৪৬ কোটির বকেয়া মেটাতে বিসিবির সঙ্গে আলোচনায় বসছে চিটাগং কিংস

ছবি: সামির কাদের চৌধুরী

সবচেয়ে বড় অভিযোগ উঠেছে চিটাগং কিংসের মালিক সামির কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে। বিসিবি তাদের কাছ থেকে পাওনা ৪৬ কোটি টাকা বকেয়া চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে। এই বিষয়টি সামির কাদের নিজেই গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তবে এই সমস্যার সমাধানে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও বিসিবির সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেননি বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তবে সোমবার বিসিবি তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, দ্রুতই তার সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে তারা।
বিতর্কিত বিপিএলের জন্য বিসিবিকে দায় দিচ্ছে চিটাগং
৩ ঘন্টা আগে
সামির কাদের বলেন, 'আমার সাথে আজকে কথা হয়েছে কিছু বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে। ওনারা আমাকে নিশ্চিত করেছেন যে এটা নিয়ে আমার সাথে খুব শিগগিরই বসে সমাধান করবে।' আলোচনায় বসতে চাওয়ায় বিসিবিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, 'এখন যেহেতু তারা আমাকে আজকে দুপুরবেলা বলেছেই যে তারা বসবেন, আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে এতদিন পর যে নিজ থেকে তারা এখন আমাকে ডাকছে আলোচনায় বসার জন্য।'
বিসিবি কী সত্যিই ৪৬ কোটি টাকা পাবে? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, 'মজার বিষয় হলো এই ফিগারটা ৪৬ কোটি টাকার। এটা না ওনাদের (বিসিবি) কাছে কোনো জবাব আছে, না আমার কাছেও কোনো জবাব আছে। কিন্তু বাজারে কিন্তু ঘুরছে ৪৬ কোটি টাকার। এই ফিগারটা কোথা থেকে আসছে এটা কারো কাছে কোনো উত্তর নেই। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাছেও এটা আপনাদের সামনে হয়তোবা জিজ্ঞেস করা হয়েছে, এটার কোনো উত্তরই নেই। আমার কাছেও নেই।'

নোটিশে উল্লেখিত এই ৪৬ কোটির একটি বড় অংশই সুদ হিসেবে দেখানো হয়েছে। সামির কাদেরের মতে, এর মধ্যে প্রায় ৩৬ থেকে ৩৮ কোটি টাকাই সুদ। এই বিষয়টি নিয়ে ২০১৪ সাল থেকে একটি আরবিট্রেশন বা আইনি প্রক্রিয়া চলমান ছিল, যা ২০১৮ সালে স্বয়ং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডই একটি স্টে অর্ডার বা স্থগিতাদেশের মাধ্যমে থামিয়ে দেয়। যেহেতু বিসিবি নিজেই বিষয়টি স্থগিত করে রেখেছে, তাই একই বিষয়ে নতুন করে আইনি নোটিশ পাঠানোকে তিনি অযৌক্তিক এবং 'আদালত অবমাননা' বলে মনে করেন।
এবছরই রাজশাহীতে হবে বিপিএল, প্রত্যাশা ক্রীড়া উপদেষ্টার
১০ আগস্ট ২৫
চিটাগং কিংসের এই মালিক আরও বলেন, 'আমি একবার নয়, বহুবার জানিয়েছি। বহুবার জানিয়েছি। তার মানে বিসিবি… আমি কেন বলছি তা হলো—যখন আমি জানিয়েছি, তখন দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের জন্য, আর দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমার জন্যও, বিষয়টি তাদের জানা ছিল না। তারা বিষয়টি জানতই না। তো এখন অজান্তেই আমাকে ৪৬ কোটি টাকার একটি নোটিশ দিয়ে দিয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমি নোটিশটা পেয়েছি আজকে প্রায় মাসখানেক হয়েছে। আজকে মাসখানেক হয়েছে। তো আমার তরফ থেকে কিন্তু আমি কিছু বলিনি। আমি যেমন আজকে বলছি আপনাদের সামনে কথাটা। কিন্তু তাদের তরফ থেকেই বলা হয়েছে যে ৪৬ কোটি টাকার নোটিশ পাঠানো হয়েছে।'
২০১২ ও ২০১৩ সালেও সামির কাদেরের মালিকানায় ছিল চিটাগং কিংস। সেই সময় বেশ কয়েকজন দেশি এবং বিদেশি ক্রিকেটারের বকেয়া রেখে গিয়েছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। যা পরবর্তীতে পরিশোধ করতে হয়েছিল বিসিবিকে। বিসিবির হিসাবে ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৬৪ ডলার (১৮ কোটি ৯১ লাখ ৭৮ হাজার টাকা) পরিশোধ করা হয়েছিল। এরপর অনেকবার সামির কাদেরকে নোটিশ দিলেও তিনি সেই নোটিশের জবাব দেননি বলে জানা গেছে। এ কারণেই বাধ্য হয়ে আরবিট্রেশনে যায় বিসিবি।
বিপিএলের গত আসরেও অংশ নিয়েছে চিটাগং। এবারও ক্রিকেটারদের বকেয়া পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে বিসিবি। সেই সঙ্গে হোটেল ভাড়াও বকেয়া আছে তাদের। এবার চিটাগংইয়ের প্রাইজমানি থেকে সেই অর্থ কেটে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। তবে সেই অর্থের পরিমাণ কত তা জানা যায়নি।