ভারতীয় ক্রিকেট

রোহিতের জন্য ‘মাঠে জীবন দিতে’ পারেন অশ্বিন

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 19:59 বুধবার, 13 মার্চ, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

রাজকোটে জ্যাক ক্রলিকে আউট করে টেস্টে ৫০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। এমন কীর্তি বাবাকে উৎসর্গ করার দিনে খবর পান মায়ের অসুস্থতার। যে কারণে শেষ পর্যন্ত রাজকোট ছেড়ে চেন্নাইয়ের বিমান ধরেছিলেন তিনি। যদিও একদিন পরই টেস্ট দলের যোগ দিয়েছিলেন অশ্বিন। নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া সেই ৪৮ ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি নিজেই। সেই সঙ্গে কোচ-অধিনায়কের পাশে থাকার অনন্য দৃষ্টান্তের গল্প শুনিয়েছেন অশ্বিন।

ভাইজাগেই ৫০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারতেন অশ্বিন। তবে মাত্র এক উইকেটের অপেক্ষায় সেটি হয়ে ওঠেনি। তবে সেটা পূরণ হয়েছে রাজকোট টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছিলেন ক্রলি। তাতেই ভারতের দ্বিতীয় স্পিনার হিসেবে ৫০০ উইকেট নিয়েছেন অশ্বিন।

মুত্তিয়া মুরালিধরনের পর দ্রুততম বোলার হিসেবে ৫০০ উইকেট নিয়ে কীর্তিটা বাবাকে উৎসর্গ করেছিলেন তিনি। দিনের খেলা শেষে সাক্ষাৎকারের জন্য যাওয়ার কথা ছিল অশ্বিনের। এদিকে এমন রেকর্ড গড়ার পরও পরিবারের ফোন না পেয়ে খানিকটা অবাক হয়েছিলেন ডানহাতি এই স্পিনার। যখন স্ত্রীকে ফোন দেন তখন মায়ের অসুস্থতার কথা শুনতে পান। এমন কথা শুনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়লেও তার পাশে এসে দাঁড়ান রোহিত শর্মা ও প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড়।

টেস্টের মাঝেই অশ্বিনকে রাজকোট ছেড়ে চেন্নাই যাওয়ার পরামর্শ দেন ভারতের অধিনায়ক। শুধু তাই নয় দলের দুজন ফিজিওর একজনকে অশ্বিনের সাথে পাঠিয়ে দেন রোহিত। এদিকে সবার সঙ্গে কথা বলে চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে দেন চেতেশ্বর পূজারা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষে পুরো ঘটনা সবার সামনে এনেছেন অশ্বিন নিজেই।

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে অশ্বিন বলেন, ‘চেতেশ্বর পূজারাকে ধন্যবাদ দিতে হবে, যে অনেক মানুষের সঙ্গে কথা বলে আমার জন্য চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থা করেছে। আমাদের টিম ফিজিও কমলেশ আমার ভালো বন্ধু। রোহিত কমলেশকে আমার সঙ্গে চেন্নাই যেতে বলে, দলে মাত্র দুজন ফিজিও থাকা সত্ত্বেও।’

চার্টার্ড ফ্লাইটে অশ্বিনকে একা পাঠাতে চাননি রোহিত। তাই অশ্বিনকে না জানিয়েই দলের ফিজিও কমলেশকে তার সঙ্গে পাঠান ভারতীয় অধিনায়ক। সিরিজের গুরুত্বপূর্ণ সময়েও রোহিত ফিজিওর সঙ্গে সর্বদা যোগাযোগ রাখছিলেন তিনি। নিজের অধিনায়কের এমন গুন মুগ্ধ করেছে অশ্বিনকে। তার মতে, বর্তমান সময়ে স্বার্থপর সমাজে রোহিত দেখালেন তিনি কত বড় হৃদয়ের অধিকারী।

রোহিতের ব্যাপারে অশ্বিন বলেন, ‘আমি কমলেশকে বললাম, ‘সমস্যা নেই, তুমি থাকো।’ কিন্তু আমি বিমানে উঠতে গিয়ে দেখি, কমলেশ ও একজন নিরাপত্তাকর্মী আগে থেকেই সেখানে আছে। শুধু তাই নয়, রোহিত বারবার কামলেশকে ফোন করছিল আমার অবস্থা জানার জন্য…আমাদের মতো স্বার্থপর সমাজে, যে অন্য কারোর ভালোর কথা চিন্তা করে, সে সত্যিই খুব ভালো মানুষ।’

অশ্বিন আরও বলেন, ‘রোহিত স্পেশাল একজন মানুষ, অসাধারণ নেতা, বড় হৃদয়ের অধিকারী। আমি নিজেই এর সাক্ষী। মাঠে তার জন্য আমি আমার জীবন দিয়ে দেব, সে এমনই একজন অধিনায়ক। এই গুণগুলোর কারণেই সে পাঁচটি আইপিএলসহ অনেক শিরোপা জিতেছে। আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, রোহিত তার ক্যারিয়ার এবং জীবনে আরও বেশি অর্জন করুক।’