পাকিস্তান ক্রিকেট

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের দেশে.. বন্ধুর বেশে.. শিরোপাই যেখানে স্বপ্ন

ইনতেছার

ইনতেছার
প্রকাশের তারিখ: 18:52 মঙ্গলবার, 03 অক্টোবর, 2023

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

সাম্প্রতিক সময়ে ক্রিকেট বিশ্বের নির্মল সুন্দর ছবিগুলোর মধ্যে স্থান পাবে ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের বন্ধুসুলভ ছবিগুলো। আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কিংবা এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের এশিয়া কাপে সৌজন্যে যেখানে দেখা যায় বাবর আজম- মোহাম্মদ রিজওয়ানদের সাথে বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের। এই ছবিগুলোই যেন বলে দেয় ক্রিকেটীয় সম্পর্কে আত্মিক এক সম্পর্ক আছে দুই দেশের। অনিকেত প্রান্তরে হয়তো গোলা-বারুদের উল্লাস থাকে নিয়মিতই.. তবে খেলার মাঠে শাহিন শাহ আফ্রিদি আর জসপ্রীত বুমরাহদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সামনে পুরো বিশ্বই যেন অবাক তাকিয়ে রয়। সেই প্রতিদ্বন্দ্বীদের দেশেই এবার বিশ্বকাপ খেলতে পৌঁছে গেছে পাকিস্তান।

বিশ্বকাপে পাকিস্তান কী শুধু ভারতের বিপক্ষে খেলবে? তা তো নয়... তবে প্রতিটি ম্যাচে প্রতিটি দলের বিপক্ষে খেলতে হবে বাবর আজম-শাদাব খানদের দলকে। কিন্তু পাকিস্তানকে খেলতে হবে অসংখ্য ভারতীয়র বিপক্ষে, তাদেরই ভেন্যুতে, তাদেরই বুনো উল্লাসকে উপেক্ষা করে। বিশ্বকাপের আয়োজক যখন ভারত, পাকিস্তানের সব ম্যাচের প্রতিপক্ষও যেন তখন ভারত! কাশ্মীর সীমান্তের চিরায়িত বিবাদ ক্রিকেটাররা হয়তো ভুলে থাকেন, কিন্তু সেটা কী তাদের দর্শকরাও ভুলে যাবেন?

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের দেশে যাওয়ার আগে অবশ্য বেশ প্রস্তুতি নিয়ে গেছে বাবররা। দলগতভাবে বেশ শক্তিশালী অবস্থানে আছে কিছুদিন আগেই আইসিসির ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে থাকা দলটি। এশিয়া কাপে ফাইনালে উঠতে না পেরে শীর্ষস্থান অবশ্য হারিয়েছে ৯২ এর চ্যাম্পিয়নরা। তবে দলের জৌলুস তাতে একটুও কমেনি।

শক্তিমত্তা-

শাহিন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ, হাসান আলী, মোহাম্মদ ওয়াসিমদের নিয়ে আসরের অন্যতম শক্তিশালী পেস বোলিং আপ পাকিস্তানের। এর পাশপাশি আছে শাদাব খান, মোহাম্মদ নাওয়াজের স্পিন। এর পাশাপাশি ইফতিখার আহমেদ, আঘা সালমানরাও দলের প্রয়োজনে হাত ঘোরাতে পারেন।

ব্যাটিংয়ে বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ানদের অভিজ্ঞতায় নজর থাকবে পাকিস্তানের। আছেন ফখর জামানের মতো অভিজ্ঞ কিংবা ইমাম উল হকের মতো প্রতিশ্রুতিশীল ওপেনারও।

দুর্বলতা-

পাকিস্তানকে এই বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় পরীক্ষা দিতে হবে স্নায়ু নিয়ন্ত্রণ বা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের ঘরে চাপ সামলানোর। এশিয়া কাপের শেষ মুহূর্তে ইনজুরিতে পড়ায় দলে নেই নাসিম শাহ। এই পেসার না থাকায় বোলিংয়ে কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়েছে পাকিস্তান।

এ ছাড়া দলটির লেগ স্পিন অলরাউন্ডার শাদাব খানও বেশ কিছুদিন ধরে ফর্মে নেই। শেষবারের এশিয়া কাপে খুবই গড়পড়তা মানের বোলিং করেছেন শাদাব। ভারতে এমন পারফরম্যান্স অব্যাহত থাকলে পাকিস্তানের শিরোপা নিশ্চিত করা দুরহ হয়ে পড়বে।

এই বিশ্বকাপে পাকিস্তানের জন্য কঠিন হতে পারার আরেকটি কারণ হচ্ছে আইপিএল। পুরো বিশ্বের নামীদামী ক্রিকেটাররা আইপিএল খেলেন। যার কারণে উপমহাদেশের উইকেট সম্পর্কে খুবই ভালো ধারণা তাদের। সেখানে কেবল পিছিয়ে আছে পাকিস্তান। যারা আইপিএল না খেলায় কোনও ভেন্যুর বা উইকেট সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয়।

যাদের দিকে চোখ থাকবে-

শাহীন শাহ আফ্রিদি- এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা পেসার হয়ে যেতে পারেন আফ্রিদি। এই বছর ১২টি ম্যাচ খেলে ইতোমধ্যেই ২৪টি উইকেট নিয়েছেন আফ্রিদি। নাসিম শাহহীন পেস বোলিং লাইন আপে প্রথম পাওয়ার লে'তে গোলা ছুঁড়তে প্রস্তুত থাকবেন এই পেসার।

বিভিন্ন দলের টপ অর্ডারের বিপক্ষে বেশ ভালো রেকর্ড আছে আফ্রিদির। পাওয়ার পে'তে উইকেট নেয়া বা পরে বোলিংয়ে এসে ব্রেক থ্রু এনে দেয়া বা ডেথ ওভারে দারুণ সব স্লোয়ার.. সবক্ষেত্রেই বেশ পারদর্শী তিনি।

ইফতিখার আহমেদ- ২০১৫ সালে ওয়ানডে অভিষেক হলেও সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের ওয়ানডে দলে নিয়মিত হয়েছেন ইফতিখার। পাকিস্তানের মিডল অর্ডারে অন্যতম আস্থাভাজন তিনি। টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিত পারফর্ম করে থাকা ইফতিখার ওয়ানডেতেও আছেন দারুণ ফর্মে। শেষদিকে দ্রুত রান তোলায় পটু এই ব্যাটার। এই বছর ম্যাচে ১১৪.০৯ স্ট্রাইক রেটে ৩৪৮ রান করেছেন তিনি।

পাকিস্তানের বিশ্বকাপ স্কোয়াড- বাবর আজম (অধিনায়ক), শাদাব খান, ফখর জামান, ইমাম উল হক, আব্দুল্লাহ শফিক, মোহাম্মদ রিজওয়ান, সাউদ শাকিল, ইফতিখার আহমেদ, সালমান আঘা, মোহাম্মদ নাওয়াজ, উসামা মির, হারিস রউফ, হাসান আলী, শাহীন শাহ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ ওয়াসিম।