বাংলাদেশ- আয়ারল্যান্ড সিরিজ

৭ বলে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে জেতালেন তাসকিন

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 13:40 সোমবার, 27 মার্চ, 2023

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

বোলিং আক্রমণে এসে নিজের প্রথম বলেই লরকান টাকারকে বোল্ড করলেন তাসকিন আহমেদ। সেই ওভারে তাসকিন নিয়েছেন আরও ২ উইকেট। মাত্র ৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেয়া তাসকিনের ওভারেই গুঁড়িয়ে যায় আয়ারল্যান্ডের জয়ের স্বপ্ন। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে প্রথম বলেই ফেরান হ্যারি টেক্টরকে। তাতে নিজের প্রথম ৭ বলেই ৪ উইকেট নেন তাসকিন। পুরো ম্যাচে ২ ওভার বোলিং করে ৪ উইকেট নেয়া ডানহাতি এই পেসার দিয়েছেন ১৬ রান। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ২২ রানে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।

বোলিং আক্রমণে এসে নিজের প্রথম বলেই লরকান টাকারকে বোল্ড করলেন তাসকিন আহমেদ। সেই ওভারে তাসকিন নিয়েছেন আরও ২ উইকেট। মাত্র ৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেয়া তাসকিনের ওভারেই গুঁড়িয়ে যায় আয়ারল্যান্ডের জয়ের স্বপ্ন। শেষ দিকে হ্যারি টেক্টরের কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ২০ রানে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।

চট্টগ্রামে ৮ ওভারে ১০৪ রান তাড়া করতে নেমে নাসুম আহমেদের বলে তারই মাথার উপর দিয়ে তুলে দিয়ে চার মারেন পল স্টার্লিং। আইরিশ অধিনায়ক সেই ওভারে মেরেছেন আরও দুই চার। শেষ বলে রস অ্যাডায়ার চার মেরে নাসুমের করা প্রথম ওভার থেকে আয়ারল্যান্ড আনে ১৮ রান। মুস্তাফিজুর রহমানের করা দ্বিতীয় ওভার থেকে এসেছে ১৪ রান। তাতে দুই ওভারে বিনা উইকেটে ৩২ রান তোলে সফরকারীরা।

স্টার্লিং ও অ্যাডায়ারের রান তোলার গতি থামান হাসান মাহমুদ। বৃদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে প্রথম তিন বল ডট দেয়ার পর আইরিশদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন ডানহাতি এই পেসার। হাসানের দারুণ এক ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান ১০ বলে ১৩ রান অ্যাডায়ার। উইকেট নেয়ার সঙ্গে সেই ওভারে মাত্র ৫ রান দেন হাসান। তিনে নামা লরকান টাকারকে রান খাতা খোলার পরই বিদায় করেছেন তাসকিন আহমেদ।

ইনিংসের চতুর্থ ওভারে প্রথমবার বোলিং এসে নিজের প্রথম বলেই দুর্দান্ত ইয়র্কার ডেলিভারি করেন ডানহাতি এই পেসার। খানিকটা এগিয়ে খেলতে চেয়ে বলেন লাইন মিস করেন টাকার। তাতে ১ রানেই ফিরে যেতে হয় তাকে। একই ওভারে চতুর্থ বলে স্টার্লিংকেও ফেরান তাসকিন। ২৭ বছর বয়সি এই পেসারের গুড লেংথ ডেলিভারিতে ক্রস ব্যাটে খেলতে চেয়েছিলেন স্টার্লিও। তবে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি তিনি।

ফলে ৮ বলে ১৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন আইরিশ অধিনায়ক। তাসকিনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে থার্ডম্যানে থাকা শামীম পাটোয়ারির হাত ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে আউট হন জর্জ ডকরেল। তাতে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি হয় তাসকিনের। সেটি না পারলেও প্রথম বলে টাকারকে ফেরানোয় ওভার হ্যাটট্রিক হয় তার।

এদিকে প্রথম ওভারে মাত্র ৫ রান দিলেও নিজের দ্বিতীয় ওভারে হাসান দিয়েছেন ১৬ রান। তবে সাকিব আল হাসান প্রথমবারের মতো বোলিং এসে মাত্র ৫ রান দিলে শেষ দুই ওভারে আইরিশদের প্রয়োজন হয় ৩৯ রান। টেক্টর ও গ্যারেথ ডেলানিরা সেই সমীকরণে মেলাতে পারেননি। তাতে প্রথম ম্যাচে হারতে হয়েছে আইরিশদের।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে থাকেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন ও রনি। প্রথম ওভারেই হ্যারি টেক্টরকে ছক্কা হাঁকান লিটন, সেই ওভারে আসে ১১ রান। দ্বিতীয় ওভারে মার্ক অ্যাডায়ারকে ছক্কা হাঁকান রনি। সেই ওভারে লিটন আরেকটি চার হাঁকালে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে যোগ হয় আরও ১৪ রান।

আইরিশ বোলারদের ওপর এ দিন একটু বেশিই চড়াও হন রনি। পাওয়ার প্লে'র শেষ ওভারে অ্যাডায়ারকে তিনটি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান তিনি। সেই ওভারে ২০ রানের সুবাদে পাওয়ার প্লে'তে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ৮১ রান। সমানতালে এগিয়ে যাচ্ছিলেন লিটনও।

যদিও হাফ সেঞ্চুরি করতে পারেননি তিনি। অষ্টম ওভারে ব্যক্তিগত ৪৭ রানে বিদায় নেন ড্যাশিং এই ওপেনার। ২৩ বলে খেলা ইনিংসটিতে ছিল চারটি চার ও তিনটি ছক্কার মার। ক্রেইগ ইয়ংয়ের স্লোয়ার বল বুঝতে পারেননি লিটন। মিড অফে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। সহজ ক্যাচ মিস করেননি আইরিশ দলপতি পল স্টার্লিং।

প্রথম ৫০ রান পেতে বাংলাদেশের সময় লাগে ২৫ বল। আর পরের ৫০ পার করতে বাংলাদেশ খেলে ২৮ বল। লিটন ফিরলেও ঝড় থামাননি রনি। মাত্র ২৪ বলে নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান বাড়াতে থাকেন নাজমুল হোসেন শান্তও। যদিও ১৩ বলে ১৪ রান করে ফিরে যান শান্ত। টেক্টরের বলে স্টাম্পিং হয়ে ফিরে যান তিনি। এরপর শামীমও হাত খুলে খেলতে থাকেন রনির সঙ্গে।

১৪তম ওভারে বিদায় নেন রনি। ফেরার আগে ৩৮ বলে সাতটি চার এবং তিনটি ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ৬৭ রান করেন তিনি। গ্রাহাম হিউমের অফ কাটারে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন রনি। এর এক ওভার পর বিদায় নেন শামীমও। ফেরার আগে ২০ বলে ৩০ রান করেন তিনি। অ্যাডায়ারের স্লোয়ারে এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ তুলে দেন শামীম। এই ক্যাচটিও লুফে নেন স্টার্লিং।

১৭২ রানে চার উইকেট হারানোর পর সাকিব আল হাসানের ব্যাটে দুইশ পার করে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। সাকিব ২০ এবং মেহেদী হাসান মিরাজ ৫ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন। ১৯.২ ওভারের পর বৃষ্টি নামলে খেলা বন্ধ হয় খেলা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর-

বাংলাদেশ- ২০৭/৫ (১৯.২ ওভার) (রনি ৬৭, লিটন ৪৭, শামীম ৩০; ইয়াং ২/৪৫)

আয়ারল্যান্ড-  ৮১/৫ (৮ ওভার) (ডেলানি ২১*, টেক্টর ১৯, স্টার্লিং ১৭; তাসকিন ৪/১৬, হাসান ১/২০)