বাংলাদেশ- আয়ারল্যান্ড সিরিজ

শান্তর সেঞ্চুরি ও মুশফিকের অসাধারণ ফিনিশিংয়ে জিতল বাংলাদেশ

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 15:30 শুক্রবার, 12 মে, 2023

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

হাসান মাহমুদের দারুণ বোলিংয়ের পর নাজমুল হোসেন শান্তর সেঞ্চুরি এবং তাওহীদ হৃদয় ও মুশফিকুর রহিমের দারুণ দুটি ইনিংসে আয়ারল্যান্ডকে তিন উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল তামিম ইকবালের দল।

৩২০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪০ রানের মধ্যেই তামিম ইকবাল এবং লিটন দাসের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১৩ বলে ৭ রান করে ফিরে যান তামিম। লিটনের ব্যাটে আসে ২১ বলে ২১ রানের ইনিংস।

তারপর শান্তর সঙ্গে ৬১ রানের জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান। যদিও ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। ২৭ বলে ২৬ রান করে ফিরে যান তিনি। এরপর হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে ১৩১ রানের জুটি গড়েন শান্ত।

৫৮ বলে ৬৮ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন হৃদয়। ২২ বছর বয়সী এই তরুণের ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কার মার। অপরদিকে ৯৩ বলে ১১৭ রান করেন শান্ত।
এই জুটিতেই মূলত ম্যাচে ফিরে বাংলাদেশ।

বাকি কাজটা তখন করেন মুশফিকুর রহিম। ২৮ বলে চারটি চারে ৩৬ রানে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন তিনি। তার এমন ইনিংসে ৩২০ রানের লক্ষ্য আরও তিন বল বাকি রেখেই পূরণ করে ফেলে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের ইনিংসে শেষদিকে অবদান রাখে মেহেদী হাসান মিরাজের ১২ বলে ১৯ এবং তাইজুল ইসলামের ১৩ বলে খেলা ৯ রানের ইনিংসটিও। আয়ারল্যান্ডের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন কার্টিস ক্যাম্ফায়ার এবং জর্জ ডকরেল।

এর আগে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। ইনিংসের প্রথম ওভারে হাসান মাহমুদের ভেতরে ঢোকা বলে ডিফেন্স করেছিলেন পল স্টার্লিং। তবে মাঝ ব্যাটে করতে পারেননি অভিজ্ঞ এই ওপেনার। বরং এজ হয়ে খানিকটা বাঁদিয়ে যাওয়ার সময় ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণভাবে ক্যাচ লুফে নেন মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশের ফিল্ডাররা আবেদন করলেও তাতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে রানের খাতা খোলার আগেই স্টার্লিংকে ফেরায় বাংলাদেশ।

শুরুতে উইকেট হারিয়ে তিনে নামা অ্যান্ডি বালবির্নিকে নিয়ে হাল ধরার চেষ্টায় ছিলেন স্টিফেন দোহানি। হাসান-ইবাদতদের সামলে ধীরে ধীরে স্কোরবোর্ডে রানও যোগ করছিলেন দুজন। কিন্তু সপ্তম ওভারে হাসানকে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে হাঁকাতে গিয়ে মিরাজের তালুবন্দি হন দোহানি। ডানহাতি এই ব্যাটার ফিরলেও স্বাগতিকদের টানতে থাকেন হ্যারি টেক্টর ও বালবির্নি।

পেসারদের বিপক্ষে খুব বেশি সুবিধা করতে না পারলেও স্পিনারদের পেয়ে জ্বলে উঠেন টেক্টর। তাইজুল ইসলামের এক ওভারে তিন ছক্কা মেরে তুলে নিয়েছেন হাফ সেঞ্চুরিও। ৫২ বলে হাফ সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন তিনি। এদিকে ২১ ওভারে দলীয় একশ রানে পৌঁছেছে আয়ারল্যান্ড। টেক্টর মতো হাফ সেঞ্চুরি পথে হাঁটছিলেন বালবির্নিও। যদিও তাকে পঞ্চাশ ছুঁতে দেননি শরিফুল ইসলাম। 

বাঁহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের খানিকটা বাইরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে মুশফিকের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক। হাফ সেঞ্চুরির খুব কাছে থাকলেও শেষ পর্যন্ত ৪২ রানে ফিরে যেতে হয় তাকে। এরপর নতুন ক্রিজে আসা লর্কান টাকারকেও ফেরাতে সময় নেননি এই পেসার। দলীয় ১৩৮ রানে ১৬ রান করা এই ব্যাটারকে বিদায় করেন শরিফুল। লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই আইরিশ ব্যাটার।

সুবিধা করতে পারেননি কার্টিস ক্যাম্ফার। তাইজুল ইসলামের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে সুইপ করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি ডানহাতি এই ব্যাটার। বল প্যাডে আঘাত করলেও খানিকটা সময় নিয়ে আউট দেন অনফিল্ড আম্পায়ার। যদিও রিভিউ নিয়েছিলেন ক্যাম্ফার। তবে শেষ রক্ষা হয়নি ৮ করা এই ব্যাটারের। 

ক্যাম্ফার ফেরার পর তাইজুলের বলে এক রান নিয়ে ৯৩ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন টেক্টর। ৩১তম ইনিংসের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নিজের চতুর্থ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। আইরিশ ব্যাটার হিসেবে যা সবচেয়ে দ্রুততম। এদিন আরও একটি রেকর্ড গড়েছেন টেক্টর। সাকিব আল হাসানের লেংথ ডেলিভারিতে মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে আয়ারল্যান্ডের হয়ে এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার কীর্তি গড়েছেন তিনি।

এদিকে বাংলাদেশের বোলারদের ওপর রীতিমতো তাণ্ডব চালাতে থাকেন জর্জ ডকরেল ও টেক্টর। তাতে দারুণ ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ডকরেল। মেহেদি হাসান মিরাজের লেংথ ডেলিভারিতে মিড উইকেটে ঠেলে দিয়ে ৩১ বলে ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। একেবারে শেষ দিকে এসে টেক্টরের ঝড় থামান ইবাদত হোসেন। ডানহাতি এই পেসারের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ক্যারিয়ারসেরা ১৪০ রানের ইনিংস খেলা টেক্টর।

যদিও আটকানো যায়নি আয়ারল্যান্ডের রান। শেষ পর্যন্ত ৪৫ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৯ রান তোলে স্বাগতিকরা। মার্ক অ্যাডায়ার ২০ এবং ডকরেল অপরাজিত ছিলেন ৭৪ রানের ইনিংস খেলে। বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন হাসান ও শরিফুল।