বাংলাদেশ- আয়ারল্যান্ড সিরিজ

মুশফিক আর বাংলাদেশের রেকর্ডের দিনে পরিত্যক্ত দ্বিতীয় ওয়ানডে

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 13:33 সোমবার, 20 মার্চ, 2023

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্তর হাফ সেঞ্চুরিতে বড় পুঁজির ভিত পেয়েছিল বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান ব্যর্থ হয়ে ফিরলেও ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন তাওহিদ হৃদয় ও মুশফিকুর রহিম। হৃদয় হাফ সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপে পুড়লেও মুশফিক গড়েছেন রেকর্ড। সাকিবকে টপকে পেয়েছেন বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে দ্রুততম সেঞ্চুরি। মুশফিকের এমন ঝড়ের পর বাগড়া দেয় বেরসিক বৃৃষ্টি। প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টার বৃষ্টির পর খেলা মাঠে গড়ানো সম্ভব না হওয়ায় দ্বিতীয় ওয়ানডে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে থেকে ২৩ মার্চ তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে খেলতে নামবে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড।

এদিন টস হেরে আগের ম্যাচেও ভালো শুরু পেয়েছিলেন মুশফিক। তবে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। দ্বিতীয় ম্যাচে সেই আক্ষেপ ঘুচিয়েছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। এদিন ৬০ বলে ১০০ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে এটাই সবচেয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি। শেষের দিকে আইরিশ বোলারদের মুশফিক তুলোধোনা করলেও শুরুর দিকে বাংলাদেশের ভিত গড়ে দিয়েছেন লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনের জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করেই বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দিয়েছেন দুই ওপেনার লিটন দাস ও তামিম ইকবাল। পুরো পাওয়ার প্লে জুড়েই তারা নির্ভার ক্রিকেট খেলেছেন। অবশ্য পাওয়ার প্লের শেষ বলে রান আউট হয়েছেন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম।

গ্রাহাম হিউমের করা ফুলার লেন্থ ডেলিভারির বলটি লেগ সাইডে ঠেলে দিয়ে রান নিচ্ছিলেন লিটন। তার ডাকে সাড়া দিয়ে দৌড় দেন তামিমও। তবে তার দৌড়ের গতি যথেষ্ট ছিল না। সেই বল হাতে নিয়ে শর্ট স্কয়ার থেকে স্টাম্প বরাবর ছুড়ে মারেন মার্ক অ্যাডায়ার।

তামিমের রান আপ পূর্ণ হওয়ার আগেই স্টাম্প ভেঙ্গে দেয় বল। ফলে জন্মদিনে ২৩ রান করেই ফিরতে হয়েছে তাকে। ৪ চারে ৩১ বলে এই রান আসে তার ব্যাট থেকে। দুই ওপেনার মিলে দশ ওভারে ডট বল খেলেছেন ৪১টি। ফলে প্রথম পাওয়ার প্লেতে বেশ ধীর গতিতেই রান এসেছে।

তামিম ফিরে গেলেও নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস টেনেছেন লিটন। এই দুজনের ব্যাটে দলীয় সেঞ্চুরিতে পৌঁছায় বাংলাদেশ। ম্যাথু হামফ্রেসের শর্ট বল লেন্থ ডেলিভারিতে মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে ৫৫ বলে ক্যারিয়ারের অষ্টম হাফ সেঞ্চুরিতে পৌঁছান লিটন।

লিটন-শান্ত মিলে দ্বিতীয় উইকেটে ১০০ রান যোগ করেছেন। এদিকে হাফ সেঞ্চুরির পর ইনিংস টেনে নিতে পারেননি লিটন। তিনি ব্যক্তিগত ৭০ রানে আউট হয়েছেন। কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে শর্ট মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রেইনের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন। লিটন ফিরে গেলেও সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ৫৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন শান্ত। ওয়ায়নডেতে এটি তার তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি।

সাকিব অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। উইকেটে এসে শুরু থেকেই তাড়াহুড়ো করছিলেন সাকিব। আর তাতেই কাল হয়েছে ব্যক্তিগত ১৭ রানে তিনি গ্রাহাম হিউমের বলে স্লগ করতে গিয়ে শর্ট থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দিয়েছেন হ্যারি টেক্টরের হাতে। লিটনের মতো শান্তও ৮০ পেরোনো ইনিংস খেলে ফিরেছেন। ব্যক্তিগত ৭৩ রানে তিনি লেগ স্টাম্পের বাইরের বল পেছনে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গ্লাভসে হালকা চুমু দিয়ে বল চলে যায় কিপারের হাতে। ফলে শেষ হয় এই সম্ভাবনাময় ইনিংসের।

এরপর বাংলাদেশের রান বাড়িয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও তাওহিদ হৃদয়। এই দুজন আইরিশ বোলারদের চেপে ধরতে দেননি। শুরু থেকেই হাত খুলে খেলেছেন। এই দুজনের জুটির হাফ সেঞ্চুরি এসেছে মাত্র ৩৮ বলে। এরপর মুশফিক তার ব্যক্তিগত হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ৩৩ বলে। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিতে পারতেন হৃদয়ও। মাত্র ১ রানের আক্ষেপে পুড়েছেন তিনি। অ্যাডায়ারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে ইনসাইড এজ হয়ে আউট হয়েছেন হৃদয়।

এদিকে সুবিধা করতে পারেননি ইয়াসির আলী রাব্বি। গ্রাহাম হিউমের অফ স্টাম্পের বাইরের  ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়েছেন ৭ রান করা এই ব্যাটার। এদিকে শেষ ওভারে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন মুশফিক। হিউমের বলে এক রান নিয়ে ৬০ বলে সেঞ্চুরি করেন তিনি। যা ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম। এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল ৬৩ বলে সেঞ্চুরি করা সাকিবের। তাতে ৩৪৯ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। যা নিজেদের ইতিহাসে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রানের পুঁজি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

বাংলাদেশ- ৩৪৯/৬ (৫০ ওভার) (তামিম ২৩, লিটন ৭০, শান্ত ৭৩, সাকিব ১৭, হৃদয় ৪৯, মুশফিক ১০০*)