এশিয়া কাপ

যে মাঠে সাংবাদিকরাও 'টুয়েলভথ ম্যান'

সৈয়দ সামি

সৈয়দ সামি
প্রকাশের তারিখ: 21:26 বুধবার, 07 সেপ্টেম্বর, 2022

|| সৈয়দ সামি, দুবাই থেকে||

ঐতিহাসিক শারজাহ স্টেডিয়ামের প্রবেশ দ্বারে বড় অক্ষরে লেখা 'হোম অব ক্রিকেট ইন ইউএই'। এই কথাটি বর্তমান প্রেক্ষাপটে অনেকাংশেই ভুল প্রমাণিত হতে পারে। কারণ সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রিকেট এখন দুবাই কেন্দ্রিক। এবারের এশিয়া কাপের বেশিরভাগ ম্যাচও আয়োজন করা হয়েছে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে।

অবশ্য শারজাহতে যে তিনটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে সবগুলোতেই দর্শকদের উপস্থিতি ছিল স্বতঃস্ফুর্ত। এই মাঠে ঢুকলে ম্যাচ কাভার করতে আসা সাংবাদিকরাও যেন হয়ে যান দর্শকদের একাংশ। ভিআইপি বক্সের কাছেই সাংবাদিকদের জন্য রয়েছে খোলামেলা প্রেসবক্স।

যেখান থেকে লং অফের ওপর দিয়ে বড়সর ছক্কা মারলে প্রেসবক্সে এসে বল পড়ারও বড় সম্ভাবনা রয়েছে। পৃথিবীর অধিকাংশ ক্রিকেট মাঠের প্রেসবক্স থাকে কাঁচ দিয়ে ঘেরা। সেই হিসেবে শারজাহতে সংবাদ কাভার করতে আসা সাংবাদিকরাও হয়ে যান দর্শকদের একটি অংশ।

ক্রিকেটে অনেক সময়ই দর্শকদের 'টুয়েলভথ ম্যান' বলা হয়। শারজাহতে সাংবাদিকদের নামের পাশেও বসতে পারে সেই একই বিশেষণ। অন্যান্য স্টেডিয়ামে যেখানে প্রেসবক্স থেকে দর্শকদের চিৎকার, পারফ্যাক্ট শটের সাউন্ড পাওয়া যেখানে দুষ্কর। সেখানে শারজাহর প্রেস বক্স থেকে খেলা দেখাটা আর লিখাটা যেকোনো সাংবাদিকের জন্য বহুল কাঙ্খিতও বলা যেতে পারে। 

দুবাইয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শারজাহর ক্রিকেট অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। এবারের এশিয়া কাপে ভারত কোনো ম্যাচই খেলতে চায়নি শারজাহতে। তাদের যুক্তি ছিল শারজাহর অনুশীলন সুবিধা ভালো নয়। এমনকি দর্শক সংখ্যাও কম হয়। সেই সঙ্গে দুবাই থেকে শারজাহতে ভ্রমণের অসুবিধার কথাও উল্লেখ্য করেছিল তারা। ভারত ছাড়া বাকি দলগুলোর আপত্তি না থাকলেও শারজাহতে তিনটির বেশি ম্যাচ আয়োজন করা হয়নি।

আশির দশকে ভারত এবং পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের এক করতেই মরুর বুকে যাত্রা শুরু হয় শারজাহ স্টেডিয়ামের। ১৯৮১ সালে গাভাস্কার একাদশ ও মিয়াঁদাদ একাদশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে শারজাহর মাঠে গড়ায় ক্রিকেট। এবারের এশিয়া কাপে এরই মধ্যে ভারত-পাকিস্তান দুইবার মুখোমুখি হলেও তাদের এক করা যায়নি শারজাহতে।

এদিকে শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তানের মধ্যকার এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচ দিয়ে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের রেকর্ড গড়েছে ঐতিহাসিক এই স্টেডিয়াম। স্বীকৃতি পেয়েছে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেরও। এমন স্বীকৃতির পরও শারজাহর সোনালী অতীত বর্তমানে অনেকটাই ধূসর। শারজাহতে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগলেই কেবল বদলে যেতে পারে শারজাহর ক্রিকেট।