বাংলাদেশ-আফগানিস্তান

নিদাহাসের স্মার্ট বাংলাদেশ ফিরুক দেরাদুনে

জুবাইর

জুবাইর
প্রকাশের তারিখ: 14:51 সোমবার, 04 জুন, 2018

টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের পাওয়ার হিটার নেই, আমাদের দুই-একজনের বেশি ডেথ ওভার স্পেশালিস্ট বোলার নেই। বিশ্ব মানের পেস বোলিং অলরাউন্ডার নেই। টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট কাঁপানো লেগ স্পিনার নেই।

কিন্তু এক ঝাঁক অভিজ্ঞ এবং 'স্মার্ট' ক্রিকেটার রয়েছে বাংলাদেশ দলে। সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও রুবেল হোসেনদের নিয়ে গড়া দলটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দল গুলোর একটি।

টি-টুয়েন্টিতে পূর্বের রেকর্ড বিচারে অপ্রত্যাশিত হলেও অভিজ্ঞতা ও স্মার্ট ক্রিকেটিই বাংলাদেশ দলকে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে তুলেছে। ফাইনালে জয়ের বড় সম্ভাবনা জাগিয়ে রানার্স আপ হয়ে ফিরেছে শ্রীলঙ্কা থেকে। শ্রীলঙ্কায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেছিলেন, 

'আমরা বাংলাদেশি ব্র্যান্ডের টি-টুয়েন্টি খেলব। আমাদের স্মার্ট হতে হবে, স্কিল আছে আমাদের। স্মার্ট হতে হবে ঝুঁকি নেওয়ার ব্যাপারে। হয়তো কোনো সময় কোনো এক বোলারকে আমরা টার্গেট করতে পারি। সেটা একজন ব্যাটসম্যান আরেকজনকে বলতে পারে বা এ রকম আরও কিছু খেয়াল করলে সেটা বলা। এ ব্যাপারগুলোর প্রয়োগই চাই আমরা।'

শ্রীলঙ্কার সেই জমজমাট এবং হাই প্রেশার টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দল নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে সক্ষম হয়েছিল। ব্যাট হাতে শুরু ছয় ওভারের ব্যবহার থেকে মিডেল ওভারে উইকেট হাতে রেখে প্রান্ত বদল করে খেলে ডেথ ওভারে হাত খুলে খেলার সুযোগ সৃষ্টি করে সফল হয় বাংলাদেশ।

টপ অর্ডারে তামিম ইকবালের সাথে লিটন কিংবা সৌম্য সরকাররা ভালো করেছিল। মিডেল অর্ডারে মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সাব্বির রহমানদের ব্যাট থেকে নিয়মিত রান পেয়েছে বাংলাদেশ। 

বল হাতেও স্পিন বোলারদের সাথে পেসাররাও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে। ছোট ফরম্যাটে ৬ থেকে ১৫ ওভার পর্যন্ত ম্যাচের গতিবিধি নিয়ন্ত্রনে রাখা খুব জরুরী। বাংলাদেশি বোলাররা নিদাসাহ ট্রফিতে সেটা করতে সক্ষম হয়েছে।

কিন্তু দুই মাস পর ভারতের দেরাদুনে ভিন্ন বাংলাদেশকে দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে সেই স্মার্ট বাংলাদেশকে খুঁজে পাওয়া গেল না। বল হাতে এলোমেলো শুরুর পর স্পিনাররা বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরালেও শেষের দিকে স্মার্টনেসের বদলে বোকামি করেছে বাংলাদেশের বোলাররা।

কিন্তু তখনো সব শেষ হয়ে যায়নি। সুযোগ ছিল ব্যাট হাতে ভালো কিছু করার। মাথা ঠাণ্ডা করে খেললেই জয় সম্ভব, নাগালেই ছিল প্রয়োজনীয় রান রেট। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাট বলের লড়াই থেকে বেরিয়ে খেলেছে প্রতিপক্ষের ব্যক্তিত্ব ও নামের বিপক্ষে। 

আফগান স্পিন তারকা মুজিব ও রাশিদ অতি মানব নয়...বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা অবশ্য এই দুই স্পিনারকে অতিমানব ভেবেই খেলেছে এবং বিপদে পড়েছে। স্পেলের শুরুতেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জোর পূর্বক বোলিংয়ে পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা।

বলা বাহুল্য, সেই চেষ্টায় পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ দল। ফলাফল, অভিজ্ঞতায় ঠাসা বাংলাদেশ দলের হার তারুণ্য নির্ভর আফগানদের বিপক্ষে। তবে সব শেষ হয়ে যায় নি, তিন ম্যাচ সিরিজের বাকী দুই ম্যাচে সেই পুরনো বাংলাদেশের আবির্ভাব ঘটুক... সেটাই চাইবে বাংলাদেশের সমর্থকরা।