লক্ষ্ণৌর সমীকরণ কঠিন করে টিকে রইল দিল্লি

ছবি:

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
৪৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর কিছুক্ষণ পর ফিরলেন আয়ুষ বাদোনিও। তরুণ এই ব্যাটারের বিদায়ে ৭১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস। সফরকারীরা কত দ্রুত হারবে এটা ভেবে সময় দেখায় ব্যস্ত সবাই। তবে সবার আসা-যাওয়ার মিছিলে লক্ষ্ণৌর আশার প্রদীপ হয়ে রইলেন নিকোলাস পুরান। খেললেন ২৭ বলে ৬১ রানের ঝড়ো ইনিংস। পুরান যখন ফিরলেন লক্ষ্ণৌ তখনও জয় থেকে ১০৮ রান দূরে। বিশেষ ব্যাটার হিসেবে কেউ না থাকায় ক্রুনাল পান্ডিয়া ছিলেন ভরসার নাম। তবে লক্ষ্ণৌকে আশা দেখাতে পারেননি ক্রুনাল।
যদিও সমীকরণ বদলে যেতে থাকে আরশাদ খানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে। বল হাতে খরুচে আরশাদ নিয়েছিলেন ১ উইকেট। সেটা যেন পুষিয়ে দিয়েছেন ব্যাটিংয়ে। সফরকারীদের হয়ে খেলেছেন আইপিএলে ক্যারিয়ার সেরা ৩৩ বলে ৫৮ রানের ইনিংস। এমন ব্যাটিংয়ের পরও লক্ষ্ণৌকে জেতাতে পারেননি আরশাদ। দিল্লির কাছে ১৯ রানের হারে প্লে-অফে যাওয়ার সমীকরণ আরও কঠিন হলো লোকেশ রাহুলের দলের জন্য। এদিকে লক্ষ্ণৌকে হারিয়ে এখনও প্লে-অফের দৌড়ে টিকে রইল পান্তের দিল্লি। যদিও বাস্তবিক অর্থে তাদের সেরা চারে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ২০৯ রান তাড়ায় লক্ষ্ণৌর শুরুটা হলো ইনিংসের প্রথম ওভারে লোকেশ রাহুলের উইকেট হারিয়ে। ইশান্তর অফ স্টাম্পের বাইরের গুড লেংথ ডেলিভারিতে কভার পয়েন্ট দিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন ডানহাতি এই ওপেনার। তবে শেষ মুহূর্তে নিজেকে সরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা চালালেও শেষ পর্যন্ত বল ব্যাটে আসতেই লিডিং এজ হয়ে ধরা পড়েন মুকেশের হাতে। আগের ম্যাচে ধীরগতির ব্যাটিংয়ের জন্য সমালোচনার মুখে পড়া রাহুল দিল্লির বিপক্ষে ফিরেছেন ৫ রানে।
আরেক ওপেনার কুইন্টন ডি ককও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ইশান্তর স্টাম্প টু স্টাম্প ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে মিড অনের উপর দিয়ে খেলতে গিয়ে মুকেশের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১২ রান করা প্রোটিয়া এই উইকেটকিপার ব্যাটার। তিনে নামা মার্কাস স্টইনিস ফিরেছেন পরের ওভারে। অক্ষর প্যাটেলের ষষ্ঠ স্টাম্পের ডেলিভারিতে উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন অজি এই ব্যাটার। তবে ব্যাটে বলে করতে না পারায় পান্তের দক্ষতায় স্টাম্পিং হয়ে ফিরেছেন ৫ রানে। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে সাজঘরের পথে হেঁটেছেন দীপক হুদাও।
নিজের খেলা দ্বিতীয় বলেই লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন রানের খাতা খুলতে না পারা এই ব্যাটার। ট্রিস্টিয়ান স্টাবসের বলে গুলবাদিন নাইবকে ক্যাচ দিয়ে আয়ুষ বাদোনি আউট হলে ৭১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে লক্ষ্ণৌ। সেখান থেকে সফরকারীদের টেনে তোলার চেষ্টা করেন ২০ বলে হাফ সেঞ্চুরি করা পুরান। যদিও পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর ইনিংস আর বড় করতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারকুটে এই ব্যাটার। মুকেশের অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের ডেলিভারিতে খেলতে গিয়ে অক্ষরের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৬১ রান করা পুরান।
দ্রুত রান তোলার প্রয়োজন হলেও সেটা করতে পারেননি ক্রুনাল। কুলদীপ যাদবের ষষ্ঠ স্টাম্পের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হয়েছেন ১৮ বলে ১৮ রান করা বাঁহাতি এই ব্যাটার। শেষ দিকে আরশাদের ৫৮ রানের ইনিংস কেবল লক্ষ্ণৌর হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। দিল্লির হয়ে এদিন বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন ইশান্ত, ৩৪ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। এ ছাড়া একটি করে উইকেট নিয়েছেন স্টাবস, খলিল আহমেদ, অক্ষর, মুকেশ ও কুলদীপ।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি দিল্লির। দারুণ ছন্দে থাকা জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক ফিরেছেন রানের খাতা খোলার আগেই। তবে দ্রুত রান তুলতে থাকেন অভিষেক পোরেল ও শাই হোপ। ৩৮ রান করেছেন হোপ এবং হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া পোরেলে আউট হয়েছেন ৫৮ রানে। শেষ দিকে পান্ত ৩৩ এবং স্টাবস মাত্র ২৫ বলে ৫৭ রানের ইনিংস খেললে ২০৮ রানের পুঁজি পায় স্বাগতিকরা। লক্ষ্ণৌর হয়ে দুটি উইকেট পেয়েছেন পেসার নাভিন উল হক।