বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজ

২ ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ বাংলাদেশের

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 14:31 মঙ্গলবার, 07 মে, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে ১৬৫ রানে থামিয়ে দিয়ে তাড়া করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছে জিম্বাবুয়ে। তবে শেষ পর্যন্ত ৯ রানে হারতে হয়েছে তাদের। বিশেষ করে লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের কল্যাণে ১৮ ওভার পর্যন্ত বেশ ভালোভাবেই ম্যাচে ছিল জিম্বাবুয়ে। তবে শেষ পর্যন্ত সমীকরণ মেলাতে ব্যর্থ হয়ে ২ ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ হারতে হয়েছে সফরকারীদের।

সিরিজ জিতলেও স্বাচ্ছন্দ্যে থাকার ফুসরৎ পাচ্ছে না বাংলাদেশ। আগের দুই ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও ব্যর্থ হয়েছে টপ অর্ডার। বিশেষ করে লিটন দাস এই ম্যাচেও ব্যর্থ হয়েছেন। রানের দেখা পাননি অধিনায়ক শান্তও। এ ছাড়া পেস বোলাররাও বেশ খরুচে ছিলেন। ফলে শেষ দুই ম্যাচে নিজেদের ভুলত্রুটি সুধরে নেয়ার সুযোগ থাকছে বাংলাদেশ দলের সামনে।

বাংলাদেশের দেয়া ১৬৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভালো শুরু পায়নি জিম্বাবুয়ে। তারা দলীয় ৫০ রানের আগেই হারায় উপরের সারির ৪ ব্যাটারকে। একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলছিলেন তাদিওনাশে মারুমানি। এই ওপেনার আউট হয়ে ফিরে গেলে আবারও শুরু হয় ব্যাটারদের আসা যাওয়া।

ক্লাইভ মাদান্দে ১১ ও জোনাথন ক্যাম্পবেল ফেরেন ২১ রান করে। ৯১ রানে ৮ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও জিম্বাবুয়েকে জয়ের পথে রেখেছিলেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ও ফারাজ আকরাম। এই দুজনে ২৮ বলেই পঞ্চাশ রানের জুটি গড়েন। শেষ দুই ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ২৭ রান। 

যদিও তাসকিন আহমেদের করা ১৯তম ওভারে মোটে ৬ রান নিতে পারেন এই দুই ব্যাটার। ২০তম ওভারের প্রথম বলেই মাসাকাদজা ১৩ রান করে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে বোল্ড হয়ে ফিরলে এই জুটি ভাঙে ৫৪ রানে। সেই সঙ্গে জিম্বাবুয়ের জয়ের আশাও নিভে যায়। শেষ পর্যন্ত তারা হারে ৯ রানের ব্যবধানে।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৪ ওভার বোলিং করে ৪২ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ২টি উইকেট নিয়েছেন রিশাদ হোসেন। আর একটি করে উইকেট পেয়েছেন তানভির ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, তানজিম সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

এর আগে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে সাবধানী শুরু করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে চার মেরে রানের খাতা খোলেন লিটন দাস। তবে এই জুটিকে বেশিদূর এগোতে দেননি জিম্বাবুয়ের পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি।

ডানহাতি এই পেসারের করা চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয়, তৃতীয় বলে টানা স্কুপ করার চেষ্টা করেছিলেন লিটন। তবে ব্যাটে বলে করতে পারেননি। চতুর্থ বলেও স্কুপ খেলতে গিয়ে ব্যাটে লেগে ইন সাইড এজ হয়ে স্টাম্প ভেঙে যায়। ফলে ১৫ বলে ৯ রান করেই ফিরতে হয় তাকে।

পরের ওভারে সিকান্দার রাজাকে চার মেরে স্বাগতম জানিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তিন বল পরে রাজার স্কিড করে ভেতরে ঢোকা আর্ম বলে বোল্ড হয়ে আউট হয়েছেন শান্ত। ফলে ৪ বলে ৬ রান করেই ফিরে যেতে হয় তাকে। এরপর একপ্রান্ত আগলে রাখা তানজিদ হাসান তামিমও ফিরে গেছেন।

তাকে নিজের শিকার বানিয়েছেন ফারাজ আকরাম। বেশ ভালোই খেলছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তবে ধৈর্য্যহারা হয়ে উইকেট থেকে বেরিয়ে মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে মাদান্দের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। ফলে ২২ বল ২১ রানের ইনিংস শেষ হয় তার।

এরপর বাংলাদেশের ইনিংস টেনেছেন তাওহীদ হৃদয় ও জাকের আলী অনিক। হৃদয় শুরুতে ধরে খেললেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাতখুলে খেলেছেন। ৩৪ বলে নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। জাকের অবশ্য ক্রেইগ আরভিন ও ব্র্যায়ান বেনেটের ভুল বোঝাবুঝিতে জীবন পেয়েছেন মিড উইকেটে।

১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে স্কুপ করে মুজারাবানিকে ৪ মেরেছিলেন হৃদয়। পরের বলেই দারুণ এক ইয়র্কারে তাকে বোল্ড করে ফেরান জিম্বাবুয়ের এই পেসার। ফলে হৃদয়ের ইনিংস শেষ হয় ৩৮ বলে ৫৭ রানে। দুই বল পর আরেকটি ইয়র্কারে জাকেরের স্টাম্প ভেঙেছেন মুজারাবানি।

হাফ সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৬ রান দূরে থেকে আউট হয়েছেন জাকের। মাত্র ১৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের সেরা বোলার মুজারাবানি।  এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ রিশাদ হোসেনকে নিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৬৫ রানে পৌঁছে দিয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

বাংলাদেশ- ১৬৫/৫ (২০ ওভার) (লিটন ১২, তানজিদ ২১, শান্ত ৬, হৃদয় ৫৭, হৃদয় ৫৭, জাকের ৪৪, মাহমুদউল্লাহ ৯*)

জিম্বাবুয়ে- ১৫৬/৯ (মারুমানি ৩১, ক্যাম্পবেল ২১, মাদান্দে ১১, ফারাজ ৩৪*; সাইফউদ্দিন ৩/৪২, রিশাদ ২/৩৮)