পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ড

বিশ্বরেকর্ডের ম্যাচে সিরিজ হারের গ্লানিতে পাকিস্তান

তামজিদুর রহমান

তামজিদুর রহমান
প্রকাশের তারিখ: 10:25 শনিবার, 18 মে, 2019

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের চতুর্থটিতে ৩ উইকেটের জয় পেয়েছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। আর এই জয়ে সিরিজটি ৩-০তে জিতে নিয়েছে তারা। শুক্রবার নটিংহ্যামের ট্রেন্ট ব্রিজে পাকিস্তানের ছুঁড়ে দেয়া ৩৪১ রানের লক্ষ্য ৩ বল হাতে রেখে টপকে যায় জস বাটলারের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড।

এই নিয়ে গড়ে পরপর তিন ওয়ানডেতে ৩৪০ বা তার বেশী দলীয় সংগ্রহের বিশ্বরেকর্ড গড়েছে পাকিস্তান। কিন্তু এরপরেও পরাজয়ের বেড়াজালে আবদ্ধ থাকতে হয়েছে তাদের। ইংলিশদের দারুণ এই জয়ের পেছনে মূল কৃতিত্ব ছিল ওপেনার জ্যাসন রয়ের। ৪ ছয় এবং ১১ চারের সাহায্যে মাত্র ৮৯ বলে ১১৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছেন তিনি। 

অলরাউন্ডার বেন স্টোকসও অবশ্য কম যাননি। ৬৪ বলে অপরাজিত ৭১ রান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। যেখানে তিনি হাঁকিয়েছেন ৩টি ছয় এবং ৫টি চার। বাকিদের মধ্যে জেমস ভিন্স ৪৩ এবং টম কারান ৩১ রান করেছেন। পাকিস্তানের পক্ষে ২টি করে উইকেট পেয়েছেন ইমাদ ওয়াসিম এবং মোহাম্মদ হাসনাইন। আর ১টি করে উইকেট নিতে পেরেছেন জুনায়েদ খান, হাসান আলি ও শোয়েব মালিক।  

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এদিন শুরুটা দারুণ করেছিলেন দুই ইংলিশ ওপেনার রয় এবং ভিন্স। ৯৪ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ার পথে পাকিস্তানি বোলারদের পাত্তাই দিচ্ছিলেন না তাঁরা। শেষমেশ ভিন্সকে বোল্ড করে এই জুটিটি ভাঙ্গতে সক্ষম হয়েছিলেন ডানহাতি পেসার হাসনাইন। 

তবে ৪৩ রান করে ভিন্স ফিরলেও জো রুটের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ১০৭ রানের জুটি গড়েন রয়। এই জুটি গড়ার পথে দুর্দান্ত একটি সেঞ্চুরি তুলে নেন ইংলিশ এই ওপেনার। এরপর সরফরাজ আহমেদের হাতে ক্যাচ বানিয়ে তাঁকে আউট করতে সক্ষম হন হাসনাইন। 

রয় ফিরলে কিছুটা ছন্দপতন হয়েছিল ইংল্যান্ডের। ৩ উইকেটে ২০৮ রান করা ইংলিশরা আড়াইশর কোটা পার করার পরেই আরও ৩ উইকেট হারিয়ে বসে। পরবর্তীতে ষষ্ঠ উইকেটে জো ডেনলির সাথে ৪২ রানের জুটি গড়েন বেন স্টোকস। সপ্তম উইকেটে টম কারানের সাথে ৬১ রানের আরেকটি জুটি গড়ে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান তিনি। 

এর আগে ম্যাচটির শুরুতে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক বাটলার। ইংল্যান্ডের আমন্ত্রণে এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে বাবর আজমের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরির সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩৪০ রান সংগ্রহ করেছিল সফরকারীরা। 

বাবর ছাড়াও ব্যাট হাতে কারিশমা দেখিয়েছেন ওপেনার ফখর জামান এবং অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজ। উভয় ব্যাটসম্যানই পেয়েছেন হাফসেঞ্চুরির দেখা। ফখর ৫৭ এবং হাফিজ ৫৯ রান করেছেন। 

ব্যাটিংয়ে নেমে এদিন মাত্র ৬ রান করে রিটায়ার্ট হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল ওপেনার ইমাম উল হককে। এরপর আর মাঠে নামতে পারেননি তিনি। তবে ইমাম না থাকলেও ফখর জামান এবং বাবর আজম মিলে জুটি গড়েন ১১৬ রানের। দলকে শক্ত পুঁজির ভিত গড়ে দেয়া ফখরকে মার্ক উডের হাতে ক্যাচ বানিয়ে জুটি ভাঙ্গেন কারান।

পরবর্তীতে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ হাফিজকে সাথে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে ১০৪ রানের আরেকটি বড় জুটি গড়েন বাবর। একই সাথে তুলে নেন ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি। ৫৯ রান করে বাবরের সঙ্গী হাফিজ বিদায় নিলে এই জুটি ভাঙ্গে। 

এরপর ২৪৯ রানের মাথায় কারানের বলে বাবর আউট হলে শোয়েব মালিকের ৪১ রানের সুবাদে ৩০০ ঊর্ধ্ব সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। ইংলিশদের পক্ষে টম কারান ৪টি উইকেট পেলেও বেশ খরুচে ছিলেন। ১০ ওভার বোলিং করে ৭৫ রান গুনতে হয়েছে তাঁকে। আর ৭১ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন মার্ক উড। 

উল্লেখ্য এই নিয়ে টানা তিন ম্যাচে সাড়ে ছয়শ রানের মুখ দেখলো ওয়ানডে ক্রিকেট। প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হলে দ্বিতীয়টিতে শুরুতে ব্যাটিং করে ৩৭৩ রান সংগ্রহ করেছিল ইংল্যান্ড। জবাবে পাকিস্তান ৩৬১ রানে থেমেছিল। পরবর্তীতে তৃতীয় ওয়ানডেতে পাকিস্তানের ৩৫৮ রানের লক্ষ্য ৩১ বল হাতে রেখে পার করেছিল ইংলিশরা। এবার চতুর্থ ম্যাচটিও হাই স্কোরিং হল। 

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ 

পাকিস্তান- ৩৪০/৭ (৫০ ওভার) (বাবর-১১৫, হাফিজ-৫৯; কারান-৪/৭৫, উড-২/৭১) 

ইংল্যান্ড- ৩৪১/৭ (৪৯.৩ ওভার) (রয়-১১৪, স্টোকস-৭১*; ইমাদ-২/৬২, হাসনাইন-২/৮০)