‘গড়পড়তা বোর্ড, গড়পড়তা দল ও পাকিস্তানের লজ্জাজনক ফল’

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

বেন স্টোকস,ডেভিড মালান বা জেমস ভিন্স ছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার অভিজ্ঞতা তেমন কারও ছিল না। ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে অনেকের ধারণা ছিল হেসে-খেলেই সিরিজ জিতবে পাকিস্তান। কিন্তু সপ্তাহখানেকের মধ্যে বদলে গেল সবার ধারণা। উল্টো ইংল্যান্ডের 'বি' অথবা 'সি' দল যেটাই বলা হোক না কেন, সেটার কাছেই হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাবর আজমের দল। 

প্রথম দুই ম্যাচে পাকিস্তান সেভাবে লড়াই করতেই পারেনি। তৃতীয় ম্যাচে মঙ্গলবার ৩৩২ রানের বড় স্কোর গড়ে অন্তত একটা জয়ের আশা তারা জাগায়। কিন্তু ১৬৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়েও শেষ পর্যন্ত অসাধারণ রান তাড়ায় জিতে যায় ইংল্যান্ড। যার পেছনে অন্যতম নায়ক ছিলেন জেমস ভিন্স। 

দলের এমন হারের পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতার। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে শোয়েব কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন পাকিস্তানের বোর্ডকে। তার মতে, বোর্ডের কারণেই সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় এত দুর্বলতা।

শোয়েব বলেন, 'লজ্জাজনক পারফরম্যান্স এটি। আমাদের বোর্ড গড়পড়তা। তারা গড়পড়তা লোকদেরই নিয়ে আসে। ম্যানেজমেন্ট তো অবশ্যই গড়পড়তা। কাজেই তারা গড়পড়তা দলই গড়বে। গড়পড়তা লোকজনের কাছ থেকে অসাধারণ কিছু আশা করা যায় না। তাদের কাছে প্রত্যাশা করাই ভুল। এই ইংল্যান্ড দল কেন আমাদের চেয়ে এত ভালো করছে?'

'কারণ আমাদের মানসিকতা হলো, দুটি উইকেট পড়লে ধীরেসুস্থে ব্যাট করে জুটি গড়া ও পরে দেশ ১০ ওভারে আগ্রাসী খেলা। এটা তো সত্তুরের দশকের ক্রিকেট। ইংল্যান্ডের মানসিকতা হলো, ৪০ ওভারে অলআউট হলেও ৩০০ করবে। ইংল্যান্ডের প্রতিটি ব্যাটসম্যান উইকেটে গিয়েই রান তোলে। তার মানে এই নয় যে তারা স্লগ করছে। মেথডিকাল হিটিং করে তারা, এক-দুই নিয়ে রান বাড়ায়। আমরা সত্তুরের দর্শকের ক্রিকেট খেলছি কারণ আমাদের মানসিকতা এরকমই। আমরা উন্নতি করতে চাই না।'

ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশের পর সামনে রয়েছে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। স্কোয়াড না ঘোষণা করলেও সেখানেও হয়তো ইংল্যান্ডের ওয়ানডে স্কোয়াডের ক্রিকেটাররাই খেলবেন। আর বাবরদের এমন হারের পর শোয়েব আরও জানিয়েছেন, পাকিস্তান দলে কোন তারকা নেই। 

যা পাকিস্তান ক্রিকেটের একটি সঙ্কট বলে মনে করেন সাবেক এই ক্রিকেটার। শোয়েব বলেন, 'লোকে খেলা দেখতে মাঠে আসছে। কিন্তু এই ধরনের পাফরম্যান্সের পর দর্শক কখনোই বাড়বে না। তরুণদের প্রেরণা জোগানোর মতো তারকাই তো নেই। তাহলে পরবর্তী শোয়েব আখতার, শহিদ আফ্রিদি, ওয়াসিম আকরাম কোত্থেকে আসবে? ব্র্যান্ড গড়ে তুলতে হবে।'

'পাকিস্তান ক্রিকেট খুব বাজে অবস্থায় আছে। আমার চাকরি প্রয়োজন বলে বকবক করছি না। এসব বলছি, কারণ আমি আহত হয়েছি। দেশের হয়ে এই খেলাটা আমি খেলেছি। আমি মাঠে ছুটেছি এটার জন্য, লোকের যেন পয়সা উসুল হয় এবং সেটা হয়েছেও। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এখন এই দল আমাকে সেই তৃপ্তি দিচ্ছে না। এই অবস্থা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, অপ্রত্যাশিত। এসব খতিয়ে দেখা দরকার।'