শ্রীলঙ্কা-ভারত ওয়ানডে সিরিজ

ধাওয়ানের সেঞ্চুরিতে লঙ্কানদের উড়িয়ে সিরিজ ভারতের

তামজিদুর রহমান

তামজিদুর রহমান
প্রকাশের তারিখ: 21:05 রবিবার, 17 ডিসেম্বর, 2017

আজ ভিশাখাপত্নমে সফরকারী শ্রীলঙ্কাকে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষটিতে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে রোহিত শর্মার ভারত। এদিন শুরুতে ব্যাটিং করে কুলদিপ যাদব ও জুবেন্দ্র চাহালের দুর্দান্ত বোলিং ঘূর্ণিতে মাত্র ২১৫ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিলো লঙ্কানরা। এর ফলে বৃথা গিয়েছে ওপেনার উপল থারাঙ্গার ৮২ বলে ৯৫ রানের লড়াকু ইনিংসটি। 

পরবর্তীতে ২১৬ রানের মামুলি লক্ষ্যে খেলতে নেমে শিখর ধাওয়ানের শতক এবং  স্রেয়াশ আইয়ারের অর্ধশতকে ভর করে মাত্র ৩২.১ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা।  আর এই জয়ে ২-১ এ সিরিজটিও জিতে নিয়েছে রোহিত বাহিনী।    

এদিন শুরুতে টসে জিতে লঙ্কানদের ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ভারতের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক রোহিত শর্মা।  এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ১৫ রানের মাথায় জাসপ্রিত বুমরাহর করা একটি বলে মিড অফে তুলে মারতে গিয়ে অধিনায়ক রোহিতের হাতে ধরা পড়েন ওপেনার দানুস্কা গুনাঠিলাকা।

তবে এরপর উপল থারাঙ্গা এবং সাদিরা সামারাবিক্রমার ব্যাটে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ায় লঙ্কানরা। এই দুই ব্যাটসম্যান দারুণ ব্যাটিং করে দ্রুত রান তুলতে থাকেন। পাশাপাশি জুটি গড়েন ১২১ রানের। এর মধ্যে থারাঙ্গাও তুলে নেন তাঁর ব্যক্তিগত অর্ধশতক। 

তবে দলীয় ১৩৬ রানের সময় জুবেন্দ্র চাহালের একটি বল তুলে মারতে গিয়ে ডিপ কাভার অঞ্চলে শিখর ধাওয়ানের হাতে ধরা পড়েন দারুণ খেলতে থাকা সামারাবিক্রমা। আর এরই সাথে দুর্দান্ত এই জুটিটি ভাঙ্গে। 

অবশ্য সামারাবিক্রমা ফিরে গেলেও রানের চাকা সচল রাখেন থারাঙ্গা এবং নতুন ক্রিজে আসা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। কিন্তু কুলদিপ যাদবের করা ২৭.১ ওভারে দুর্ভাগ্যক্রমে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ফিরতে হয়েছে অভিজ্ঞ ওপেনার থারাঙ্গাকে।  ৯৫ রান করে ক্যারিয়ারের ১৬তম সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন এই লঙ্কান ওপেনার। 

থারাঙ্গা ফিরে গেলে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকওয়েলা। কিন্তু মাত্র ৮ রান করে কুলদিপ যাদবের বলে স্লিপে স্রেয়াশ আইয়ারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ডিকওয়েলা। ১৬৮ রানের মাথায় দ্রুত ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে লঙ্কানরা। 

১৮৯ রানের মাথায় অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে বোল্ড করে জুবেন্দ্র চাহাল ফিরিয়ে দিলে আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি লঙ্কানরা। নব নিযুক্ত অধিনায়ক থিসারা পেরেরাও এদিন রান পেতে ব্যর্থ হয়েছেন। মাত্র ৬ রান করে চাহালের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হন পেরেরা। 

এরপর আর কোনো ব্যাটসম্যানই দাঁড়াতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ভারতীয় বোলারদের তোপে ৪৪.৫ ওভারে মাত্র ২১৫ রানেই গুঁতিয়ে যায় লঙ্কানরা। ভারতের পক্ষে কুলদিপ যাদব এবং জুবেন্দ্র চাহাল প্রত্যেকে ৩ টি করে উইকেট শিকার করেছেন। অপরদিকে ২টি উইকেট নিয়েছেন হার্ধিক পান্ডিয়া এবং ১টি করে  উইকেট পেয়েছেন ভুবনেশ্বর কুমার ও জাসপ্রিত বুমরাহ। 

লঙ্কানদের ছুঁড়ে দেয়া ২১৬ রানের লক্ষ্যের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা অবশ্য ভালো ছিলো না ভারতের। দলীয় মাত্র ১৪ রানের মাথায় আগের ম্যাচের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান এবং অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে বোল্ড করে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন লঙ্কান স্পিনার আকিলা ধনঞ্জয়া।

তবে এরপর স্রেয়াশ আইয়ার ও শিখর ধাওয়ানের ব্যাটে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। এই দুই ব্যাটসম্যান ১৩৫ রানের দুর্দান্ত একটি জুটি গড়ে দলকে জয়ের ভিত গড়ে দেন। লঙ্কান অধিনায়ক থিসারা পেরেরার বলে সুরঙ্গা লাকমলের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে ৬৫ রান করেন আইয়ার। 

যদিও দলীয় ১৪৯ রানের সময় তাঁর উইকেটটি পড়লেও সমস্যায় পড়তে হয়নি স্বাগতিকদের। কেননা ধাওয়ানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি এবং নতুন ক্রিজে আসা দীনেশ কার্তিকের অপরাজিত ২৬ রানের ওপর ভর করে সহজেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ভারত।  ১০ ওভারে ৪২ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করায় ম্যাচ সেরার পুরষ্কার হাতে উঠেছে ভারতীয় স্পিনার কুলদিপ যাদবের হাতে। 

উল্লেখ্য এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে জয় দিয়ে সিরিজে এগিয়ে গিয়েছিলো লঙ্কানরা। তবে পরবর্তী ম্যাচেই ১৪১ রানের জয় দিয়ে সিরিজে সমতা ফেরায় রোহিত শর্মার দল। সেই কারণে আজকের ম্যাচটি দুই দলের জন্যই ছিলো অঘোষিত ফাইনাল।