সৌম্যের সেঞ্চুরির ম্যাচেও হেরে গেল বাংলাদেশ

সংগৃহীত
promotional_ad

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||


অবশেষে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নিজের খোলস ছেড়ে বের হয়েছেন সৌম্য সরকার। ১৫১ বলে ১৬৯ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেছেন এই ওপেনার। তার দুই ছক্কা এবং ২২ চারের ইনিংসে বাংলাদেশ করে ২৯১ রান। যদিও উইল ইয়াং, রাচিন রবীন্দ্র, হেনরি নিকোলস এবং টম লাথামের অসাধারণ চারটি ইনিংসে এই লক্ষ্য অনায়সে টপকে যায় নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশকে সাত উইকেটে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জিতে নেয় স্বাগতিকরা।


নেলসনে বাংলাদেশের দেয়া বড় লক্ষ্যের জবাবে দেখেশুনে শুরু করলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাতখুলে খেলেন রাচিন এবং ইয়াং। প্রথম পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের বোলাররা কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেননি। উল্টো কিউই দুই ওপেনার চড়াও হয়েছেন বাংলাদেশের বোলারদের ওপর। বিনা উইকেটে তারা প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৬১ রান তুলে নিয়েছে। অবশ্য এর খানিক পরেই হাসান মাহমুদের করা শর্ট পিচ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে রিশাদ হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৩৩ বলে ৪৫ রান করা রাচিন। ওপেনিং জুটিতে কিউইরা তোলে ৭৬ রান।


রাচিন ফেরার পর ইয়াংয়ের সঙ্গে সঙ্গে হাল ধরেন হেনরি নিকোলস। দুজনের জুটি খুব দ্রুতই পঞ্চাশ ছাড়িয়ে যায়। ব্যক্তিগত ৭৭ রানে ইয়াংয়ের ক্যাচ মিস করেন তাওহীদ হৃদয়। শরিফুলের ওভারে অফ সাইডের বাইরে করা বলে এক্সট্রা কভারে ড্রাইভ দেন ইয়াং। বাম দিকে ঝাঁপিয়ে অসাধারণ এক প্রচেষ্টায় বলটি ধরে ফেলেন হৃদয়, যদিও সেটিকে তালুবন্দী করতে পারেননি তিনি। কনুই মাটি স্পর্শ করার সময় ছুটে যায় বল। ফলে ৭৭ রানে জীবন পেয়ে যান সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা ইয়াং।


ব্যক্তিগত ৮৩ রানে থাকা অবস্থায় মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আবারও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ইয়াং। দেখতে দেখতে একশ রানের জুটি ছুঁয়ে ফেলেন ইয়াং এবং নিকোলস। ৬৪ বলে হাফ সেঞ???চুরি তুলে নেন নিকোলস। এই দুজনের ১২৮ রানের জুটি ভাঙেন হাসান। ৯৪ বলে দুই ছক্কা ও আট চারে ৮৯ রান করেন ইয়াং। সহজ ফিরতি ক‍্যাচ নিয়ে ইয়াংকে বিদায় করে হাসান।


রয়েসয়ে শুরু করলেও হাফ সেঞ্চুরির পর ব্যাটে গতি বাড়ান নিকোলস। ইয়াংয়ের মতো সেঞ্চুরি করতে পারেননি তিনিও। দলকে জয়ের কাছাকাছি রেখে শরিফুলের বলে ডিপ মিড উইকেটে রিশাদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান এই ব্যাটার। ৯৯ বলে আটটি চার ও একটি ছক্কায় ৯৫ রান আসে তার ব্যাটে। নিকোলস-লাথামের ৫৬ রানের জুটি ভাঙার পর কিউইদের জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন লাথাম। অধিনায়কের ব্যাটে আসে ৩২ বলে ৩৪ রানের ইনিংস। সঙ্গে ২০ বলে ২৪ রান করে অপরাজিত থাকেন টম ব্লান্ডেল।


এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই অ্যাডাম মিলনেকে মিড উইকেট দিয়ে চার মেরে রানের খাতা খোলেন সৌম্য। অবশ্য বেশিদূর এগোতে পারেননি এনামুল হক বিজয়। এই ওপেনার মিলনের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে এজ হয়ে স্লিপে লাথামের কাছে ক্যাচ দিয়েছেন ব্যক্তিগত ২ রানে। ফলে বাংলাদেশ দলীয় ১১ রানেই প্রথম উইকেট হারায়।


scdry_ads

বিজয়ের বিদায়ের পর উইকেটে এসেই দারুণ শুরু করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মিলনের লেংথ ডেলিভারিতে মিড অফ দিয়ে চার মেরে রানের খাতায় নাম তোলেন তিনি। তবে তিনিও থিতু হতে পারেননি। জ্যাকব ডাফির করা লেংথ ডেলিভারিতে কাভার পয়েন্ট দিয়ে খেলতে গিয়ে টপ এজ হয়ে আউট হয়েছেন ৬ রান করা শান্ত।


এরপর ব্যর্থ হয়েছেন লিটন দাসও। ডাফির আগের বলেই ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মেরেছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটার। পরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে পয়েন্টে সোজা উইল ইয়াংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। ফলে মাত্র ৬ রান করে আউট হতে হয় তাকে। বাংলাদেশ ৪৪ রানে হারায় তৃতীয় উইকেট।


চতুর্থ উইকেটে তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে বেশ ভালোভাবেই এগোচ্ছিলেন সৌম্য। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হলে এই জুটি ভাঙে। ক্লার্কসনের স্ট্রেইট ড্রাইভ করেছিলেন সৌম্য। ব্যাটে-বলে ঠিক মতো না হলে বোলারের হাতে লেগে স্টাম্প ভেঙে যায়। রান নেয়ার জন্য নন স্ট্রাইকে থাকা হৃদয় বেশ খানিকটা এগিয়ে এসেছিলেন। ফলে তাকে রান আউট হয়ে ফিরতে হয়।


উইলিয়াম ও’রর্কের করা প্রথম ওভারেই চড়াও হয়েছিলেন সৌম্য। ওভারের দ্বিতীয় বলে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চার মেরে শুরু। পরের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে আরেকটি চার। ওভারের শেষ বলে পয়েন্ট দিয়ে আরেকটি চার মেরে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেন সৌম্য। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যাট হাতে আরও বেশি সাবলীল হয়েছেন তিনি। হাফ সেঞ্চুরি পেতে বাঁহাতি এই ব্যাটার খেলেছেন ৫৮ বল।


ক্লার্কসনকে পয়েন্ট দিয়ে চার মেরে হাফ সেঞ্চুরিতে পৌঁছান সৌম্য। অবশ্য এক বল পরেই কাভারে রাচিন রবীন্দ্র হাতে জীবন পেয়েছেন এই বাংলাদেশি ব্যাটার। সেই ওভারের পঞ্চম বলে বেশ খানিকটা সময় নিয়ে তাঁকে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার শন হেগ। অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নেন সৌম্য। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় প্যাডে বল লাগার আগে ব্যাটে লেগেছিল বল। ফলে সে যাত্রায় বেঁচে যান সৌম্য।


পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রেখেছিলেন সৌম্য ও মুশফিকুর রহিম। দুজনেই দেখে শুনে ভালোই এগোচ্ছিলেন। এই দুজনের ৯১ রানের জুটি ভেঙেছেন কিউই পেসার ডাফি। কিউই এই পেসারের অফ কাটারে বিভ্রান্ত হয়ে এজ হয়ে উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলকে ক্যাচ দিয়েছেন ৪৫ রান করা মুশফিক।


হাফ সেঞ্চুরির পর দুইবার জীবন পাওয়া সৌম্যকে ব্যক্তিগত ৯২ রানে তাকে আবারও জীবন দিয়েছেন ইয়াং। ও’রর্কের করা স্লোয়ার ডেলিভারিতে করা বল সৌম্যর ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ উঠে গিয়েছিল কাভার পয়েন্টে। সেখানে সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি ইয়াং। ফলে আবারও জীবন পান সৌম্য। এরপর সেঞ্চুরি তুলে নিতে বেশিক্ষণ লাগেনি তার। ১১৬ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন সৌম্য।


কিউই স্পিনার আদি অশোকের বলে অফ সাইডে সিঙ্গেল নিয়ে তিন অঙ্কে পৌঁছান সৌম্য। দীর্ঘদিন পর এমন এক ইনিংস খেলে সৌম্য যেন কিছুটা হাফ ছেড়েই বাঁচলেন। খানিকটা উঁচুতে লাফিয়ে নিজের সেঞ্চুরির উদযাপন করলেন। ব্যাটের ওপর হেলমেট ধরে ধ্যানের ভঙ্গিমায় সেঞ্চুরির উদযাপন সারলেন। সৌম্যর ব্যাট থেকে সর্বশেষ সেঞ্চুরি এসেছিল ২০১৮ সালের অক্টোবরে।


এরপর দ্রুত বেশ কয়েকটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মিরাজকে ব্যক্তিগত ১৯ রানে ফিরিয়ে অভিষেক ম্যাচে উইকেটের দেখা পেলেন কিউই স্পিনার অশোক। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে কাট করতে গিয়ে মিরাজ সোজা ক্যাচ দিয়েছেন ইয়াংয়ের হাতে। এর ফলে সৌম্য ও মিরাজের জুটি থেমেছে ৬১ রানে।


এরপর তানজিম সাকিবকে নিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস টেনেছেন সৌম্য। তিনি ১৪৪ বলে দেড়শ রান স্পর্শ করেন। ইনিংসের শেষদিএক সাকিব ফিরেছেন ১৩ রান করে ক্লার্কসনের শিকার হয়ে। সৌম্যর ১৬৯ রানের ইনিংস থামিয়েছেন ও’রর্ক। কাভারের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে হেনরি নিকোলসের হাতে ধরা পড়েছেন সৌম্য। এরপর রিশাদ ও হাসান মাহমুদকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে দিয়েছেন এই কিউই পেসার।


সংক্ষিপ্ত স্কোর-


বাংলাদেশ- ২৯১/১০ (৪৯.৫ ওভার) (সৌম্য ১৬৯, মুশফিক ৪৫; রর্ক ৩/৪৭, ডাফি ৩/৫১)।
নিউজিল্যান্ড- ২৯৬/৩ (৪৬.২ ওভার) (নিকোলস ৯৫, ইয়াং ৮৯, রাচিন ৪৫; হাসান ২/৫৭)



Trending News

Publisher & Editor Md Kamal Hossen

Cricfrenzy took birth as the new face of cricket media in Bangladesh to connect the masses with the sport they love unconditionally in a new and exciting way.

Email: cricfrenzy@gmail.com
Phone: +880 1305-271894
Address: 2nd Floor , House 18, Road 2, Mohammadia Housing Socity, Mohammadpur , Dhaka
Vacancies
Contact for Advertisement
Terms & Conditions
Privacy Policies
© 2024 cricfrenzy.com . All rights reserved
footer ball