বিপিএল

বিজয়ের হাফ সেঞ্চুরি ও জানাতের ক্যামিওতে শীর্ষে বরিশাল

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 18:40 শুক্রবার, 27 জানুয়ারি, 2023

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট, সিলেট থেকে ||

হাফ সেঞ্চুরি করা এনামুল হক বিজয় ফেরার পর শেষ ৫ ওভারে ফরচুন বরিশালের প্রয়োজন ছিল ৫৪ রান। ইফতিখার আহমেদ দ্রুত বিদায় নিলে খানিকটা চাপে পড়ে সাকিব আল হাসানের দল। তবে শেষ দিকে করিম জানাতের ১২ বলে ৩১ রানের ক্যামিওতে ৪ বল বাকি থাকতে জয় নিশ্চিত করে বরিশাল। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৩ উইকেটে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেল তারা।

সিলেটে জয়ের জন্য ১৬৯ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারে মাত্র ২ রান তুলে বরিশাল। পরের ওভারে মেহেদি হাসান রানার স্লোয়ার যেন বুঝতেই পারছিলেন না বিজয়। প্রথম চার বলে কোনো রান নিতে না পারলেও শেষ দুই বলে ছক্কা মারেন ডানহাতি এই ওপেনার। ১১ বলে ১ রান করা বিজয় পৌঁছে যান ১৩ বলে ১৩ রানে। শুভাগত হোম বোলিংয়ে আসলে ডানহাতি এই অফ স্পিনারের উপর চড়াও হন বিজয়। দুই ছক্কা ও এক চারে সেই ওভার থেকে আসে ১৯ রান। মোমেন্টাম পেয়ে হাত খুলে খেলতে থাকেন তিনি।

বিজয় যখন আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করছিলেন তখন মেহেদিকে উইকেট দিয়ে আসেন সাইফ হাসান। বাঁহাতি এই পেসারের বলে তারই হাতে ক্যাচ দিয়ে ১০ রানে ফেরেন তিনি। সাইফ আউট হলেও রানের চাকা সচল রাখেন বিজয়। কার্টিস ক্যাম্ফারের পাঁচ বলে তিনটি চার এবং একটি ছক্কা মেরে ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। শেষ বলে চার মেরে সেই ওভার থেকেও ১৯ রান আনেন বিজয়। এদিকে তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি সাকিব।

নিহাদ উজ জামানের ঝুলিয়ে দেয়া বলে বোল্ড হন বরিশালের অধিনায়ক। দারুণ ছন্দে থাকা সাকিব এদিন আউট হয়েছেন মাত্র ২ রানে। পরের বলে সাজঘরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। ডানহাতি এই ব্যাটার ডাউন দ্যা উইকেটে এসে খেলতে চাইলে বলটি ওয়াইড দেন নিহাদ। তাতে স্টাম্পিং হয়ে গোল্ডেন ডাক মেরে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। চাতুরাঙ্গাি ডি সিলভাকে ৩ রানের বেশি করতে দেননি নিহাদ। বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে স্টাম্পিং হয়েছেন তিনি।

টানা দুই বলে দুই উইকেট হারানোর পর বিজয় ও ইফতিখার মিলে ৩২ রান যোগ করেন। তাদের দুজনের জুটি ভাঙেন মৃত্যুঞ্জয়। বাঁহাতি এই পেসারের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন বিজয়। ডানহাতি এই ওপেনার এদিন আউট হয়েছেন ৫০ বলে ৭৮ রানে। দারুণ ছন্দে থাকা ইফতিখারকে ইনিংস বড় করতে দেননি নিহাদ। বাঁহাতি এই স্পিনারের বলে বোল্ড হয়েছেন ১৩ রান করা এই ব্যাটার। তবে শেষ দিকে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন জানাত।

দারুণ সব শটে তিন চার ও দুই ছক্কায় মাত্র ১২ বলে ৩১ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন আফগানিস্তানের এই ব্যাটার। শেষ ওভারে যখন মাত্র ২ রান প্রয়োজন যখন মেহেদির প্রথম বলে ফ্লিক করতে গিয়ে ক্যাচ আউট তিনি। জানাত ফিরলেও ১৪ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন সালমান হোসেন। চট্টগ্রামের হয়ে মাত্র ১৭ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন নিহাদ।

এর আগে চট্টগ্রামের প্রথম ম্যাচেই একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন মেহেদি মারুফ। পারফর্ম করতে না পারায় জায়গা হারান তিনি। বিপিএলের মাঝপথে এসে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে সুযোগ পেলেও সেটা কাজে লাগাতে পারেননি ডানহাতি এই ওপেনার। টস হেরে ব্যাটিং করতে নামার দিনে দ্বিতীয় ওভারেই মেহেদিকে হারায় চট্টগ্রাম। ওয়াসিম জুনিয়রের বলে পুল করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে টপ এজ হওয়ায় সরাসরি বোলারের হাতে চলে যায়।

তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি উন্মুখ চাঁদ। খালেদ আহমেদের বলে সালমান হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৬ রানে ফেরেন ডানহাতি এই ব্যাটার। ৩৬ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ম্যাক্স ও’ডাউডকে সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রামের রান বাড়াতে থাকেন আফিফ। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৪২ রান। খালেদের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে উইকেটকিপারের গ্লাভসে ক্যাচ দেন ৩৩ রান করা ও’ডাউড।

পাঁচে নেমে দলের প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি শুভাগত হোম। কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে আলতো করে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে থার্ডম্যানে ক্যাচ তুুলে দেন ডানহাতি এই ব্যাটার। চট্টগ্রামের অধিনায়ক এদিন আউট হয়েছেন মাত্র ২ রানে। দলের বাড়ানোর চেষ্টায় সাজঘরে ফেরেন আফিফ। রাব্বির বলে বাঁহাতি এই ব্যাটারের দারুণ ক্যাচ লুফে নেন ইফতিখার। আফিফ আউট হন ২৩ বলে ৩৭ রানের ইনিংস খেলে।

১০২ রানে ৫ উইকেট হারানো চট্টগ্রামের রান দেড়শ পার করেন ক্যাম্ফায়ার ও শুক্কুর। বিশেষ করে আয়ারল্যান্ডের ক্যাম্ফার ছিলেন দুর্দান্ত। চারটি চার ও দুটি ছক্কায় ২৫ বলে অপরাজিত ৪৫ রানের ইনিংস খেলেন ক্যাম্ফার। তাকে সঙ্গ দেয়া ইরফান ১৯ বলে ২০ রান করেছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স- ১৬৮/৬ (২০ ওভার) (ক্যাম্ফার ৪৫*, আফিফ ৩৭, ও’ডাউড ৩৩; খালেদ ২/২৬)

ফরচুন বরিশাল- ১৭১/৭ (১৯.২ ওভার) (বিজয় ৭৮, জানাত ৩১; নিহাদ ৪/১৭)