। চারে নেমে দ্রুত রান তুলতে থাকেন ড্যারিল মিচেল। অন্যপ্রান্তে স্বভাবসূলভ ভঙ্গিতে খেলছিলেন কেন উইলিয়ামসন। ১৪ রান করা এই ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। ডানহাতি এই মিডিয়াম পেসারের বলে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন উইলিয়ামসন।

রান আউটে কাটা পড়তে হয়েছে মার্ক চ্যাপম্যানকে। বাঁহাতি এই ব্যাটার করেছেন ৭ রান। জয় পাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে আউট হয়েছেন মিচেল। ম্যাথিউসের ধীরগতির লেংথ ডেলিভারিতে কভার দিয়ে খেলতে গিয়ে চারিথ আসালঙ্কার হাতে ধরা পড়েছেন। ডানহাতি এই ব্যাটার খেলেছেন ৩১ বলে ৪৩ রানের ইনিংস। শেষ দিকে কিউইদের জয় নিশ্চিত করেন গ্লেন ফিলিপস ও টম লাথাম।

বেঙ্গালুরুর উইকেট ব্যাটারদের জন্য সহায়ক হওয়ায় এখানে আগে ব্যাটিং করা দলগুলো বরাবরই বড় রান তুলেছে। যদিও এখানেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল ইংল্যান্ড। একই কাণ্ড ঘটেছে লঙ্কান ব্যাটারদের ক্ষেত্রেও। নিউজিল্যান্ডের কাছে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে শ্রীলঙ্কা। এসময় ইনিংসের শুরু থেকেই নিয়ম করে উইকেট হারাতে থাকে তারা।

ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই টিম সাউথির বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচের ফাঁদে পড়েন পাথুম নিশাঙ্কা। মাত্র ২ রান করেই সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস উইকেটে এসে থিতু হতে পারেননি। বোল্টের লেংথ ডেলিভারিতে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ৬ রান করে। একই ওভারের চতুর্থ বলে সাদিরা সামারাবিক্রমাকেও ফেরান বোল্ট।

একদিকে যাওয়া আসার মিছিলে লঙ্কানদের রানের চাকা সচল রাখেন আরেক ওপেনার পেরেরা। এসময় দুই ছক্কা ও ৯ চারে মাত্র ২৪ বলেই তুলে নেন চলতি বিশ্বকাপে নিজের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। এর পরপরই ফেরেন চারিথ আসালঙ্কা। মাত্র ৮ করা আসালঙ্কাকে ফেরান বোল্ট। ৩৮ রানের এই জুটি ভাঙার কিছুক্ষণ পরই ফেরেন পেরেরা।

নিজের হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পর আর কোনও রান তুলতে পারেননি। ৫১ রান করা এই ব্যাটার লকি ফার্গুসনের বলে ক্যাচ আউট হয়েছেন। ফলে মাত্র ৭০ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে বসে দলটি। এরপর দেখেশুনে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন ম্যাথিউস ও ধনাঞ্জয়া। দুই মিডল অর্ডার ব্যাটার মিলে লঙ্কানদের শত রানের ঘর পার করান। যদিও এর কিছুক্ষণ পরই ফেরেন ম্যাথিউস।

স্যান্টনারের ঝুলিয়ে দেয়া ডেলিভারিতে ক্যাচ দিয়ে মাত্র ১৬ রান করেই ফেরেন তিনি। পরের ছয় ওভারে মাত্র ৮ রান তুলতে আরও দুই ব্যাটার ডি সিলভা (১৯) ও চামিকা করুনারত্নেকে (৬) হারায় লঙ্কানরা। দলীয় ১২৮ রানে দুশমন্থ চামিরা (১) আউট হলে ১৫০ এর আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা জাগে লঙ্কানদের। তবে সেটা বেশ ভালো ভাবেই সামাল দিয়েছেন থিকশানা ও দিলশান মাদুশঙ্কা।

শেষ দিকে তারা গড়েন ৪৩ রানের জুটি। এই জুটি আরও বড় হওয়ার আগেই লঙ্কান ইনিংস গুটিয়ে দেন রাচিন রাচিন। ফলে ১৭১ রানে অল আউট হয় লঙ্কানরা। তবে ৯১ বলে ৩৮ রান করে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন থিকশানা। কিউইদের হয়ে বোল্ট তিনটি এবং স্যান্টনার, ফার্গুসন ও রাচিন দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।