আইপিএল

গিল-সুদর্শনের জোড়া সেঞ্চুরির কাছে চেন্নাইয়ের হার

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 00:09 শনিবার, 11 মে, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

শেষ ২৪ বলে চেন্নাই সুপার কিংসের প্রয়োজন ৭০ রান, ব্যাটিংয়ে শিভাম দুবে ও রবীন্দ্র জাদেজা। আহমেদাবাদে গলা ফাঁটিয়ে ব্যাটারদের ভরসাই দেয়ার চেষ্টা করে গেলেন সফরকারীদের ভক্তরা। তবে প্রত্যাশা মেটাতে পারলেন না একটুও। মোহিত শর্মা ও রশিদ খানের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ের সামনে নেট রান রেটের চাপে রীতিমতো পিষ্ট হতে হলো দুবে-জাদেজাদের। শেষদিকে এসে তিন ছক্কার সঙ্গে এক চার মারলেও চেন্নাইকে জেতাতে পারলেন না মহেন্দ্র সিং ধোনি। পাঁচবারের শিরোপাজয়ী সাবেক অধিনায়কের ১১ বলে অপরাজিত ২৬ রান কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। গুজরাটের কাছে ৩৫ রানে হেরে প্লে-অফে যাওয়ার কঠিন সমীকরণের সামনে পড়তে হলো বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের।

আহমেদাবাদে বড় লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই হোঁচট খায় চেন্নাই। কয়েক ম্যাচ পর একাদশে ফেরা রাচিন রবীন্দ্র ফিরেছেন ইনিংসের প্রথম ওভারেই। উমেশ যাদবের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে আলতো করে ঠেলে দিয়ে এক রান নিতে চেয়েছিলেন আজিঙ্কা রাহানে। রাচিন সাড়া দিলেও সময় মতো স্ট্রাইক প্রান্তে পৌঁছাতে পারেননি। রাচিন পৌঁছানোর আগেই সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভেঙেছেন ডেভিড মিলার। ফলে রান আউটে কাটা পড়ে প্রথম ওভারেই ফিরতে হয় বাঁহাতি এই ওপেনারকে। পরের ওভারে আউট হয়েছেন আজিঙ্কাও।

সন্দীপ ওয়ারিয়রের লেংথ ডেলিভারিতে ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন ডানহাতি এই ওপেনার। তবে লিডিং এজ হয়ে বল মিড অফে চলে গেলে সেখানে থাকা রাহুল তেওয়াতিয়া খানিকটা দৌড়ে গিয়ে দারুণ এক ক্যাচ লুফে নেন। প্রথম দুই ওভারে দুই উইকেট হারানো চেন্নাইয়ের বিপদ বেড়েছে পরের ওভারে রুতুরাজের বিদায়ে। উমেশের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে স্কয়ার লেগের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়েছিলেন রুতুরাজ। সীমানায় দাঁড়িয়ে থাকা রশিদ খান দারুণ দক্ষতার সাথে ক্যাচ নিলে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন চেন্নাইয়ের অধিনায়ক।

১০ রানে ৩ উইকেট হারানো চেন্নাইয়ের হাল ধরেন মিচেল ও মঈন। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ১০৯ রান। শুরুতে খানিকটা ধীরগতিতে ব্যাটিং করলেও ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন মিচেল। যদিও হাফ সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি নিউজিল্যান্ডের এই ব্যাটার। মোহিত শর্মার উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে ব্যাটে-বলে টাইমিং না হওয়ায় লং অফে থাকা শাহরুখ খানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় ৬৩ রান করা মিচেলকে। তাকে সঙ্গ দেয়া মঈন হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৩১ বলে। মিচেলের মতো তিনিও ফিরেছেন হাফ সেঞ্চুরির পর।

মোহিতের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে ছক্কা মারতে গিয়ে নূর আহমেদের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৫৬ রান করা মঈন। দুবে ভালো শুরু করলেও তাকে ইনিংস বড় করতে দেননি মোহিতই। ডানহাতি এই পেসারের ফুলটস ডেলিভারিতে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন নূরের হাতে। দুবেকে ফিরতে হয় ২১ রানে। এরপর টিকতে পারেননি রবীন্দ্র জাদেজা-মিচেল স্যান্টনাররাও। চেন্নাইকে শেষ পর্যন্ত থামতে হয় ১৯৬ রানে। গুজরাটের হয়ে মোহিত তিনটি এবং রশিদ নিয়েছেন দুটি উইকেট।

সবশেষ এগারো ম্যাচের মাত্র একটিতে টস জিতেছিলেন রুতুরাজ। ধোনির জায়গায় চেন্নাইকে নেতৃত্ব দিতে আসা তরুণ এই অধিনায়ক যেন টস জিততেই ভুলে গিয়েছিলেন। অবশেষে গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে টস ভাগ্য বদলেছে রুতুরাজের। আহমেদাবাদে টস জিতে অবশ্য বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে গুজরাটকে দারুণ শুরু এনে দেন গিল ও সুদর্শন। পাওয়ার প্লেতে তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৫৮ রান। দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা সুদর্শন হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৩২ বলে।

এদিকে মাত্র ২৫ ইনিংসে আইপিএলে ১ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। শচীন টেন্ডুলকার ও রুতুরাজকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দ্রুততম ভারতীয় ব্যাটার হিসেবে ১ হাজার রান ছুঁয়েছেন। আরেক ওপেনার গিল হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ২৫ বলে, লং লেগ দিয়ে ছক্কা মেরে। সেঞ্চুরি পেতে গুজরাটের অধিনায়ককে খেলতে হয়েছে ৫০ বল। গিলের সেঞ্চুরিটি আইপিএলের ইতিহাসের শততম সেঞ্চুরি। কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে আইপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম।

গিলের সেঞ্চুরি পাওয়ার দিনে তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগার ছুঁয়েছেন দারুণ ছন্দে থাকা সুদর্শন। গুজরাটের অধিনায়কের মতো তিনিও পঞ্চাশ বলেই সেঞ্চুরি করেছেন। সেঞ্চুরির পরপরই অবশ্য সাজঘরে ফিরেছেন তারা ‍দুজন। ১০৩ রান করা সুদর্শন এবং ১০৪ রান করা গিলকে ফিরেছেন তুষার দেশপাণ্ডে। শেষ দিকে ডেভিড মিলারের ১৬ রানে ৩ উইকেটে ২৩১ রানের পুঁজি পায় স্বাগতিকরা।