বিপিএল

গোলাপি উৎসবের দিনে সিলেটের হার

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 13:49 শুক্রবার, 27 জানুয়ারি, 2023

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট, সিলেট থেকে ||

মাশরাফি বিন মুর্তজাদের প্রথম সাত ম্যাচের পারফরম্যান্সের দাপটে সিলেট স্টেডিয়ামের পুরো গ্যালারি ছিল দর্শকে ভরা। দেখে মনে হচ্ছিলো এ যেন গোলাপি রঙের সমুদ্র। পুরো স্টেডিয়ামের উৎসবের আবহ থেমেছে খেলা শুরু হওয়ার পরই। ১৮ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে সমর্থকদের হতাশ করে সিলেট। মাশরাফি আর তানজিম হাসান সাকিবের ব্যাটে শেষ পর্যন্ত ৯২ রানের পুঁজি পেলেও তা যথেষ্ট ছিল না। রংপুর রাইডার্সের ৪ উইকেট তুলে নিলেও নুরুল হাসানের দলের কাছে ৬ উইকেটে হারতে হয়েছে সিলেটকে। 

জয়ের জন্য মাত্র ৯৩ রান তাড়া করতে নেমে বেশ দেখেশুনেই খেলছিলেন রংপুরের দুই ওপেনার নাইম শেখ ও রনি তালুকদার। তবে তাদের দুজনের জুটি ভাঙেন রেজাউর রহমান রাজা। ডানহাতি এই পেসারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে ইমাদ ওয়াসিমের হাতে ক্যাচ দেন ১৮ রান করা রাজা। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি শেখ মেহেদি। 

মাশরাফির গুড লেংথ ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে থিসারা পেরেরার হাতে ক্যাচ দেন ৮ রান করা এই ব্যাটার। পরের বলে শোয়েব মালিককে ফেরান মাশরাফি। ডানহাতি এই পেসারের বলে পুল করতে গিয়ে শর্টে দাঁড়িয়ে থাকা টম মুরসকে ক্যাচ দেন পাকিস্তানের এই ব্যাটার। দারুণ ছন্দে থাকা মালিক এদিন আউট হয়েছেন শূন্য রানে। 

আজমতউল্লাহ ওমরজাইও সুবিধা করতে পারেননি। মোহাম্মদ আমিরের বলে জাকির হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। তবে মোহাম্মদ নওয়াজকে সঙ্গে নিয়ে রংপুরের জয় নিশ্চিত করেন রনি। ডানহাতি এই ব্যাটার অপরাজিত ছিলেন ৪১ রানে। তাকে সঙ্গ দেয়া নওয়াজ করেছেন অপরাজিত ১৮ রান। সিলেটের হয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি।

এর আগে সিলেটের উইকেট নিয়ে বরাবরই ব্যাটারদের সহায়ক হতো। তবে সবশেষ কমাসে বদলে উইকেটের চরিত্র। বর্তমানে ব্যাটার নয় বরং এখানকার উইকেট বাড়তি ‍সুবিধা দেয় বোলারদের। যে কারণে এদিন টস আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন রংপুরের অধিনায়ক সোহান। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েন।

ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ভালো ব্যাটিং করায় প্রমোশন পেয়ে এদিন নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে ওপেন করতে নেমেছিলেন টম মুরস। তবে পজিশন বদলে সফল হতে পারেননি এই ইংলিশ ব্যাটার। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের গুড লেংথে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে ক্রস ব্যাট চালিয়ে আউট হন ২ রান করা মুরস। শেখ মেহেদির বলে ছক্কা মেরে সিলেটের চাপ কমানোর চেষ্টা করেছিলেন শান্ত। তবে বাঁহাতি এই ব্যাটারের সেই চেষ্টা কাজে দেয়নি।

টানা দুই বলে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে শোয়েব মালিকের হাতে ধরা পড়েন শান্ত। পাকিস্তানের এই ক্রিকেটার খানিকটা লাফিয়ে উঠে নিজের নিয়ন্ত্রণ রেখে ক্যাচ লুফে নিলে ৯ রানে ফিরতে হয় দারুণ ছন্দে থাকা এই ব্যাটারকে। তিনে নেমে রানের খাতাই খুলতে পারেননি তৌহিদ হৃদয়। ওমরজাইয়ের বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

ব্যর্থতার পাল্লা ভারী করেছেন মুশফিকুর রহিম। প্রথম বলে ওমরজাইয়ের অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড হন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। পরের ওভারে মেহেদির বলে স্টাম্পিং হয়ে সাজঘরের পথে হাঁটেন জাকির হাসান। বাঁহাতি এই ব্যাটারও রানের খাতা খুলতে পারেননি। উড়িয়ে মারতে গিয়ে থিসারা পেরেরা বিদায় নিলে বিপদে পড়ে সিলেট।

হারিস রউফের প্রথম বলে মিড উইকেটের উপর দিয়ে খেলতে গিয়ে ইমাদ ওয়াসিম আউট হলে মাত্র ১৭ রানে ৭ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। এরপর অবশ্য তানজিম হাসানকে সঙ্গে নিয়ে দলের বিপদ সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন মাশরাফি। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৪৮ রান। তাদের জুটি ভাঙেন হাসান মাহমুদ। ডানহাতি এই পেসারের বলে শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে স্লগ করতে গিয়ে ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ দেন মাশরাফি।

মোহাম্মদ নওয়াজকে টানা দুই বলে দুই ছক্কা মারা সিলেটের অধিনায়ক এদিন আউট হয়েছেন ২১ বলে ২১ রান করে। ১৯তম ওভারে তানজিম হাসানের ৩৬ বলে ৪১ রানের ইনিংস থামান হাসান। শেষ দিকে মোহাম্মদ আমির-রেজাউর রহমান রাজারা তেমন কোনো রান যোগ করতে না পারায় ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৯২ রানে থামে সিলেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিলেট স্ট্রাইকার্স- ৯২/৯ (২০ ওভার) (তানজিম হাসান ৪১, মাশরাফি ২১; হাসান ৩/১২, ওমরজাই ৩/১৭)

রংপুর রাইডার্স- ৯৩/৪ (১৫.৪ ওভার) (রনি ৪১*, নাইম ১৮, নওয়াজ ১৮*; মাশরাফি ২/১৮)