ধৈর্য্য ও পরিশ্রমের মেলবন্ধনে টি-টোয়েন্টিতে ভিন্ন সাইফ

ক্রিকফ্রেঞ্জি
মুস্তাফিজুর রহমানের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করে স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মারলেন সাইফ হাসান। পরের বলে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের স্লোয়ার ডেলিভারিতে বল হাওয়ায় ভাসিয়ে পার করলেন লং অনের সীমানা। প্রথম টি-টোয়েন্টির আগে সাইফের ব্যাটিং অনুশীলন শেষ হয়েছে ওই দুই ছক্কায়। ব্যাটিংয়ের পর কয়েক ওভার হাত ঘুরিয়েছেন অফ স্পিনে। করেছেন ফিল্ডিং অনুশীলনও। অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরে অনুশীলনে নিজেকে প্রস্তুত করা ডানহাতি ব্যাটার প্রথম ম্যাচে খেলবেন কিনা সেটার নিশ্চয়তা হয়ত তখনো ছিল না।

promotional_ad

শামীম হোসেন পাটোয়ারির জায়গায় কে খেলবেন—সাইফ নাকি নুরুল হাসান সোহান? এমন প্রশ্নের উত্তর অবশ্য ফিল সিমন্স দিয়ে যাননি প্রেস কনফারেন্সে। শামীম লোয়ার অর্ডারের ব্যাটার হওয়ায় সোহান হয়ত একটু এগিয়েই ছিলেন। তবে অনুশীলনে জুলিয়ান উড, সিমন্স কিংবা মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনের মন জয় করে একাদশে সুযোগ পেয়ে যান সাইফ।ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বোলিং করতে পারায় হয়তো তাকে খেলানোর সুযোগটা নিয়েছে বাংলাদেশ।


আরো পড়ুন

ম্যাচ জয়ের কৃতিত্ব ইমন-সাইফদের দিলেন লিটন

৩০ আগস্ট ২৫
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে পারভেজ ইমন, ক্রিকফ্রেঞ্জি

ব্যাটিংও আবার নানান ভূমিকায় খেলতে পারেন তিনি। স্কোয়াড ঘোষণার সময়ই প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু ব্যাখ্যায় জানিয়েছিলেন সাইফের ‘মাল্টিপল প্লেসে অ্যাড্রেস’ করার মতো সামর্থ্যের কথা। টপ অর্ডার কিংবা মিডল অর্ডার—দুই জায়গাতেই সমানতালে ব্যাটিং করতে পারেন তিনি। প্রথম ম্যাচে অবশ্য সাইফের প্রথম সুযোগটা এসেছে বোলিংয়ে। তৃতীয় উইকেটে দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন তেজা নিদামানুরু ও স্কট এডওয়ার্ডস।


২০২১ সালের নভেম্বরের পর জাতীয় দলের হয়ে ফেরা সাইফকে দ্বিতীয় বলেই ফাইন লেগ দিয়ে চার মেরে স্বাগত জানান তেজা। ভড়কে না গিয়ে চতুর্থ বলেই এডওয়ার্ডসকে ফেরালেন ডানহাতি এই অফ স্পিনার। ওভারের শেষ বলে নিলেন তেজার উইকেটও। প্রধান নির্বাচক, অধিনায়ক কিংবা টিম ম্যানেজমেন্ট যা চেয়েছিলেন প্রথম ইনিংসে ঠিক সেটাই করে দেখিয়েছেন সাইফ। ১৮ রানে ২ উইকেট নিয়েই থেমে থাকেননি। ব্যাটিংয়েও নজর কেড়েছেন, নিজের সামর্থ্যকে সামনে এনেছেন।


লিটন দাসের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের দিনে ৩ ছক্কা ও এক চারে ১৯ বলে অপরাজিত ছিলেন ৩৬ রানের ইনিংস খেলে। এমন পারফরম্যান্সের পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশংসায় ভাসছেন সাইফ। তবে সালাহউদ্দিন আবারও মনে করিয়ে দিলেন, দ্রুতই কাউকে যাতে আকাশে না তোলা হয়। সিনিয়র সহকারী কোচ বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি একবার—কাউকে তাড়াতাড়ি আকাশে তুলে ফেলবেন না আবার কাউকে তাড়াতাড়ি নিচে নামিয়ে ফেলবেন না।’


promotional_ad

একটা সময় টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে তকমা পেয়েছিলেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম করে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে গায়ে চাপান বাংলাদেশের টেস্ট জার্সিও। ঘরোয়াতে ভালো করলেও আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে ক্যারিয়ারটা দীর্ঘ হয়নি। ৬ টেস্টে ১৫৯ রান করে বাদ পড়েন পরের বছরই। সেখান থেকে বেরিয়ে টি-টোয়েন্টিতে পারফরম্যান্স করায় সালাহউদ্দিনও প্রশংসা করতে কার্পণ্য করলেন না।


আরো পড়ুন

কথা রাখলেন না লিটনরা

৮ ঘন্টা আগে
ক্রিকফ্রেঞ্জি

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ভালো খেলেছে, ক্যামব্যাক করেছে—যেটা স্ট্রং মানসিকতার একটা পরিচয়। যেকোনো মানুষের ক্ষেত্রেই আপনি যখন ব্যাকফুটে চলে যাবেন তখন সে ওইখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। যেহেতু ওর পেছনে টেস্ট খেলোয়াড়ের তকমা ছিল...সে হয়ত সাদা বলে ভালো খেলতে পারেনি। সেখান থেকে বেরিয়ে সে যে ক্যারেক্টার শো করেছে এটা আসলে সবার ভেতর থাকে না।’


সিনিয়র সহকারী কোচের আশা, প্রথম ম্যাচের পারফরম্যান্স ধরে রাখবেন সাইফ। তিনি বলেন, ‘আশা করি, গত ম্যাচে সে যে ক্যারেক্টার শো করেছে সেটা যেন সে আরও কন্টিনিউ করতে পারে। কারণ এটা অনেক কঠিন ক্রিকেট। এটা ভাবার কোনো কারণ নেই এক ম্যাচেই সে সফল হয়ে যাবে। সাফল্যটা আপনি কতদিন, কত বছর ধরে রেখেছেন সেটা নির্ভর করবে।’


টেস্ট ক্রিকেট থেকে বাদ পড়ার বছরেই টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ হয় সাইফের। ২০২১ সালের নভেম্বরে মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেকও হয়। প্রথম ম্যাচে এক এবং পরের ম্যাচে শূন্য রানে আউট হলে থেমে যায় টি-টোয়েন্টির পথযাত্রাও। ২০২৩ সালের অক্টোবরে অবশ্য এশিয়ান গেমসে সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশের দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় সারির দলের হয়ে। তিন ম্যাচ খেলে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন একটিতে। পরের দুইটিতেই ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি তিনি।


যদিও সবশেষ কয়েক মাসে বিপিএল, গ্লোবাল সুপার লিগ কিংবা ঘরোয়াতে ভালো খেলে নেদারল্যান্ডস সিরিজ ও এশিয়া কাপের দলে সুযোগ পান সাইফ। দুই সংস্করণেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যর্থ হওয়ার পর এভাবে ফেরাটা সহজ ছিল না তাঁর জন্য। ডানহাতি ব্যাটারের ফেরার পথযাত্রায় সঙ্গী ছিলেন সালাহউদ্দিন। তিনি অবশ্য সব কৃতিত্ব সাইফকেই দিলেন। সিনিয়র সহকারী কোচ মনে করেন, সাইফ চেয়েছেন এবং পরিশ্রম করেছেন বলেই এমন পারফরম্যান্স হচ্ছে।


তিনি বলেন, ‘উন্নতি তো নিয়মিতই করতে হবে। কিন্তু তাঁর চেষ্টাটা ছিল। এটা আসলে সে নিজেই চেষ্টা করেছে। সে নিজেকে অন্য জায়গায় দেখতে চেয়েছে। কারণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সে প্রথম ৬-৭ টা ম্যাচে সে ব্যর্থ হয়েছে। সেখান থেকে মানসিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানো খুবই কঠিন কাজ। হয়তো আমরা বাইরে থেকে মনে করি এটা অনেক সহজ। কিন্তু এটা অনেক কঠিন কাজ। সেই কাজটা সে করতে পেরেছে, তাঁর ক্যারেক্টারের ভেতরে ছিল। সে নিজে উন্নতি করার চেষ্টা করছে এবং এ কারণেই এখন পারফরম্যান্সগুলো হচ্ছে।’


ব্যর্থ হওয়ার পরও সাইফ যেভাবে ধৈর্য্য ধরে পরিশ্রম করেছেন সেটাই ভালো লেগেছে সালাহউদ্দিনের। তিনি বলেন, ‘ওর চেষ্টার কথা বলব, অনেক মানুষই চেষ্টা করে। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে হয়ত এক-দুই মাস কিংবা এক বছর ধৈর্য্য থাকে। কিন্তু ধৈর্য্যটা চার বছর ধরে দেখলাম। আপনি কতদিন আপনার ধৈর্য্য ধরে রাখবেন এটা অনেক বড় ব্যাপার। সেটার ফলই হয়ত সে এখন পাচ্ছে। ভবিষ্যতে সে হয়ত আরও ভালো করবে।’



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball