বাংলাদেশ- আয়ারল্যান্ড সিরিজ

স্টার্লিংয়ের ঝড়ে হোয়াইটওয়াশ এড়াল আয়ারল্যান্ড

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 13:59 শুক্রবার, 31 মার্চ, 2023

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

মার্ক অ্যাডায়ার ও ম্যাথু হামফ্রেজদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে ঠিকঠাক দাঁড়াতে পারেনি লিটন দাস-সাকিব আল হাসানরা। ৬১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর ৫১ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে খানিকটা টানেন শামীম হোসেন। বাঁহাতি এই ব্যাটারের হাফ সেঞ্চুরিতে একশ পেরোলেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। পল স্টার্লিংয়ের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে সহজেই ১২৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা উতরে যায় আয়ারল্যান্ড। এবারের বাংলাদেশ সফরে যা তাদের প্রথম জয়। বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়েছে সফরকারী।

চট্টগ্রামে সহজ লক্ষ্য তাড়ায় তাসকিন আহমেদের প্রথম মাত্র ৫ রান নেয় আয়ারল্যান্ড। পরের ওভারে সাকিবের বিপক্ষে দুই চারে এসেছে ১০ রান। স্টার্লিং ও রস অ্যাডায়ারের ১৭ রানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙেছেন তাসকিন। ডানহাতি এই পেসারের ফুল লেংথ ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন ৭ রান করা অ্যাডায়ার। তবে আইরিশদের রানের চাকা সচল রাখেন স্টার্লিং।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে এসে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের খানিকটা বাইরের বলে জায়গা করে নিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন লরকান টাকার। ঠিকঠাক খেলতে না পারায় লিটন দাসের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে কট বিহাইন্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। টাকারের ব্যাট থেকে এসেছে ৭ বলে ৪ রান।

এদিন প্রথম থেকেই বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে ব্যাটিং করেছেন স্টার্লিং। তাতে দারুণ ব্যাটিংয়ে পেয়েছেন এবারের সিরিজে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। রিশাদ হোসেনের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ৩১ বলে ক্যারিয়ারের ২২তম পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন আইরিশ অধিনায়ক। স্টার্লিংয়ের ব্যাটে জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে যায় সফরকারীরা।

হাফ সেঞ্চুরির পর শরিফুলের উপর চড়াও হয়েছিলেন স্টার্লিং। তিন চার ও এক ছক্কায় বাঁহাতি এই পেসারের ওভার থেকে নিয়ে এসেছেন ২০ রান। ডানহাতি এই ওপেনারের ঝড় থামান রিশাদ। ডানহাতি এই লেগ স্পিনারের বলে লং অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন স্টার্লিং। বেশ খানিকটা উঁচুতে ওঠায় ক্যাচ লুফে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

৪১ বলে ৭৭ রানের ইনিংস খেলা অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের বিদায়ে নিজের অভিষেক ম্যাচে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি উইকেট পেয়েছেন রিশাদ। এরপর হ্যারি টেক্টর ও কার্টিস ক্যাম্ফারের ব্যাটে ৭ উইকেটের সহজ জয় নিশ্চিত করে আয়ারল্যান্ড। বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট পেয়েছেন তাসকিন, শরিফুল এবং রিশাদ।

হোয়াইটওয়াশ করার মিশনে এদিন টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে চার মারেন লিটন-রনি দুজনই। সেই ওভারে ৯ রান নিয়ে শেষ দুই ম্যাচের মতো আগ্রাসী সূচনার ইঙ্গিত দেন দুই ওপেনার। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারেই আঘাত হানেন মার্ক অ্যাডায়ার। তাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন লিটন (৫)।

ডিপ পয়েন্টে তা লুফে নেন জর্জ ডকরেল। তৃতীয় ওভারে হ্যারি টেক্টরের বলে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন শান্ত। ৮ বলে ৪ রান করা এই ব্যাটারের ক্যাচটি লুফে নেন কার্টিস ক্যাম্ফার। চতুর্থ ওভারে আক্রমণে আসেন ক্যাম্ফার। তার বলে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন রনি। এবার ক্যাচ ধরেন অ্যাডায়ার। ১০ বলে তিনটি চারে ১৪ রান করেন রনি।

ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আগ্রাসী সূচনা করেন হৃদয়। একটি চার ও একটি ছক্কায় টেক্টরের সেই ওভারে ১২ রান তোলে বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লে'র শেষ ওভারে ফিরে যান সাকিবও। বাংলাদেশের অধিনায়কের উইকেটটি নিয়েছেন অ্যাডায়ার। সাকিবের মিড উইকেটে তুলে দেয়া ক্যাচটি ধরেন বেন হোয়াইট।

পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পরের ওভারে ফিরে যান হৃদয়ও। ১০ বলে ১২ রান তুলে হোয়াইটের বলে ফিরে যান তিনি। যথারীতি এবারও মিড উইকেটে ওঠে ক্যাচ, যা লুফে নেন টেক্টর। ৪১ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেট হারানো দলটি ৬১ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারায়। শামীম এক পাশ থেকে লড়লেও তাকে সঙ্গ দিতে ব্যর্থ হন রিশাদ হোসেন এবং তাসকিন আহমেদরা।

দুজনই ম্যাথু হামফ্রেইসের করা ইনিংসের দশম ওভারে ফিরে গেছেন।বাকি সময়টা একাই লড়ে যান শামিম। ১৭ বলে ১৩ রান করে মাঝের দিকে তাকে সঙ্গ দিয়ে যান নাসুম আহমেদ। শরিফুল করেন পাঁচ রান। ১৯তম ওভারে নিজের হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন শামীম।

ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি হাঁকাতে ৪০ বল খেলেন তিনি। ইনিংসের শেষ ওভারে দশম উইকেট হিসেবে মাঠ ছাড়ার আগে ৪২ বলে ৫১ রান করেন শামীম। ফিওন হ্যান্ডের গুড লেংথের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ডকরেলের মুঠোবন্দী হন তিনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

বাংলাদেশ- ১২৪/১০ (১৯.২ ওভার) (শামীম ৫১, রনি ১৪; অ্যাডায়ার ৩/২৫)।

আয়ারল্যান্ড- ১২৬/৩ (১৪ ওভার) (স্টার্লিং ৭৭, ক্যাম্ফার ১৬*, টেক্টর ১৪*; রিশাদ ১/১৯)