নিদাহাস ট্রফি

'ব্যক্তিগত লক্ষ্য নয়, বাংলাদেশ সবার উপরে'

জুবাইর

জুবাইর
প্রকাশের তারিখ: 20:08 মঙ্গলবার, 27 ফেব্রুয়ারি, 2018

শেখ জামালের হয়ে নতুন দায়িত্ব পালন করছিলেন নুরুল হাসান সোহান। প্রথমবারের মত অধিনায়কের গুরু দায়িত্বে বেশ ভালোই মানিয়ে নিয়েছিলেন এই তরুন উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান। ব্যাট হাতে রান করে সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সফলভাবেই।

ডিপিএলের প্রথম ছয় ম্যাচে এক সেঞ্চুরি ও তিন হাফসেঞ্চুরিতে ৪১৪ রান করেছেন সোহান। প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকানোর দিনেই নিদাহাস ট্রফির স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছেন তিনি।

ফর্মে থাকা অবস্থায় সুযোগ পাওয়া সোহান অবশ্য জাতীয় দলের নতুন মুখ নন। ২০১৬ সালের শুরু থেকেই নির্বাচকদের নজরে ছিলেন তিনি। দেশের হয়ে তিন ফরম্যাটেই (নয়টি টি-টুয়েন্টি, দুটি ওয়ানডে ও একটি টেস্ট) খেলেছেন তিনি।

২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের কঠিন সফরে দলের বিপদে কয়েকটি চোখে পড়ার মত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি, আর উইকেট কিপিং নিয়ে কখনই প্রশ্ন ছিল না। কিন্তু কম্বিনেশনের কারনে দলে নিয়মিত হতে পারেননি ২৪ বছর বয়সী সোহান। 

বছর ঘুরতে না ঘুরতেই অনেকটা পরিনত হয়েই জাতীয় দলে ফিরেছেন সোহান। অবিশ্বাস্য ফর্মে থাকা এই তরুন উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান ক্রিকফ্রেঞ্জির সাক্ষাৎকারে আসন্ন শ্রীলঙ্কা সফর, ডিপিএল ফর্ম, নিজের ব্যাটিং ও আরও অনেক কিছু নিয়েই কথা বলেছেন।

পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারয়টি তুলে ধরা হল...

*ফর্মে আছেন, ভালো সময়েই সুযোগ পেয়েছেন ... 

- তেমন কিছু না। ৫০ ওভারের ম্যাচ চলছিল ডিপিএলে। এখন টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলতে যাচ্ছি... লক্ষ্য থাকবে দলের প্রয়োজন অনুযায়ী খেলা।

*ওয়ানডে কম্পিটিশন থেকে সোজা টি-টুয়েন্টিতে, মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে?

- আসলে পেশাদার ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে এত কিছু চিন্তা করার সময় খুব কম। টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-টুয়েন্টি যেই ফরম্যাটেই খেলি না কেন, মাইন্ডসেট পরিবর্তন করেই নিজেকে প্রস্তুত করতে হয়। 

*জাতীয় দলে আপনি ইন অ্যান্ড আউট ছিলেন বেশ কিছুদিন ধরেই... ফর্মে ভালো থাকার পর ২০১৬ সালের নিউজিল্যান্ড সফরের পর বিবেচনা করা হয়নি আপনাকে। নিজেকে কি কিছুটা আনলাকি অনুভব করেন।

- এভাবে চিন্তা করলে আসলে আমার নিজেরই ক্ষতি হয়। আমি এত কিছু চিন্তা করি না। আমার কাছে মনে হয় আমি যখন জাতীয় দলের হয়ে খেলি তখন দেশের হয়ে খেলছি, সেই ভাবনা থাকে। আর ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার সময় লক্ষ্য থাকে নিজের আত্মতুষ্টি ও দলের চাওয়া পূর্ণ করা। আমার কাছে মনে হয় আত্মতুষ্টিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যেখানেই খেলি না কেন দলের চাহিদা মত খেলতে পারলেই আমি সন্তুষ্ট।

*ডিপিএলে একটু নিচে ব্যাট করে বড় রান পেয়েছে আপনি...দলের টপ অর্ডার ফেইল করার পর। এই পজিশনে খেলতেই পছন্দ করেন আপনি নাকি উপরে খেলতে পারলে ভালো হত।

- ছয়-সাত নম্বরে ব্যাটিং করলে একটু চাপ থাকেই। আমার আগে থেকেই চাপের মুখে পারফর্ম করতে ভালো লাগে। বিষয়টা আমার কাছে চ্যালেঞ্জের মত। আলাদাভাবে এইসব নিয়ে চিন্তা করি না।  

*ইনিংস গুলো বেশ চোখ জুড়ানো ছিল।

- এখন ভালো সময় যাচ্ছে। সামনে এটা ধরে রাখার চেষ্টা থাকবে।

*অধিনায়কত্ব কেমন উপভোগ করেছেন...?

-অধিনায়কত্বে শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করছি। আগে দলের চাহিদা মত খেললেও নিজের ব্যাটিং নিয়ে চিন্তা করতাম। এখন পুরো দল নিয়েই চিন্তা করা লাগছে।

*অধিনায়কত্বের সাথে দায়িত্বও এসেছে, এটা কি নিজের ক্রিকেটে সাহায্য করছে?

-আমার মনে হয় সাহায্য করেছে। এখন বেশ উপভোগ করছি।

*আপনার ব্যাটিংটা খুবই ইউনিক। অনেক শট আছে আপনার হাতে। উইকেটের চারপাশে ৩৬০ ডিগ্রীতে খেলাটা খুব সহজাত মনে হয় আপনার। আপনি কি মনে করেন, এমন ব্যাটিং কি ন্যাচারালি আসে নাকি আপনাকে কাজ করতে হয়েছে? 

- কিছু কিছু শট আমাকে অনুশীলন করতে হয়েছে। আর কিছু খুঁটিনাটি নিয়েও কাজ করছি, করে যাচ্ছি। যেই জিনিস গুলো হচ্ছে না সেই জিনিস গুলো ঠিক করার চেষ্টা করছি। 

*শ্রীলঙ্কা সফরে একাদশে জায়গা করে সহজ হবে না। বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন।

-আমার কাছে বাংলাদেশ সবার উপরে। টিম ম্যানেজমেন্ট যেটা চাইবে সেটাই হবে। দল হিসেবে ভালো খেলাই মূল লক্ষ্য। আমার ব্যক্তিগত কোন লক্ষ্য নেই। সুযোগ পেলে সেটা কাজে লাগানোর চেস্টা করব। 

*বাংলাদেশের কেমন চান্স আসে বলে মনে করেন। 

-আমরা কয়েক বছর ধরেই ভালো খেলছি। হয়তো শ্রীলঙ্কা সিরিজে কিছুটা খারাপ সময় গিয়েছে কিন্তু সেটা ক্রিকেটের অংশ। আমরা ওভারকাম করে ভালো কিছু করার আশা রাখছি।