শচীনের মন্ত্রে পৃথ্বীর রেকর্ডময় মৌসুম
ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
বিসিসিআইয়ের বিশেষ সম্মাননা পেলেন টেন্ডুলকার
২ ফেব্রুয়ারি ২৫
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে শূন্য এবং দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৪ রান করেছিলেন পৃথ্বী শ। ফলে দ্বিতীয় টেস্টের একাদশ থেকে জায়গা হারাতে হয়েছিল তাঁকে। এমন হতাশাজনক পারফরম্যান্সের কারণে ভেঙে পড়েছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।
অস্ট্রেলিয়ায় প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলেও বিজয় হাজারে ট্রফিতে ব্যাট হাতে রেকর্ড ভাঙা-গড়ায় ব্যস্ত ২১ বছর বয়সি এই ব্যাটসম্যান। ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকারের পরামর্শেই এমন সাফল্য পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ভারতের ঘরোয়া ৫০ ওভারের বিজয় হাজারে ট্রফিতে এখন পর্যন্ত ৭ ইনিংসে ১৮৮.৫০ গড়ে ৭৫৪ রান করেছেন পৃথ্বী। যা টুর্নামেন্টটির ইতিহাসে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। এর আগে ২০১৭-১৮ মৌসুমে ৮ ইনিংসে ৩ সেঞ্চুরিতে সর্বোচ্চ (সেই সময়ের) ৭২৩ রান করেছিলেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল।

চলতি আসরে এখন পর্যন্ত ৪টি সেঞ্চুরি করেছেন পৃথ্বী। কোয়ার্টার-ফাইনালে জয়ের জন্য খেলতে নেমে ১২৩ বলে অপরাজিত ১৮৫ রান করেছিলেন তিনি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে রান তাড়া করার ক্ষেত্রে ভারতের ব্যাটসম্যানদের মাঝে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এটি। যেখানে তিনি পেছনে ফেলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি ও বিরাট কোহলিকে।
সাফল্যের পেছনের গল্প বলতে গিয়ে পৃথ্বী বলেন, ‘আমি কারও সঙ্গে কথা বলিনি, অনেক কল পাচ্ছিলাম কিন্তু মানুষের সঙ্গে কথা বলার মতো মনমানসিকতা ছিল না। আমার মন কেমন জানি হয়ে গেলো। আমার ব্যাট জায়গা থেকে নেমে এসেছিল তবে আমি সারাজীবন এভাবেই রান করেছি। সমস্যাটি ছিল আমি যেভাবে বেড়িয়ে আসছিলাম এবং আমাকে সমস্যাটি দ্রুতই ঠিক করতে হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ফিরে আসার পর শচীন স্যারের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। সে বলেছিলেন যে খুব বেশি পরিবর্তন করতে হবে না কেবল শরীরের কাছাকাছি খেলো। আমি দেরি করতেছিলাম (শট খেলতে)। সুতরাং আমি পুরো অস্ট্রেলিয়া সফরে সেই অংশে কাজ করেছি। দুবাইতে আইপিএল খেলার পর অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলাম বলেই হয়তো এমনটা হয়েছিল।’
অস্ট্রেলিয়া সফরের খারাপ অভিজ্ঞতার কথা নিয়ে পৃথ্বী বলেন, ‘মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্সের ভেতরে আসা বলে আউট হয়েছিলাম এটা সবাই দেখেছে। তবে আমি কিন্তু এত খারাপ ব্যাটসম্যান নই। আসলে আমার ‘ব্যাক লিফ্ট’ ঠিক থাকলেও শরীরের অনেক দূর থেকে খেলছিলাম। তাই সমস্যা হয়েছিল। নেটে গিয়ে ভুলগুলো শুধরেও নিয়েছি। সেই সময় রবি (শাস্ত্রী) স্যার আমার সঙ্গে কথাও বলেছিলেন। কিন্তু নিজেকে আটকাতে পারছিলাম না। ঘরের এক কোণায় গিয়ে আয়ন???র সামনে দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করতাম।’
এখন জাতীয় দলে না থাকলেও সহজেই হাল ছাড়ছেন না পৃথ্বী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি কখনই সহজে হাল ছাড়ি না। আমি বিরারের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছি। আমি জানি কিভাবে ফিরে আসতে হয়। আমি সবসময় আমার দলকে উপরে রেখেছি। সেটা ক্লাব, মুম্বাই কিংবা ভারত। আপনি যদি আমাকে ১০০ বলে ১ রান করতে বলেন তাহলে আমি চেষ্টা করতে পারি। কিন্তু আমি তো তেমন নই আর আমার খেলাও তেমন নয়। আমি সেভাবে খেলতে পারি না। আমি অস্ট্রেলিয়ায় যেমন ছিলাম তেমন অবস্থায় কখনই পড়িনি। তবে আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি। এটি সমাধানের জন্য নেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যয় করেছি।’