দিল্লির স্বপ্ন ভেঙে মুম্বাইয়ের পঞ্চম শিরোপা
ছবি: সংগ্রহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
একপেশে ফাইনাল। একপেশে চাপ। রোমাঞ্চ নেই, উত্তেজনাও। সবচেয়ে কম বয়সী অধিনায়ক হিসেবে শিরোপা উঁচিয়ে ধরা হয়নি দিল্লি ক্যাপিটালস অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারের। আরও একবার স্বপ্ন ভঙ্গ হলো তাদেরও। তাতে আরেকবার রোহিত শর্মার নেতৃত্বে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
ফাইনাল; চাপ? উদাহরণ দরকার? ম্যাচের প্রথম বল করলেন ট্রেন্ট বোল্ট, বলটা লাফিয়ে উঠলো। ব্যাটের কানায় লেগে বল গেল ডি ককের হাতে। চাপে হার মানলেন মার্কাস স্টয়নিস। ব্যাট তুলতে ভুলে গেলেন হয়তো, ঠিকঠাক চালাতেও পারলেন না। ফাইনালের প্রথম বলেই উইকেট পেলেন বোল্ট। চাপ পড়লো দিল্লি ক্যাপিটালসের ওপর।
তার প্রমান দেন রাহানেও, বোল্টের পরের ওভারেই। লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট লাগিয়ে ফিরে যান সাজঘরে। যেন তিনি বুঝতে পারেননি ব্যাটটা আসলে চালানো উচিত হয়নি। চাপ বাড়লো আরেকটু। দিল্লির ওপর, ধাওয়ানেরও। তিনি তাই আউট হলেন আসরে মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা জয়ন্ত যাদবের বলে। ১৩ বল থেকে মাত্র ১৫ রান করে।
চাপ তখন পুরো গ্রাস করছে দিল্লিকে। ফাইনালের, দ্রুত উইকেট হারানোর। চাপে হারিয়ে যাওয়াটাই হয়তো স্বাভাবিক ছিল তখন। সেটা হতে দেননি অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার, রিশাভ পন্তকে সঙ্গে নিয়ে নিজের ইনজুরি আক্রান্ত কাঁধে সব চাপের ভার বইলেন। পন্ত খেললেন মেরে।

৪ চার আর ২ ছক্কায় ৩৮ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলে আউট হন কোল্টার নাইলের বলে। আয়ার সেটা হলেন না, শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন। তবে যতটা আশা দেখিয়েছিলেন, ততটা নিতে পারলেন না দলের সংগ্রহ।
তাতে অবশ্য বড় কৃতিত্ব বুমরাহ-কোল্টারদের ডেথ বোলিংয়ের। শ্রেয়াস ব্যক্তিগত ভাবে করলেন ৫০ বলে ৬৫ রান। দিল্লি থামলো ১৫৬ রানে, ৭ উইকেট হারিয়ে।
১৫৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা মুম্বাইকে চাপটা ফিরিয়ে দিতে চাইলেন দিল্লি অধিনায়ক আইয়ার। প্রথম ওভারেই অশ্বিনকে এনে চমকে দিতে চাইলেন রোহিতকে। প্রথম দুই বলে সমীহ দেখালেও তৃতীয় বলে চাপটা ফিরিয়ে দেন আবার দিল্লিকে, ছক্কা হাঁকিয়ে।
এরপর আরও কিছু ঘটনা ঘটেছে। স্টয়নিস প্রথম বলে আউট হয়েছিলেন। বল হাতে এসে প্রথম বলে আউট করেন ডি কককে। সেই কিপারের হাতে ক্যাচ বানিয়ে। রোহিতের জন্য নিজের উইকেট বিসর্জন দেন সূর্যকুমার যাদব। শেষে এসে অধিনায়কের সঙ্গে ম্যাচ জেতান ঈশান কিশান।
তবে তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি। দিল্লির ওপর থেকে চাপ সরেনি। মুম্বাইয়ের ওপর চাপ পড়েনি আর। তারা ম্যাচ জিতেছে সহজেই। ৫ উইকেটের ব্যবধানে। আরেকবার শিরোপা উল্লাসে করেছে মুম্বাই; রোহিত শর্মা; জয়বার্ধানে।
আর হতাশা সঙ্গী করে ফের টু্র্নামেন্ট শেষ হয়েছে দিল্লির। আগের এগারো বার ফাইনালই খেলতে পারেনি। এবার পারলেও শিরোপাটা রয়ে গেছে অধরাই। প্রথম বলে বোল্টের দেয়া সেই চাপের ফলই কি? হয়তো, হয়তো না। তবে চাপ কখনো কখনো সমীকরণ বদলে দেয়। দুর্দান্ত দলকে নাজেহাল করে ছাড়ে। দিল্লির ক্ষেত্রে হয়তো তেমন কিছুই হয়েছিল। মুম্বাই তাই শিরোপা লড়াইটা সহজেই জিতলো।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দিল্লি ক্য??পিটালস:
১৫৬/৭ ( ওভার ২০)
(আইয়ার ৬৫*, পন্ত ৫৬; বোল্ট ৩/৩০, কোল্টার নাইল ২/২৯)
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স:
১৫৭/৫ (ওভার ১৮.৪)
(রোহিত ৬৮, কিশান ৩৩*; নরকিয়া ২/২৫)