নারী এশিয়া কাপ

পাকিস্তানের পতাকা উড়ানো হুসেনরা সমর্থন দিচ্ছেন বাংলাদেশকেও

মমিনুল ইসলাম

মমিনুল ইসলাম
প্রকাশের তারিখ: 15:48 শুক্রবার, 07 অক্টোবর, 2022

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট, সিলেট থেকে ||

এশিয়া কাপের সপ্তাহখানেক পেরিয়ে গেছে। তবে সিলেটের আনাচে-কানাচে দেখা মেলেনি তেমন কোন প্রচার-প্রচারণা। প্রধান সড়ক থেকে সিলেট স্টেডিয়ামের প্রবেশ পথ দেখেও বোঝায় উপায় নেই ভেতরে চলছে এশিয়ার নারী ক্রিকেটারদের মহা উৎসব। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের ক্রিকেটের চাহিদাটা যে খানিকটা কম সেটা অনুমান করতে বাকি নেই। তবুও ম্যাচের সময় দেখা মিলছে হাতে গোনা কিছু সমর্থককে।

সময় যত বেড়েছে দর্শকদের উপস্থিতির সংখ্যাটাও বেড়েছে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে দেখে মিলেছে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক দর্শক। গেল কদিনে শ’খানেক দর্শক না দেখা গেলেও এদিন সেটা ছাড়িয়ে পৌঁছেছে প্রায় ৬০০-৭০০ জনে। ভারত-পাকিস্তানের রোমাঞ্চকর ম্যাচ, সঙ্গে সমর্থকদের উল্লাস। সবমিলিয়ে জমে উঠেছে এশিয়ার দুই জায়ান্টের মাঠের লড়াই। ভারত-পাকিস্তানে র ম্যাচ নিয়ে বাংলাদেশের দর্শকের আগ্রহ ঢের বেশি।

বেশিরভাগ বাংলাদেশের মানুষ হলেও গ্যালারি এদিন ভাগ হয়েছে ভারত-পাকিস্তানে। দীপ্তি শর্মারা উইকেট পেলে যেমন ভারতের সমর্থন দেয়া দর্শকরা উল্লাস করছেন, নিদা দার চার মারলে উদযাপন করছেন পাকিস্তানের জন্য গলা ফাঁটাতে আসা ক্রিকেটপ্রেমীরা। এসবের মাঝে গ্যালারিতে ঠিকঠাক চোখ রাখতেই দেখা গেলে বেশ কয়েকজন তরুণ-তরুণী পাকিস্তানের পতাকা উড়াচ্ছেন। টিভি স্ক্রিনে তাদের উল্লাস দেখতে পারায় বুঝতে বাকি হয়নি তাদের জন্ম পাকিস্তানের।

কৌতুহল নিয়ে গ্যালারিতে যেতেই তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ। দু-এক কথায় তাদের সঙ্গে আলাপ জমে উঠল। প্রশ্ন করতেই জানা গেল তাদের পরিচয়। জন্ম পাকিস্তানে হলেও প্রায় ৫ বছর ধরে বাংলাদেশে রয়েছে তারা। সিলেটের এম এ জি ওসমানি মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করেন তারা। তাই বাংলাদেশ বেশ চেনা-জানা তাদের। লম্বা সময় ধরে বাংলাদেশে থাকায় প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বাংলাতেই।

পাকিস্তানি হলেও বাংলাটা খারাপ বলেন না তারা। ৭-৮ জন তরুণীর সঙ্গে ছিলেন হুসেইন আহমেদ নামের এক তরুণ। যার জন্ম পাকিস্তানের পেশোয়ারে। তার সঙ্গে থাকা এরশাদেরও জন্ম সেখানেই। লম্বা সময় ধরে বাংলাদেশে থাকায় এখানকার খাবার ও সংস্কৃতিতে মুগ্ধ তারা। গত বছরের শেষ দিকে পাকিস্তান বাংলাদেশ সফরে করলেও সিলেটে হয়নি কোন ম্যাচ। তবে নারী দলকে সিলেটে পেয়ে তাদেরকে সমর্থন দিতে আসার লোভ সামলাতে পারেননি তারা।

নিজ দেশের পতাকা নিয়ে এসে দলকে সমর্থন দিতে পারায় খুশি তারা। হুসেইন আহমেদ বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে নিজের দেশের পতাকা নিয়ে এখানে আসতে পেরেছি। বাংলাদেশে আছি পাঁচ ছর ধরে। এখানকার সবকিছুই ভালো লাগে। এই যে দর্শক হিসেবে পাকিস্তানকে সমর্থন দিচ্ছি মাঠে এটাও দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার মতো অনুভূতি দেয়। আজকে আমরা জিতবো ইন শা আল্লাহ।’

এদিনই প্রথম সিলেট স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে আসেননি তারা। এর আগে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) খেলা দেখেছেন। বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড ম্যাচেও ছিলেন গ্যালারিতে। পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকে সমর্থন দেয়ার কথা জানালেন তারা। হুসেন বলেন, ‘পাকিস্তানের পর বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমর্থক আমরা। গতকাল বাংলাদেশের খেলা দেখতেও আমরা সবাই এক সাথে মাঠে এসেছি।’

অনেকদিন পর বাংলাদেশের মাটিতে নিজের দেশের মানুষকে পেয়ে দেখা করার লোভ সামলাতে পারছেন না মোকাদ্দেস-হুসেনরা। বিসমাহ মারুফ-তুবা হাসানদের সঙ্গে দেখা করতে পাকিস্তান এম্বাসির সঙ্গে যোগাযোগও করেছেন তারা। ম্যাচের পর দেখা করার সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছেন তারা।