রামচাঁদ গোয়ালার স্মৃতি

রামচাঁদ গোয়ালার সঙ্গে স্মৃতি আছে মোসাদ্দেকেরও

সৈয়দ সামি

সৈয়দ সামি
প্রকাশের তারিখ: 20:53 শুক্রবার, 19 জুন, 2020

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট || 

বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনের পথিকৃৎ ধরা হয় রামচাঁদ গোয়ালাকে। এই সাবেক ক্রিকেটার শুক্রবার (১৯ জুন) পড়লোকে পাড়ি দিয়েছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। রামচাঁদ ৫৩ বছর পর্যন্ত ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে খেলেছেন। বাংলাদেশের ক্লাব ক্রিকেটে যা দুর্লভই বলা চলে।

নিজ শহর ময়মনসিংহে নিজ বাড়িতে দেহত্যাগ করেছেন তিনি। ময়মনসিংহের কোনো ক্রিকেটারের সঙ্গে রামচাঁদের স্মৃতি নেই, এটা প্রায় অসম্ভব। জাতীয় দলের দুই তারকা ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতদের স্মৃতিতেও জমা আছেন এই কিংবদন্তিতুল্য সাবেক ক্রিকেটার।

ময়মংসিংহের ক্রিকেটারদের আঁতুড়ঘর ধরা হয় সার্কিট হাউস মাঠকে। এই অঞ্চলের প্রায় সব ক্রিকেটারেরই ক্রিকেটে পথ চলা শুরু হয় এখান থেকে। এখান থেকেই উঠে এসেছিলেন রামচাঁদ। প্রায় দুই যুগ ঢাকার ক্রিকেট শাসনের পর আবারও তিনি ফিরে গিয়েছিলেন নিজ শহরে।

সেখানকার তরুণ ক্রিকেটারদের মধ্যে নিজের অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দিয়েছেন। মোসাদ্দেক যখন বয়সভিত্তিক দলে খেলতেন তখন রামচাঁদের সান্নিধ্য পেয়েছিলেন তিনি। তরুণ ক্রিকেটাররা তাঁর কাছ থেকে অনেক পরামর্শ পেতেন বলে জানালেন জাতীয় দলের এই স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার।

ক্রিকফ্রেঞ্জিকে মোসাদ্দেক বলেন, 'আমি যখন ছোট, তখন সেই সময়টাতে উনি আসতেন মাঠে। তখন আমি খুব সম্ভবত অনূর্ধ্ব ১৪ বা ১৬ তে খেলি। ওই সময় পর্যন্ত উনি প্রায়ই মাঠে আসতেন এবং প্রায় সময়ই আমাদের বোলিংয়ের টিপস দিতেন। ওই সময়টায় তাঁকে পেয়েছি। আমরা তাঁকে দাদা বলে ডাকতাম। আমাদের খুব আদর করতেন উনি। তাঁর অনেক অভিজ্ঞতা ভাগ করতেন আমাদের সাথে। কাদের সাথে খেলেছেন আরও বিভিন্ন কথা বার্তা হতো। সবার সাথেই উনি কথা বলতে পছন্দ করতেন।'

রামচাঁদ তাঁর জীবনের শেষভাগে বেশ একাকীত্বে ভুগেছেন। এই সময় কারো কোনো সাহায্য পাননি সাবেক এই বাঁহাতি স্পিনার। তাঁর এই অসহায়ত্ব মোসাদ্দেকের মনেও বিষাদের জন্ম দিয়েছে।

মোসাদ্দেকের ভাষ্য, 'একদিন সবারই যেতে হবে। এটা আসলে খুবই কষ্টকর বিষয়। কিন্তু শেষ সময়টাতে ওনাকে দেখার মতো কেউ ছিল না। আমরা যতটুকু শুনেছি আরকি। হঠাৎ কর একজন আমাদের মাঝখান থেকে চলে গিয়েছেন। উনি মাঠে আসতেন, ঘুরতেন, কিন্তু হয়তো কিছু বলতে পারতেন না।'

সাহায্য চেয়ে কোনো ক্রিকেটার এবং ক্লাব কর্মকর্তারা রামচাঁদের কাছ থেকে খালি হাতে ফেরেননি বলে জানালেন মোসাদ্দেক। মাঠে আসতে না পারলেও ঘরে থেকেই যতটুকু সম্ভব সাহায্য করতেন সবাইকে। 

মোসাদ্দেক বলেন, 'বয়সও হয়ে গিয়েছিল অসুস্থ্যও ছিলেন। তারপরও তিনি চেষ্টা করতেন মাঠে আসার, সবার সাথে কথা বলার। যখন আমরা কোনো সমস্যায় পড়তাম, ক্রিকেটার বলেন। ক্লাব মেম্বার বলেন, উনার কাছে সাহায্যের জন্য গেলে উনি কথা বলতেন সব সময়। মাঠে আসতে না পারলেও ঘরে বসে ওনার মতামত জানাতেন। অবশ্যই তাঁর জন্য দোয়া করি।'