ভারত - ইংল্যান্ড সিরিজ

‘নাসের আজ নিশ্চিত বলবেন আমিই বলেছিলাম’

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 12:29 শনিবার, 09 মার্চ, 2024

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

‘আমিই বলেছিলাম’ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটিকে হাস্যরস হিসেবেই দেখা হয়ে থাকে। কোন কাজ নিয়ে কেউ যদি আগে বলেন এবং সেটি যদি পরবর্তীতে ঘটে তাহলে বক্তাকে বলতে শোনা যায় ‘আমিই বলেছিলাম।’ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে প্রায়শই এমনটা বলতে শোনা যায়।

যা নিয়ে ক্রিকেট সমর্থকরা অবশ্য হাস্যরস করে থাকেন। কিন্তু নাসের হুসেইন যদি একই কথা বলেন তাহলেও কি হাস্যরস হবে? ২০০২ সালে শচীন টেন্ডুলকারের কাছে জেমস অ্যান্ডারসনের প্রশংসা করেছিলেন নাসের। ২২ বছর পর ইতিহাসের প্রথম পেসার হিসেবে টেস্টে ৭০০ উইকেট নিয়েছেন অ্যান্ডারসন। এমন দিনে নাসেরও অ্যান্ডারসনকে নিয়ে বলবেন যে আমিই বলেছিলাম।

এটির নিশ্চয়তা দিচ্ছেন কিংবদন্তি শচীন নিজেই। নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে শচীন লিখেছেন, ‘২০০২ সালে অস্ট্রেলিয়াতে আমি প্রথমবার অ্যান্ডারসনকে খেলতে দেখেছিলাম এবং বলের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ দারুণ ছিল। নাসের হুসেইন তখন তাকে নিয়ে আমার কাছে অনেক প্রশংসা করেছিলেন। আমি নিশ্চিত আজকে সে বলবেন, ‘আমিই বলেছিলাম।’

৬৯৮ উইকেট নিয়ে ধর্মশালা টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন অ্যান্ডারসন। দ্বিতীয় দিনে শুভমান গিলকে নিজের শিকার বানিয়ে পৌঁছে যান ৬৯৯ উইকেটে। প্রথম পেসার হিসেবে ৭০০ উইকেটের মাইলফলক থেকে মাত্র একটি উইকেট ‍দূরে ছিলেন অ্যান্ডারসন। সেটার জন্য অবশ্য খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি।

অ্যান্ডারসনের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে বেঁচে গেলেন কুলদীপ যাদব। আগের বলটা শর্ট অব লেংথে করলেও এবার অ্যান্ডারসন ছাড়লেন অফ স্টাম্পের বাইরে, লেংথে। লম্বা সময় টিকে থাকা কুলদীপ শেষ পর্যন্ত নিজের উইকেট দিয়েই এলেন। অ্যান্ডারসনে অফ স্টাম্পের অনেকটা বাইরের লেংথ ডেলিভারিতে ব্যাট এগিয়ে দিলেন কুলদীপ।

ব্যাটের নিচের অংশে চুুমু এঁকে বল চলে গেল উইকেটকিপার বেন ফোকসের গ্লাভসে। সহজ ক্যাচ নিতে একদমই ভুল করলেন না ফোকস। গ্লাভসে বল লুফে নিয়েই আনন্দ উল্লাসে ফেঁটে পড়লেন ইংল্যান্ডের এই উইকেটকিপার। এক হাত উঁচিয়ে জেমস অ্যান্ডারসন যেন কুলদীপকে বোঝাতে চাইলেন, ‘তুমি আউট।’

উইকেট নেয়ার উল্লাসে জড়িয়ে ধরলেন সতীর্থকে। ৭০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করায় একে একে এগিয়ে এসে অভিবাদন জানাচ্ছিলেন ইংলিশ ক্রিকেটাররা। ধর্মশালার গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে তখন করতালিতে অভিবাদন জানাচ্ছিলেন ইংল্যান্ডের সমর্থকরা। প্রথম পেসার হিসেবে অ্যান্ডারসনের ৭০০ উইকেটের কীর্তি গ্যালারিতে বসে দেখেছেন তার বাবা-মা।

৬৯৮ উইকেট নিয়ে ধর্মশালা টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন অ্যান্ডারসন। দ্বিতীয় দিনে শুভমান গিলকে নিজের শিকার বানিয়ে পৌঁছে যান ৬৯৯ উইকেটে। প্রথম পেসার হিসেবে ৭০০ উইকেটের মাইলফলক থেকে মাত্র একটি উইকেট ‍দূরে ছিলেন অ্যান্ডারসন। সেটার জন্য অবশ্য খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি।

তৃতীয় দিন সকালে কুলদীপকে ফিরিয়ে তৃতীয় বোলার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ৭০০ উইকেটের দেখা পেয়েছেন তিনি। এমন কীর্তি গড়তে ডানহাতি এই পেসারকে খেলতে হয়েছে ১৮৭ টেস্ট। ৪১ বছর বয়সি এই পেসারের চেয়ে বেশি উইকেট আছে কেবল মুত্তিয়া মুরালিধরন এবং শেন ওয়ার্নের।

৮০০ উইকেট নিয়ে এই তালিকায় সবার উপরে মুরালিধরন। দুইয়ে আছেন বছর দুয়েক আগে মারা যাওয়া ওয়ার্ন। অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি এই লেগ স্পিনারের উইকেট সংখ্যা ৭০৮। আর মাত্র ৯ উইকেট নিতে পারলেই ওয়ার্নকে ছাড়িয়ে যাবেন অ্যান্ডারসন। ৭০০ উইকেট নেয়া এক সময় কাল্পনিক মনে হতো বলে জানান শচীন।

তিনি বলেন, ‘৭০০ টেস্ট উইকেট নেয়া দারুণ কীর্তি। একজন পেস বোলার ২২ বছর খেলে এবং ৭০০ উইকেট নেয়ার মতো পারফরম্যান্স করাটা অ্যান্ডারসন যতক্ষণ না বাস্তবে করেছেন ততক্ষণ এটি কাল্পনিক মনে হতো। এক কথায় অসাধারণ।’