পরবর্তী প্রজন্মের অনুপ্রেরণা হতে চান আলী

ছবি: ছবি- সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
স্বপ্নের রেলগাড়িটা থেমেই যাওয়ার কথা ছিল আলী খানের। অথচ পরিশ্রমে সেটা খুঁজে পেয়েছে গন্তব্য। আলী স্বপ্ন দেখা থামিয়ে দেননি, থামছে না তার স্বপ্ন যাত্রাও। প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডাক পেয়েছেন আইপিএলে। তার এই পথটা হতাশা দূরে ঠেলার, লড়াই চালিয়ে যাওয়া আর রোমাঞ্চের। তিনি চান, এই গল্প অনুপ্রেরণা যোগাক যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রজন্মকে।
২০১৮ সালে নিজের জন্মদিনের পাঁচদিন পর ফ্লোরিডায় তিন বন্ধুকে নিয়ে আশায় বুক বেঁধে আইপিএলের নিলাম অনুষ্ঠান দেখতে বসেছিলেন আলী। কারণ সেবার তাঁর সুযোগ পাওয়ার সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা ছিল। স্বপ্ন সত্যি হওয়ার দিনও হয়ে যেতে পারতো সেদিন।
ভোর পাঁচটায় ঘুম ভেঙে চার ঘণ্টা ধরে টিভির দিকে তাকিয়ে আছেন আলী। এই বুঝি তার নামটা তোলা হবে, কিনে নেবে কোনো দল। পূরণ হবে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। অথচ তাঁর স্বপ্নের সলীল সমাধি ঘটাতে কেবল ২৯ সেকেন্ডই লাগলো। থেকে গে???েন অবিক্রিত।

এত কাছে গিয়েও না পাওয়ার যন্ত্রণার বর্ণনা আলী দিয়েছেন এভাবে, 'ওই দিন আমি খুবই হতাশ ছিলাম। আমি আর নিলামটি দেখতে পারছিলাম না। আমার মনে হয় সেবারই আমি আইপিএলে সুযোগ পাওয়ার সবচেয়ে কাছাকাছি পৌঁছেছিলাম।'
তবে আলীর জীবন বদলে গেছে ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার ডোয়াইন ব্রাভোর সংস্পর্শে। যুক্তরাষ্ট্রের তাঁর বন্ধু মাক কুরাইশি প্রতি বছর ডিসেম্বরে আয়োজন করেন ইউএস ওপেন টি-টোয়েন্টি। ২০১৩ সাল থেকেই সেখানে খেলতেন আলী, ডোয়াইন ব্রাভোকে কুরাইশি নিয়ে যান ২০১৭ সালে।
ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) আলীকে জ্যামাইকা তালাওয়াস দলে ভেড়ালেও ঠিকঠাক সুযোগ পাচ্ছিলেন না খেলার। অবশেষে আলীর বোলিংয়ে মুগ্ধ হয়ে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের জন্য তাঁকে সুপারিশ করেন ব্রাভো। এরপর আইপিএলে খেলার স্বপ্নের আরো কাছাকাছি চলে আসেন আলী।
চলতি বছর ত্রিনবাগোর হয়ে সিপিএল জয়ের পর আইপিএলের দুয়ারও খুলে যায় তাঁর। আইপিএল ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কোনো ক্রিকেটার হিসেবে আলী খানকে দলে ভিড়িয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। একই সঙ্গে স্বপ্ন পূরণের ক্ষেত্রে আরো এক ধাপ এগিয়ে যান তিনি।
কেবল আইপিএল কিংবা সিপিএলই না, বিশ্বের প্রায় সব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেই নিয়মিত মুখ হয়ে উঠছেন আলী। তিনি অনুপ্রেরণা হতে চান পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। হয়ে উঠতে চান আমেরিকার 'রশিদ খান'। আমেরিকার অন্য ক্রিকেটারদের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে সুযোগ করে দিতেও সহায়তা করতে চান আলী।
তিনি বলেন, 'আমার মনে হয় আমি আমেরিকার ক্রিকেটারদের বিভিন্ন লিগে সুযোগ পাওয়ার মাধ্যম হতে পারবো। আশা করি, সামনের বছরগুলোতে আরও ক্রিকেটার সুযোগ পাবে।'
আলীর কথা সত্যি হলে, আদতে লাভ যে ক্রিকেটেরই হবে তা বলাই বাহুল্য।