পান্ত-রাহুলের সেঞ্চুরির পর ভারতের ধস, একদিনে ইংল্যান্ডের চাই ৩৫০
ছবি: লোকেশ রাহুলের পাশাপাশি দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি পেয়েছেন ঋষভ পান্তও
পান্তের সেঞ্চুরির একটু আগেই একশ ছুঁয়েছেন লোকেশ রাহুলও। তাদের দুজনের সেঞ্চুরিতে চারশর বেশি লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখলেও সেটা হয়ে উঠেনি। পান্ত ও রাহুল ফেরার পর আচমকা ধস নামে ভারতের ব্যাটিং অর্ডারে। নতুন বল পেয়ে ভারতকে ধসিয়ে দেন ব্রাইডন কার্স, জশ টাংরা। ভারতের দেয়া ৩৭১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বিনা উইকেটেই ২১ রান তুলেছে ইংল্যান্ড। হেডিংলিতে জিততে হলে শেষ দিনে আরও ৩৫০ রান করতে হবে স্বাগতিকরা। সফরকারী ভারতের চাই ১০ উইকেট।
কার্তিকের কাছে পান্তই ভারতের সবচেয়ে সফল উইকেটকিপার ব্যাটার
২২ জুন ২৫
হেডিংলিতে জয়ের জন্য ৩৭১ রান তাড়ায় চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে আধা ঘণ্টার মতো ব্যাটিং করতে হতো ইংল্যান্ডকে। মোহাম্মদ সিরাজ, জসপ্রিত বুমরাহ ও রবীন্দ্র জাদেজাকে সেই সময়টা বেশ ভালোভাবেই পার করেছেন দুই ওপেনার জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট। তাদের দুজনের সাবধানী ব্যাটিংয়ে ৬ ওভারে কোন উইকেট না হারিয়ে ২১ রান তুলেছে স্বাগতিকরা।
এর আগে ২ উইকেটে ৯০ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে ভারত। বৃষ্টির কারণে আগেভাগেই খেলা শেষ হওয়ায় তৃতীয় দিনের শেষ বিকেলে ওভারের শেষ বলটি করতে পারেননি শোয়েব বশির। চতুর্থ দিনের সকালের শুরুতে নিজের ওভারটি সম্পন্ন করেছেন ইংলিশ স্পিনার। পরের ওভারে বোলিংয়ে এসেই শুভমান গিলের উইকেট তুলে নেন ব্রাইডন কার্স। ডানহাতি পেসারের ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হতে হয় ভারতের অধিনায়ককে।
প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান গিল এবার ফিরেছেন মাত্র ৮ রানে। দিনের বাকি সময়ের গল্পটা কেবলই পান্ত এবং রাহুলের। আগের দিন ৪৭ রানে অপরাজিত থেকে খেলা শেষ করা রাহুল ৮৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। পঞ্চাশ ছোঁয়ার পরও নিজের সাবলীল ব্যাটিংই করে যাচ্ছিলেন ডানহাতি এই ওপেনার। পাঁচে নেমে আক্রমণাত্বক শুরু করলেও একটু পর রয়েসয়ে খেলতে থাকেন পান্ত। ইংলিশ পেসারদের বিপক্ষে খানিকটা ধুঁকছিলেনও। যদিও একটু পরই সেটা দারুণভাবে সামলে নিয়ে ৮৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন।
ব্রুকের সেঞ্চুরি মিসের দিনে বুমরাহর ৫ উইকেট, ভারতের লিড
২৩ জুন ২৫
ইংল্যান্ডে খেলা নিজের সবশেষ পাঁচ টেস্ট ইনিংসের সবকটিতেই পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিং খেলেছেন পান্ত। ভারতের উইকেটকিপার ছাড়া এমন কীর্তি স্যার ডন ব্র্যাডম্যান, হ্যান্সি ক্রনিয়ে, শিবনারায়ণ চন্দরপল, কুমার সাঙ্গাকারার মতো ব্যাটারদের। পান্তের সামনে আছেন কেবল টানা ৭ ইনিংসেই পঞ্চাশ ছোঁয়া স্টিভ স্মিথ। উল্টো দিকে নিজের চিরচেনা ব্যাটিংয়ে ২০২ বলে ক্যারিয়ারের নবম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন রাহুল। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের ব্যাটিং এগিয়েছে ডানহাতি ব্যাটারের হাত ধরেই।
হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া পান্ত পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর থেকেই আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে শুরু করেন। যার ফলে দ্রুতই সেঞ্চুরির কাছে চলে যান। বশিরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি করেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার । ভারতের প্রথম ব্যাটার হিসেবে ইংল্যান্ডের মাটিতে এক টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করলেন পান্ত। ২৭ বছর বয়সি ব্যাটারের আগে ভারতের হয়ে এক টেস্ট দুইটি সেঞ্চুরির রেকর্ড আছে বিজয় হাজারে, সুনীল গাভাস্কার, রাহুল দ্রাবিড়, বিরাট কোহলি, আজিঙ্কা রাহানে, রোহিত শর্মা। তাদের মাঝে গাভাস্কার তিন এবং দ্রাবিড় দু’বার এমন কীর্তি গড়েছেন।
অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের পর দ্বিতীয় উইকেটকিপার ব্যাটার হিসেবে এক টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছেন পান্ত। ২০০১ সালে জিম্বাবুয়ের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার সেঞ্চুরি করেছিলেন সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে, হারারেতে। সেঞ্চুরির পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি পান্ত। দ্রুত রান তুলতে গিয়ে বশিরের বলে ক্যাচ দিয়েছেন জ্যাক ক্রলির হাতে। বাঁহাতি ব্যাটারকে ফিরতে হয় ১১৮ রানের ইনিংস খেলে। পান্তের সেঞ্চুরিতে আরও একটি রেকর্ড হয়েছে। প্রথমবারের মতো ভারতীয় ব্যাটাররা এক টেস্টে পাঁচটি সেঞ্চুরি করলেন।
ক্রিকেট ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেছে ছয়বার। এদিকে বাঁহাতি ব্যাটার ফেরার পর কারুন নায়ার ও রাহুল মিলে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। যদিও জুটি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। কার্সের অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের বলে ব্যাকফুট পাঞ্চ করতে গিয়ে ইনসাইড এজে বোল্ড হয়েছেন ১৩৭ রানের ইনিংস খেলা রাহুল। একটু পর আউট হয়েছেন কয়েক বছর পর ভারতের টেস্ট দলে ফেরা নায়ারও। পরবর্তীতে শার্দুল ঠাকুররা দ্রুতই ফিরে গেলে রবীন্দ্র জাদেজা অপরাজিত থাকার পরও ৩৬৪ রানে অল আউট হয় ভারত। ইংল্যান্ডের হয়ে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন টাং ও কার্স।
