হোল্ডস্টকের টিভি আম্পায়ারিং, স্যামির ‘সন্দেহ’ এবং স্টার্কের স্বীকারোক্তি

ছবি: রস্টন চেজের বিপক্ষে লেগ বিফোর উইকেটের আবেদন করছেন প্যাট কামিন্স

বার্বাডোজ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ট্রাভিস হেড হাফ সেঞ্চুরি করলেন, উসমান খাওয়াজাও পঞ্চাশ ছোঁয়ার খুব কাছে গেলেন। তবুও সফরকারী অস্ট্রেলিয়াকে থামতে হয়েছে মাত্র ১৮০ রানে। উইকেট থেকে পাওয়া সিম মুভমেন্ট ও বাড়তি বাউন্সে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের নাজুক অবস্থা করেছেড়েছেন শামার জোসেফ ও জেইডেন সিলস। ব্যাটিংয়ে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজেরও একই দশা। অস্ট্রেলিয়ান পেসে গুঁড়িয়ে গেল টপ অর্ডার।
পুরানের মতো আরও ক্রিকেটার ভুল পথে পা বাড়াবেন, ধারণা স্যামির
১১ জুন ২৫
রস্টন চেজ ও শাই হোপ ধাক্কা সামালের চেষ্টা করলেও ক্যারিবীয়দের থামতে হয়ে ১৯০ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে আবারও বিপাকে পড়ে অস্ট্রেলিয়াও। ৯২ রান করতেই নেই ৪ উইকেট। বার্বাডোজের প্রথম দুদিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়া মিলে হারিয়েছে ২৪ উইকেট। নাথান লায়নের একটি বাদ দিলে বাকি সবগুলোই নিয়েছেন দুই দলের পেসাররা। স্বাভাবিকভাবেই প্রথম টেস্টের হেডলাইন হওয়ার কথা ছিল আগুনে পেস বোলিংয়ে বার্বাডোজে স্বল্প রানের থ্রিলার। অথচ দ্বিতীয় দিন শেষে হেডলাইনের সবটা জুড়ে কেবলই টিভি আম্পায়ারিং।
চেজ এবং হোপের সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ঘটনাটা ঘটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসের ৫০তম ওভারে। কামিন্সের দারুণ এক ডেলিভারিতে চেজকে লেগ বিফোর উইকেট দেন কেটেলবরো। তবে বল ব্যাটে লেগেছে এমন ভাবনা থেকে তাৎক্ষণিকভাবে রিভিউ নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক। টিভি আম্পায়ার হোল্ডস্টক জানান, ব্যাট ও বলের মাঝে ফাঁকা আছে। আলস্ট্রা এজে বড় কোন স্পাইক না পাওয়া গেলেও ছোট দুটি স্পাইক দেখা যায়। তাতেই চেজ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের দাবি বল ব্যাটে লেগেছে।

ডানহাতি ব্যাটারের আউট নিয়ে স্যামি বলেন, ‘আমাদের মতে, বলটি প্যাডে লাগার আগে ব্যাটে লেগেছিল, কারণ, আমরা বলের (গতিপথের) বিচ্যুতি দেখেছি।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের অসন্তুষ্টি আছে হোপের আউট নিয়েও। বাউ ওয়েবস্টারের ভেতরে ঢোকা বল ব্যাটের কানায় লেগে পেছনে গেলে দারুণ এক ক্যাচ লুফে নেন অ্যালেক্স ক্যারি। ক্যাচ ধরে মাটিতে পড়ার সময় বল ঘাস ছুঁয়ে কিনা এমন প্রশ্ন তোলা হয়। যদিও হোপকে আউট দেন হোল্ডস্টক। এমন সিদ্ধান্তের পর ড্রেসিংরুমে বসেই হতাশা প্রকাশ করেন স্যামি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের লিডের পর আবারও বিপাকে অস্ট্রেলিয়া
৭ ঘন্টা আগে
দিনের খেলা শেষে হোল্ডস্টককে ইঙ্গিত করেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান কোচ। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, দেখুন, আপনি এমন অবস্থায় যেতে চান না, যেখানে নির্দিষ্ট কোনো আম্পায়ারকে নিয়ে সন্দেহ জন্মায়। তবে যখন একের পর এক সিদ্ধান্ত একই দলের বিপক্ষে যায়, তখন প্রশ্ন ওঠেই। আমি জানি, উনি (হোল্ডস্টক) এই সিরিজের জন্য এখানে আছেন। কিন্তু আপনি কোনো টেস্ট ম্যাচে এমন সন্দেহ নিয়ে যেতে চান না।’
স্যামি মনে করেন একই পরিস্থিতি দুই দলের জন্য দুইরকম সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন টিভি আম্পায়ার। তিনি বলেন, ‘আমি শুধু বলছি, আপনি যা দেখছেন, তাই বিচার করুন। যদি দুটি একই রকম পরিস্থিতি হয় আর একটি আউট না হয়—তাহলে অন্যটিকে আউট দেওয়া আরও বেশি সন্দেহের জন্ম দেয়। আমি জানি না উনি (হোল্ডস্টক) কী দেখেছেন, তবে আমরা যে চিত্র দেখেছি, তাতে সিদ্ধান্তগুলো দুই দলের জন্যই সমান ন্যায্য মনে হয়নি। আমরা সবাই মানুষ, ভুল হবে। আমি শুধু চাই ন্যায্যতা।’
স্টার্কও অভিযোগ করেছেন তাদের বিপক্ষেও একটি সিদ্ধান্ত গেছে। হ্যাজেলউডের করা ইনিংসের ২১তম ওভারে চেজের বিপক্ষে লেগ বিফোর উইকেটের আবেদন করেছিল অস্ট্রেলিয়া। অনফিল্ড আম্পায়ার আউট না দেয়ায় রিভিউ নেয় সফরকারীরা। অজিদের বিশ্বাস ছিল বল ব্যাটে লাগার আগেই প্যাডে আঘাত করে। বল প্যাডে লেগেছে এমন স্পাইক পাওয়া গেলেও অনফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলাননি হোল্ডস্টক। স্টার্ক মনে করেন, সিদ্ধান্তটি তাদের বিপক্ষে গেছে।
অস্ট্রেলিয়ান পেসার এও জানান, কয়েকটি সিদ্ধান্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গেছে। স্টার্ক বলেন, ‘কিছু সিদ্ধান্ত বেশ আগ্রহ–জাগানিয়া ছিল। অবশ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বেশি গেছে। আমাদের বিপক্ষেও একটি গেছে (চেজের বিপক্ষে) যেখানে মনে হয়েছিল ব্যাট আর বলের মধ্যে ফাঁক ছিল। এর কারণে আমাদের ৪০ রানের মতো ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু পরে এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে তার উইকেট মিলেছে।’