বাংলাদেশ- শ্রীলঙ্কা সিরিজ

শ্রীলঙ্কার সিরিজ জয়ের অপেক্ষা বাড়ালেন মিরাজ-তাইজুল

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 11:26 মঙ্গলবার, 02 এপ্রিল, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

প্রায় অসম্ভব লক্ষ্য তাড়ায় টপ অর্ডার থেকে বড় ইনিংসের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের। তবে জাকির হাসান, মাহমুদুল হাসান জয় থেকে শুরু করে নাজমুল হোসেন শান্ত, তাদের কেউই থিতু হয়ে ইনিং বড় করতে পারলেন না। মুমিনুল হকের হাফ সেঞ্চুরির সঙ্গে বাকিদের ছোট ছোট ইনিংসে ৭ উইকেটে ২৬৮ রান তুলে চতুর্থ দিন শেষ করেছে স্বাগতিকরা। চট্টগ্রাম টেস্ট জিততে এখনও ২৪৩ রান করতে হবে শান্তর দলকে। হাতে আছে মাত্র ৩ ‍উইকেট। সিরিজ জয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকা লঙ্কানদের অপেক্ষা বাড়িয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ এবং তাইজুল। প্রায় অসম্ভব সমীকরণ মেলাতে পঞ্চম ও শেষদিনে ব্যাটিংয়ে নামবেন তারা দুজন।

৫১১ রানের অসম্ভব লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালোই করেছিলেন জাকির হাসান এবং মাহমুদুল হাসান জয়। যদিও লঙ্কান পেসারদের বিপক্ষে খুব একটা স্বস্তিতে ছিলেন না তারা দুজন। ষষ্ঠ ওভারে ওপেনিং জুটি প্রায় ভেঙেই দিয়েছিলেন প্রবাথ জয়সুরিয়া! তবে কুশল মেন্ডিসের ব্যর্থতায় বেঁচে যান জাকির। অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা বলটি জাকিরের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে উইকেটের পেছনে চলে যায়। যদিও সেটি গ্লাভসে লুফে নিতে পারেননি লঙ্কান উইকেটরক্ষক।

উইকেট না হারিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গেলেও ফিরে এসেই বিদায় নেন জয়। জয়াসুরিয়ার জোরের ওপর করা আর্ম ডেলিভারিটি কাট করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন তরুণ এই ওপেনার। ৩২ বলে তিনটি চারে ২৪ রান আসে তার ব্যাটে। সিরিজে এটিই তার সর্বোচ্চ রান। ১০ রানে জীবন পাওয়া জাকিরও বিদায় নেন দ্রুত। বিশ্ব ফার্নান্দোর অফ স্টাম্পের বাইরে করা ডেলিভারিটি খোঁচা দিয়ে প্রথম স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন ৩৯ বলে ১৯ রান করা জাকির।

এদিকে দলের রান ১০০ হওয়ার আগে শান্তর উইকেটও হারায় বাংলাদেশ। অধিনায়কের ব্যাটে আসে ৫৫ বলে ২০ রানের ইনিংস। এটিই সিরিজে তার সর্বোচ্চ রান। লাহিরু কুমারার সোজা যাওয়া ডেলিভারি ভুল লাইনে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন শান্ত। মুমিনুলের সঙ্গে তার জুটি অবশ্য ভালো কিছুরই ইঙ্গিত দিচ্ছিল। তারপর মুমিনুলের সঙ্গে হাল ধরেন সাকিব আল হাসান। এদিন বেশ ইতিবাচক ভঙ্গিমায় খেলছিলেন মুমিনুল।

যদিও ৫৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পরের বলেই ফিরে যান টেস্ট বিশেষজ্ঞ এই ব্যাটার। ক্যারিয়ারে এটি তার ১৮ নম্বর হাফ সেঞ্চুরি। জয়াসুরিয়ার লেগ স্টাম্পে তাক করা ডেলিভারিটি সুইপ করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন মুমিনুল। তার বিদায়ে সাকিবের সঙ্গে ৩৮ রানের জুটিটি ভাঙে। দ্বিতীয় সেশনে ২৬ ওভারে ৯৫ রান করতে ড্রেসিং রুমে ফেরেন বাংলাদেশের চার ব্যাটার।

চা বিরতি থেকে ফিরে টাইগারদের টানছিলেন সাকিব ও লিটন জুটি। তবে সাকিবের আউটে জুটি ভাঙে তাদের দুজনের। কামিন্দু মেন্ডিসের অফ স্টাম্পের বাইরের বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে খোঁচা দিয়ে স্লিপে থাকা নিশান মাদুশকার হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৩৬ রান করা সাকিব। তাতে ভাঙে লিটনের সঙ্গে ৬১ রানের জুটি। বাঁহাতি এই ব্যাটার ফেরার কিছুক্ষণ পর আউট হয়েছেন লিটনও। লাহিরু কুমারের খাটো লেংথের ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে মেন্ডিসকে ক্যাচ দিয়েছেন।

লিটনের ব্যাট থেকে এসেছে ৭২ বলে ৩৮ রান। আগের তিন ইনিংসের মতো এবারও ব্যর্থ হয়েছেন শাহাদাত হোসেন দিপু। কামিন্দুর বলে লেগ বিফোর উইকেট হয়ে যাওয়ার আগে করেছেন মাত্র ১৫ রান। এরপর তাইজুলকে সঙ্গে নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছেন মিরাজ। চতুর্থ দিন শেষে মিরাজ ৪৪ এবং তাইজুল অপরাজিত রয়েছেন ১০ রানে।

এর আগে আগের তিন ইনিংসে শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা দাপট দেখালেও সেভাবে কিছু করতে পারেননি অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। ব্যর্থতা ঝেড়ে এই ইনিংসে রানের দেখা পেলেন তিনি। স্লিপে শাহাদাত হোসেন দিপু ক্যাচ নিতে পারলে হয়ত ৭ রানে থামতেন ম্যাথিউস। তবে চতুর্থ দিন সকাল থেকেই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলতে থাকেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। চারটি চারে ৬৭ বলে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ম্যাথিউস।

১০৯ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এটি তার ৪১তম হাফ সেঞ্চুরি। সাকিব আল হাসানের নিচু হওয়া টার্নিং ডেলিভারিতে বোল্ড হওয়ার আগে ৭৪ বলে ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন ম্যাথিউস। চতুর্থ দিন সকাল থেকে আরেক প্রান্তে প্রবাথ জায়াসুরিয়াও সাবলীল ব্যাটিং করেছেন। ইনিংস ঘোষণার আগে ৬৭ বলে ২৮ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। সঙ্গে বিশ্ব ফার্নান্দো ছিলেন ১৬ বলে ৮ রান নিয়ে। ৭ উইকেটে ১৫৭ রান নিয়ে ইনিংষ ঘোষণা দেয়ায় বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫১১ রান।