Connect with us

সাক্ষাৎকার

দুঃসময়টা পার করতে জানিঃ সৌম্য


প্রকাশ

:


আপডেট

:

ছবি : ছবিঃ ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||

বাংলাদেশ দলের বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকারের প্রতিভা নিয়ে সন্দেহ করার কোন অবকাশ নেই। কিন্তু অধারাবাহিক পারফর্মেন্স বারবারই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে তাঁকে। যে কারণে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা পাওয়াও অনেক কঠিন হয়ে পড়েছিল তাঁর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটেও অধারাবাহিক পারফর্মেন্স সঙ্গী হয়ে ছিল সৌম্যর। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে নিজেকে খুঁজে পেলেন সৌম্য। টানা দুই ম্যাচে এক সেঞ্চুরি এবং একটি ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে সকলের ধারণা মিথ্যে প্রমাণ করলেন তিনি। জানান দিলেন এখনো ফুরিয়ে যাননি সৌম্য, ফিরে এসেছেন চেনা রূপে। ডিপিএলের পারফর্মেন্সে জায়গা করে নিলেন বিশ্বকাপের স্কোয়াডে। দুঃসময়টা কিভাবে পার করতে হয় শিখে গেছেন সৌম্য। নিজের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের উত্থান-পতন নিয়ে মন খুলে ক্রিকফ্রেঞ্জির সাথে আলাপ করেছেন বাংলাদেশের এই প্রতিভাবান ক্রিকেটার।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ আপনার বিশ্বকাপ প্রস্তুতি কেমন?


সৌম্যঃ আমার জন্য বিশ্বকাপের প্রস্তুতির সবচেয়ে বড় মঞ্চ ছিল সদ্য শেষ হওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল)। আমি দুশ্চিন্তায় ছিলাম কারণ প্রথম দিকে আমি চল্লিশের ঘরে আউট হয়ে যাচ্ছিলাম এবং এটা আমাকে বিভিন্ন জায়গায় উন্নতিতে উৎসাহিত করেছে যেমন আমার ফিটনেস, এমনকি আমি মেডিটেশনও করেছিলাম। এই সব দিকে আমি অনেক পরিশ্রম করেছি তবুও দ্রুত আউট হয়ে যাচ্ছিলাম। অনুধাবন করতে পারলাম আমি আউট হচ্ছি ভালো বলগুলোতে কিন্তু আমি দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম কারণ বিশ্বকাপ বেশ কাছে। আমি উল্লেখযোগ্য কিছু করতেও পারছিলাম না এবং এই কারণে আমি নিজের ওপর সন্তুষ্ট ছিলাম না। এরপর বিকেএসপিতে আমাদের লীগ ম্যাচ সম্পর্কে জানতে পেরেছিলাম এবং হঠাৎই আমার মনে পড়ে গেল সুখস্মৃতিগুলো, যেমন আমার এই মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরি। আমি ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছি এবং পরিকল্পনা সাজিয়েছি যদি আমি থিতু হতে পারি তাহলে বড় ইনিংস খেলার চেষ্টা করব। এটা আমাকে সাহায্য করেছে বিগত ব্যর্থতাগুলোকে চাপা দেয়ার ক্ষেত্রে। যখন আমি একটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছি (লিজেন্ডসের বিপক্ষে) তখন সবাই বলেছিল আমি অনেক বড় সুযোগ হাতছাড়া করেছি বড় ইনিংস খেলার, কারণ যখন আমি আউট হয়েছি তখন ২৪তম ওভার চলছিল। সকলেই বলেছিল আমার সামর্থ্য আছে বড় স্কোর গড়ার যদি আমি আমার মতো খেলি এবং সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর তৃপ্ত হতে বারণ করেছে অনেকেই। আমি পরের ম্যাচেই ২৪ ওভারের মধ্যে সেঞ্চুরি করে ফেলি এবং ধৈর্য ধরার চেষ্টা করি এবং সেঞ্চুরি অতিক্রম করার পর প্রথম থেকে খেলা শুরু করি। যখন আমি ১৫০ রানে পৌঁছাই তখন অনুভব করি এটাই আমার সেরা সুযোগ ডাবল সেঞ্চুরি করার। আমাকে তা করার চেষ্টা করা উচিত। বুঝতে পারি যদি হিসেব করে খেলি তাহলে আমি আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব। এটা আমার আত্মবিশ্বাস অনেক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।


ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল মাথা ঠাণ্ডা রাখা? আপনি যে ভালো বলে আউট হচ্ছেন, এটি বিশ্বাস করেন কতটা? 

সৌম্যঃ এটা অনেক কঠিন ছিল এই পথ অনুসরণ করা কিন্তু আমি বিশ্বাস করি এটাই ছিল আমার জন্য সবচেয়ে ভালো পন্থা। প্রথমদিকে আমি বিশ্বাস করতে শুরু করি যে আমি ভালো করছি না যখন আমি ত্রিশের ঘরে আউট হয়ে যাচ্ছিলাম। এরপর আমি আউট হওয়ার ধরণের দিকে নজর দেই। হিসেব করতে শুরু করি এবং ভাবি আমি কি বড় শট অথবা রক্ষণাত্মক খেলতে গিয়ে আউট হচ্ছি? আমি খুঁজে পেলাম আমি আউট হচ্ছি যখন বোলাররা খুব ভালো বোলিং করছে। ভালো বলে আউট হওয়া স্বাভাবিক কিন্তু এটা আমার চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল কারণ আমি হন্যে হয়ে খুঁজছিলাম কেমন বলে আমি আউট হচ্ছি। আমি খুঁজতে চেষ্টা করছিলাম আমার আউট হওয়ার পেছনের কারণ। আমি মনে করি এই পদ্ধতি আমার অনেক কাজে এসেছে।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ তাহলে কেন আপনি বারবার ব্যর্থতার কথা বলছিলেন যেখানে আপনার কোন সমস্যাই ছিল না, আপনি কি আপনার ব্যাটিংয়ের ধরণ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন?

সৌম্যঃ কারণ আমি আমার ব্যাটিংয়ের ধরণ পরিবর্তন করতে চাইনি, ডিপিএলে বারবার ব্যর্থ হওয়ার পরও এবং এমনকি এটা নিয়ে অনেক সমালোচনাও হয়েছিল। আমার ক্যারিয়ারে যখনই  সুযোগ পেয়েছি একই প্রচেষ্টা নিয়ে ব্যাটিং করেছি এবং আমার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই এই ক্ষুধা আমার ভেতর বিরাজমান ছিল। আমি সবসময় আমার মতো করে রান তুলতে চেষ্টা করি। যদি আমি টিকে থাকার চেষ্টা করি তাহলে হয়ত আমি সেঞ্চুরি পাব, কিন্তু সেটা ৪০ ওভারে এসে।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ আপনি কি বিস্তারিত বলতে পারবেন ওয়াসিম জাফর আপনাকে কিভাবে সাহায্য করেছে ঐ সময়টায়। ডিপিএলে দুটি গুরুত্বপূর্ণ সেঞ্চুরি হাঁকানোর আগে আপনি একা একা ওনার সাথে কিছু দিন কাজ করেছিলেন। সেটা আসলে কি নিয়ে? 

সৌম্যঃ আমি তাঁর কাছ থেকে কিছু নতুন টেকনিক শেখার চেষ্টা করেছি কারণ তিনি তাঁর ক্যারিয়ারে অনেক রান করেছেন এখন পর্যন্ত। তাঁর সাথে থেকে শেখার চেষ্টা করেছি তিনি তাঁর ইনিংস নিয়ে কিভাবে পরিকল্পনা করেন এবং কি উপায়ে তাঁর ইনিংসকে গুছান। কারণ তাঁর ব্যাটিংয়ের ধরণ আমার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। সকলেই নিজস্ব ব্যাটিং করে থাকে কিন্তু আমি তাঁর ব্যাটিংয়ের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটা বুঝতে চেষ্টা করেছি। আমার যেটা ভালো লেগেছে তিনি আমাকে কখনও তাঁর ব্যাটিংয়ের ধরণ নিয়ে আমাকে উপদেশ দিতেন না। কিন্তু আমাকে পরামর্শ দিতেন কিভাবে আমি এখান থেকে উন্নতি করতে পারি। তিনি আমার ব্যাটিং বেশ কিছুদিন থেকেই খুব কাছ থেকে দেখছিলেন। 

যখন আমি ২৪তম ওভারে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছি তখন আমি কিছুটা মন্থর হয়ে গিয়েছিলাম। তখনই তিনি আমাকে পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন আমি সব সময় একই ধারায় ব্যাটিং করে যেতে পারব না, সেই সময় কিছু ছোট জিনিস মানিয়ে নিতে হবে বিশেষ করে ইনিংসের মাঝে। আর এটা আমাকে সাহায্য করবে আগ্রাসী এবং সতর্কতার মাঝে ভারসাম্য বজায় রাখতে। কোন প্রয়োজন নেই আগ্রাসী ব্যাটিং করার যখন ঠাণ্ডা মাথায় ব্যাটিং করে লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়। আমি শুধু একটি উদাহরণ দিয়েছি, তিনি আমাকে আরও অনেক পরামর্শ দিয়েছিলেন। আমি তাঁর দেয়া পরামর্শগুলো মনে রেখেছি এবং যখন প্রয়োজন হয়েছে তখন কাজে লাগিয়েছি।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ২০১৫ বিশ্বকাপে তরুণ ক্রিকেটার হিসেবে খেলেছিলেন, বিশ্বকাপের ম্যাচ ছিল আপনার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচ, সেই বিশ্বকাপে আপনার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

সৌম্যঃ এটা আমার জন্য রোমাঞ্চকর ছিল। কিছুদিন পূর্বেই ক্যারিয়ার শুরু করেছিলাম এবং আকস্মিকভাবে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ডাক পাই। সত্যিই আমার জন্য অনেক বড় টুর্নামেন্ট ছিল। সেই সময় বিশাল দর্শকের সামনে খেলা এবং চাপের মাঝে খেলা আমার জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এবার বিষয়টি ভিন্ন কিন্তু আমি সেই অনুভুতিটি আমার ভেতর রাখতে চাই কারণ এটা আমার ভেতরের উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয় এবং সামনে এগোতে সাহায্য করে।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যথাক্রমে ৪০ এবং ৫১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। কোন ইনিংসটি আপনাকে বিশ্বাস যুগিয়েছে এটা ভাবতে যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আপনি একজন ভালো মানের ক্রিকেটার?

সৌম্যঃ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রভাব খাটানো ইনিংস খেলেছিলাম কিন্তু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা ৪০ রানের ইনিংসটি আমাকে সাহায্য করেছে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর ক্ষেত্রে। কারণ সেই ইনিংসটি খেলার আগে আমার মাথায় অনেক কিছুই কাজ করছিল কেননা ক্রিকেটে শক্তিমত্তায় এগিয়ে ছিল ইংল্যান্ড।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ এই বিশ্বকাপে আপনার ভূমিকা কি এবং কোথায় আপনি ব্যাট করতে পছন্দ করবেন?

সৌম্যঃ টপ অর্ডার এবং লোয়ার অর্ডারে ব্যাটিং করা দুইটাই ভিন্ন। আমি সব জায়গায়ই আমার সেরাটা খেলার চেষ্টা করব। আমার পরিকল্পনায় আমি সংকল্পবদ্ধ থাকতে চেষ্টা করব। যদি আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যাই তাহলে সেটা হবে ভিন্ন, আবার যদি আপনি একটা লক্ষ্য দিয়ে দেন তাহলে তখন বিষয়টা ভিন্ন। মূল কথা হচ্ছে আমি চেষ্টা করব দল যা চায় সেটা করার।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ যখন আপনি খেলায় কোন সমস্যার সম্মুখীন হন তখন কার শরণাপন্ন হন অথবা কোথায় যান? 

সৌম্যঃ আমি আমার পরিবারের সাথে থাকতে চেষ্টা করি কারণ তাঁরা আমাকে বেশি অনুপ্রেরণা যোগায়। তাঁরা সবসময় ইতিবাচক কথাই বলে। আমি বিকেএসপি তে বিশু স্যারের (আখিনুর রহমান) কাছে যাই এবং তিনি আমাকে সাহায্য করেন খারাপ জিনিস থেকে বেরিয়ে আসতে। মনে করিয়ে দেন ইন্সটিউটে থাকাকালীন সময়ের আমার স্মৃতিগুলো, যখন আমি খেলা শেখার জন্য নাম লিখিয়েছিলাম। বিশু স্যার আমাকে উপদেশ দেন নিজেই নিজের সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করতে।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ এখন ৩০০ রান করা খুবই সহজ, আপনি কিভাবে এর সাথে মানিয়ে নিবেন? কারণ আপনি বাংলাদেশকে ৩০০ রান এনে দেয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারবেন। 

সৌম্যঃ প্রথমত আপনাকে মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে যে আমি পারব ৩০০ রান তাড়া করতে। এই না যে আপনাকে প্রথম ওভার থেকেই মারতে হবে, আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে। রান করার জন্য বোলার নির্বাচন করতে হবে, তাহলে সবকিছু সহজ হয়ে যাবে। মাঝে মধ্যে একজন বোলার খুব ভালো বোলিং করেন, তাই বোলার নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ মানকড় আউটকে আপনি কিভাবে দেখেন? সায়মন টফেল বলেছেন এটা খেলার মূলনীতির বিরোধী, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে আপনি এমনটা করেছিলেন?

সৌম্যঃ এটা খেলার একটি অংশ। সত্যি কথা বলতে আমি ইচ্ছা করে এমন করিনি। আমি শুধু সতর্ক করতে চেয়েছিলাম। ম্যাচের পরিস্থিতি আমাকে সেই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছিল। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমগুলো বিষয়টি বেশি প্রাধান্য দিয়েছে বলে আমি মনে করি।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ আপনার বোলিং কেমন চলছে? কেমন কাজ করছেন বোলিংয়ের ওপর? যদিও আপনি জোরে বল করেন না তবে ভালো বল করেন। স্পিন বোলিংয়ে চলে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা আছে?

সৌম্যঃ যখনই সুযোগ আসে বোলিং করার চেষ্টা করি। অধিনায়কের যখন আমাকে প্রয়োজন হবে তখনই যেন সুযোগটি লুফে নিতে পারি এর জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকি। আমি হাতেগোনা কয়েকটি ম্যাচে বোলিংয়ের সুযোগ পেয়েছি, যার ফলে আমি চাপে বোলিং করার ক্ষেত্রে উন্নতি করে পেরেছি। আমি সামনের সময়ে চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। 

আমি আমার বলে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টায় আছি এবং লাইন ও লেন্থ বজায় রাখার চেষ্টা করছি। যদিও ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে অনেক বেশি কিছু চেষ্টা করা হিতে বিপরীত হতে পারে। আমি নিশ্চিত প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা একটি চিন্তা নিয়ে খেলতে আসবে যে আমি একই গতির বল করতে যাচ্ছি, কিন্তু তাঁদের মস্তিষ্ক নিয়ে খেলে ভালো কিছু করতে হবে। তাই আমি বৈচিত্র্যে কোন কমতি রাখছি না, যেহেতু আমার গতি কম। কিন্তু স্পিনার হিসেবে আমি কখনও নিজেকে ভাবিনি।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ বাংলাদেশ যখন পাকিস্তান, ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২০১৫ বিশ্বকাপের পরপরই হারিয়েছিল তখন আপনি রান করেছিলেন। সেই সময়ের অনুভুতি কেমন ছিল?

সৌম্যঃ মনে রাখার মতো একটি সময় ছিল এবং সম্ভবত আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ভালো অংশ ছিল। সহজাত ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে অধিনায়কের সমর্থন সবসময় পেয়েছি এবং সম্ভবত এটাই আমাকে সাহায্য করেছে রান করার জন্য। কিন্তু এরপরই আমি ফর্ম হারিয়ে ফেলি কিন্তু তাঁরা আমার উত্থান পতনে আমাকে সমর্থন করেছে।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ কিভাবে এতবছর যশ-খ্যাতি মানিয়ে চলেছেন? কি পরিবর্তন আসছে জীবনে যখন আপনি বিখ্যাত হলেন? কি অর্জন করেছেন, কি হারিয়েছেন, ইত্যাদি, তেমন কিছু মনে আছে?

সৌম্যঃ আমার মনে হয় যশ-খ্যাতি নিয়ে আমার সমস্যা নেই। যদিও স্বল্প সময়ের ক্যারিয়ারে মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ দুটোই দেখা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি ভিড়ের মাঝেও যদি আমি সকলের পরিচিত হয় তাতেও আমার মাঝে কোন পরিবর্তন আসবে না।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ কিভাবে অনলাইন ট্রলগুলোর সাথে মানিয়ে নেন? কিসের সাথে মানিয়ে নিতে সমস্যায় পড়তে হয়?

সৌম্যঃ কিছু বলতে চাই না এ নিয়ে।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ২০১৫ থেকে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ যাত্রাটা কেমন ছিল? দলের মনোভাব কেমন বিশ্বকাপের জন্য? এই বিশ্বকাপে নিজেদের আন্ডারডগ ভাবেন?

সৌম্যঃ অবশ্যই আন্ডারডগের খ্যাতি নিয়ে আমরা এবার বিশ্বকাপের মঞ্চে মাঠে নামছি না। কারণ ২০১৫ সালের পর অনেক পথ পাড়ি দিয়েছে দলটি। এটা আমাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছে যে নিজেদের যোগ্যতা মত খেলতে পারলে আমরা আমাদের দিনে যে কোন দলকে হারিয়ে দিতে পারি। 

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ কবে থেকে ক্রিকেট খেলা শুরু করেছেন? কোন বাংলাদেশি ক্রিকেটার এবং বিদেশি ক্রিকেটার আপনাকে অনুপ্রাণিত করেছে? লারা-গাঙ্গুলিকে দেখা প্রথম স্মৃতি এবং তাঁদের কোন বিষয়টি থেকে প্রভাবিত হয়েছিলেন? 

সৌম্যঃ ব্রায়ান লারা এবং সৌরভ গাঙ্গুলির খেলা দেখে বড় হয়েছি। প্রথমে যখন ক্রিকেট খেলা শুরু করি আমি একজন ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিলাম। কিন্তু তাঁদের খেলা এবং ড্রাইভগুলো দেখার পর সিদ্ধান্ত নিলাম নিজেকে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে গড়ে তোলার। এই কারণেই আমি এখনো ডানহাতে থ্রো করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এমনকি আমি ডানহাতি বোলারও। যুবরাজ সিং এবং সাকিব আল হাসানকে খুব অনুকরণ করি, তাঁদের লড়াকু মনোভাব আমাকে উৎসাহ দেয়।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার বিষয়ে পরিবারের সমর্থন কতটুকু ছিল? ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিবারের মাঝে সংশয় ছিল কিনা? পিতা মাতার ভূমিকা, তাঁদের অবদান, ত্যাগ এবং ভাই বোনের ভুমিকা?

সৌম্যঃ নিজের ক্রিকেট যাত্রায় কোন বাঁধার সম্মুখীন হই নি, পরিবারের পক্ষ থেকে তো আরও নয়। ছোট থেকেই তাঁরা আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। যখন আমি ২০০৫ সালে ক্রিকেট খেলা শুরু করি এবং এরপর বিকেসপিতে যোগ দেই তখন থেকেই। সেখানকার বয়সভিত্তিক দলের সঙ্গে থেকে পড়াশোনা শেষ করি। এর কয়েক বছর পরই আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় আমার সিনিয়রদের দলে। বিকেএসপিতে কাটানো ছয় বছর আমাকে এখন পর্যন্ত এই যাত্রায় অনেক সাহায্য করেছে। সত্যি বলতে শুরুর থেকে ক্রিকেটার হওয়ার জন্য এত ইচ্ছা ছিল না কারণ আমি বাড়ির জন্য অনেক পাগল ছিলাম। যখন বিকেসপিতে ভর্তি হই তখন অনেক কষ্ট হয়েছে পরিবার থেকে দূরে থাকতে।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ দুর্গা পূজার স্মৃতি এবং ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ততা?

সৌম্যঃ তেমন কিছু মনে নেই।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ক্যারিয়ারের বাজে সময় গুলো কিভাবে পার করেছেন? নিজেকে নিয়ে নিজের ভিতরে থাকা সন্দেহগুলো কিভাবে দূর করেছেন?

সৌম্যঃ ২০১৫ বিশ্বকাপ এবং তাঁর পর কিছু সময় অনেক ভালো সময় কাটিয়েছিলাম। কিন্তু এরপরই বাজে সময়ের সম্মুখীন হতে হয়েছিল আমাকে। কোন কিছুই ঠিক যাচ্ছিল না। কিন্তু সেই সময় মনে হয়েছে একা থাকার চেয়ে অভিজ্ঞ বা সিনিয়রদের কাছ থেকে পরামর্শ নেয়াটা বেশী উপকারি হবে। যখন আমি আমার আপনজনদের সঙ্গে থাকি তাঁরা নিশ্চিত করে কিভাবে আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়া যায়। তাঁরা কখনও আমার ভুল ত্রুটি নিয়ে কথা বলা বা আমার ভুল ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন না। 

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ রান তাড়ার ক্ষেত্রে আপনার অভিমত কি? কোহলি বলেছিলেন এটা নির্ভর করে কতগুলো ওভার বাকি আছে তার ওপর, বলের ওপর নয়। যা কোহলির জন্য রান তাড়া সহজ করে দেয়। আপনার কি সেইরকম চিন্তা ভাবনা?

সৌম্যঃ আমি মনে করি লক্ষ্যের দিকে তাকানোর চেয়ে যদি আমরা ১০ ওভার করে পরিকল্পনা করি তাহলে একটা সময় সহজ হয়ে যাবে লক্ষ্য।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে কিভাবে স্মরণীয় করে রাখতে চান? 

সৌম্যঃ এখনো এ বিষয়ে চিন্তা করিনি।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ বিশ্বকাপে কেমন উইকেটের প্রত্যাশা?

সৌম্যঃ আমি মনে করি উইকেটগুলো স্পোর্টিং হবে। যেখানে বোলার এবং ব্যাটসম্যান উভয়ের জন্যই সুবিধা থাকবে।

ক্রিকফ্রেঞ্জিঃ বিশ্বকাপে আপনার লক্ষ্য কি?

সৌম্যঃ শুধু দলের চাহিদা পূরণ করা।

সর্বশেষ

১ ডিসেম্বর, শুক্রবার, ২০২৩

সৌম্যকে দলে নেয়ার কারণ জানালেন বাশার

১ ডিসেম্বর, শুক্রবার, ২০২৩

টেস্ট খেলার আশা ছাড়েননি ম্যাক্সওয়েল

১ ডিসেম্বর, শুক্রবার, ২০২৩

টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ আয়োজন থেকে সরে দাঁড়ালো ডমিনিকা

১ ডিসেম্বর, শুক্রবার, ২০২৩

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ডাওরিচের আচমকা অবসর

১ ডিসেম্বর, শুক্রবার, ২০২৩

তাইজুলের ঘূর্ণিতে দিশাহারা নিউজিল্যান্ড

১ ডিসেম্বর, শুক্রবার, ২০২৩

ফিরলেন স্যামসন, ওয়ানডে দল থেকে বাদ সূর্যকুমার

৩০ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার, ২০২৩

‘শান্ত ভালো লিডার, নেতৃত্বের ভেতরের জিনিসগুলো বুঝে’

৩০ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার, ২০২৩

নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ দলে সৌম্য, নতুন মুখ রিশাদ-রাকিবুল

৩০ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার, ২০২৩

শান্তকে নিয়ে রাতে ভেবে ছক কষবে নিউজিল্যান্ড

৩০ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার, ২০২৩

৫ রান জরিমানা শুনে মুমিনুল বললেন, তাহলে বড় ইস্যু

আর্কাইভ