ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ

'ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে খেলবে বাংলাদেশ'

তামজিদুর রহমান

তামজিদুর রহমান
প্রকাশের তারিখ: 22:27 শনিবার, 16 ডিসেম্বর, 2017

শনিবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক ক্রিকেটাররা মিলে একটি প্রীতি ম্যাচে অংশ নিয়েছিলেন।  শহীদ জুয়েল এবং শহীদ মুস্তাক একাদশ নামে দুইটি ভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে খেলেছিলেন নান্নু-বুলবুলরা। 

আর এই ম্যাচের ফাঁকে সাংবাদিকদের কিছুটা সময় দেন সাবেক টাইগার অধিনায়ক এবং বাংলাদেশ দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। বিজয় দিবসে নিজের দেশের প্রতি গর্ব করে তিনি জানান, 'বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে কোনোদিন আমি হাবিবুল বাশার হতে পারতাম না।' 

পাশাপাশি এদিন শহীদদের প্রতিও সম্মান জানান বাশার। সাবেক ক্রিকেটারদের মিলনমেলায় অংশ নিতে পেরে নিজেকে ধন্য বলেও মনে করেন বাশার। দেশের জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাঁদের স্মরণে আয়োজিত এই ম্যাচে খেলতে পারার জন্য অধীর আগ্রহে প্রতি বছর অপেক্ষায় থাকেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘

অবশ্যই এ দিনটার জন্য আমরা অপেক্ষা করে থাকি। বিশেষ করে ১৬ই ডিসেম্বর, ২৬শে মার্চ আমরা সবাই একসাথে হই। একসাথে খেলি। এই দিনে আমরা সবাইকে স্মরণ করি। বাংলাদেশ না হলে আমরা ক্রিকেটার হতে পারতাম না। অন্ততঃ কোনদিন আজকের এই হাবিবুল বাশার হতে পারতাম না। তো যাদের জন্য স্বাধীনতা পেয়েছি, তাদেরকে একটু সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যেই এইদিনটাতে আমরা এক হই। বাংলাদেশের জন্য তো আমরা সবাই কিছু না কিছু করতে চাই। এই দিনে সবার সাথে দেখা হয়, খেলা হয়। এর মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকে। হার-জিতের একটা ব্যাপার আছে। আসলে আমরা সবাই এই দিনটা উপভোগ করি।’

বাংলাদেশ যদি আজ স্বাধীন না হতো, জুয়েল-মোস্তাকদের মতো বীর মুক্তিযোদ্ধারা যদি জন্ম না নিতেন তাহলে হয়তো একজন হাবিবুল কখনোই তৈরি হতো না। জুয়েল-মুস্তাকরা ক্রিকেট না খেললে আজকের বাংলাদেশ এই পর্যায়ে আসতো না বলেও মনে করেন বাশার। বললেন, 

‘আমার মনে হয় এটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা উচিত। কারণ, দেখেন ঐতিহ্যটাকে কিন্তু ধরে রাখতে হবে। জুয়েল ভাই, মোস্তাক ভাই যদি ক্রিকেট না খেলতেন তাহলে হয়তো আমরা ক্রিকেটার না হয়ে অন্যকিছু হতাম। তারা কিন্তু ওই সময়ে খেলেছে। তাদের ত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার কারণেই আমারা ক্রিকেটকে পেশা হিসেবে নিতে পেরেছি।'

সাবেক এই টাইগার অধিনায়ক আরো বলেন, 'তাঁদের কারণেই আমরা অনেক সুযোগ সুবিধা পেয়েছি। এখন তাই অনেক খেলাও হয়। এটা কিন্তু তারা ওই সময়ে ক্রিকেট খেলেছে বলে, দেশের জন্য লড়াই করেছে বলেই সম্ভব হয়েছে এবং এখনো খেলাটা আছে। আমরাও খেলতে পারছি। ক্রিকেট খেলার প্রতি সবাই আগ্রহ দেখাচ্ছে এবং এই ঐতিহ্যটা তাদের কাছ থেকেই এসেছে।'

বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেটে যথেষ্ট উন্নতি করেছে। এদেশের ক্রিকেটাররা এখন কোনো বড় দলের বিপক্ষেই আর মাথা নত করতে চায় না। বরং লড়ে যায় সাধ্যমত। জাতি হিসেবে ক্রিকেট বিশ্বে বাংলাদেশ এখন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখেছে বলে দাবি করলেন টাইগার নির্বাচক হাবিবুল। আর এর সবই সম্ভব হয়েছে মুস্তাক-জুয়েলদের ত্যাগের বিনিময়ে। বাশার বললেন, 

‘আমি আবারও বলতে চাই তারা (জুয়েল-মোস্তাক) যদি ওই সময়ে ক্রিকেট না খেলতেন, তাহলে আমরা আজ ক্রিকেট খেলতে পারতাম না। আমরা কতখানি এগুতে পেরেছি তা এখন দৃশ্যমান। আমাদের ক্রিকেট এখন অনেক এগিয়েছে। আমরা এখন সবার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারছি।

বাংলাদেশ ক্রিকেট জাতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। আরো এগুতে পারতাম কি না সেই প্রশ্ন থাকতেই পারে। আমাদের উন্নতিটা হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে। আমরা ভাল এগুচ্ছি। আমাদের ভবিষ্যৎ অনেক ভাল। অনেকেই বলেন যে, বাংলাদেশ কবে বিশ্বকাপ জিতবে। একটা জিনিস আমি বলতে পারি, বিশ্বকাপ অবশ্যই একদিন বাংলাদেশ জিতবে।'

আগামী মাসে শ্রীলঙ্কা এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দীর্ঘদিন পর ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ নিবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। শনিবার সেই সিরিজটি নিয়েও কথা বললেন বাশার। জানিয়েছেন আসন্ন সেই সিরিজের ফাইনালে খেলবে বাংলাদেশ বলে প্রত্যাশা করেন তিনি। এই প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য, 

'আমি এটা খুব ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। আমরা তো আসলে এটাই চাই। বাংলাদেশ ক্রিকেট একদিন এই অবস্থায় আসবে। যেখানে আমরা অংশগ্রহণ করার জন্য খেলবো না, টুর্নামেন্ট জেতার জন্যই খেলবো। আমরা এখন সে অবস্থায় আসতে পেরেছি। এটা ভাল অনুভূতি। আমরা ভাল খেলার জন্য খেলবো। ফাইনাল অবশ্যই খেলতে চাই। আর গত কয়েক বছর কিন্তু খেলছি টুর্নামেন্ট জেতার জন্য।'