টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

পাকিস্তানকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 13:24 রবিবার, 13 নভেম্বর, 2022

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

ঘাসের উইকেটে সুবিধা পুরোটাই লুফে নিয়েছিলেন নাসিম শাহ এবং হারিস রউফ। পাকিস্তানের পেসারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ক্রমশই কঠিন হচ্ছিলো ইংল্যান্ডের সহজ সমীকরণ। তবে শাহীন শাহ আফ্রিদির চোটে হঠাৎই বদলে যায় প্রেক্ষাপট। ইফতিখার আহমেদ বল হাতে নিতেই আক্রমণ করে বসেন বেন স্টোকসরা। সমান একটি করে ছক্কা ও চারে সেই ওভার থেকে আসে ১৩ রান। স্টোকসের চড়াও হন মঈন আলীও। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি ইংল্যান্ডকে। পাকিস্তানের হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচ ছিনিয়ে নেয়ার সঙ্গে শিরোপাও নিজেদের করে নিল জস বাটলারের দল। ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টির বিশ্বকাপের ট্রফি উঁচিয়ে ধরলো ইংল্যান্ড।

মেলবোর্নে জয়ের জন্য ১৩৮ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বাটলারের দল। শাহীন আফ্রিদির দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন অ্যালেক্স হেলস। সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলা ডানহাতি এই ওপেনার এদিন আউট হয়েছেন মাত্র ১ রানে। আম্পায়ার্স কলে বেঁচে গেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি ফিল সল্ট।

ডানহাতি এই ব্যাটারের পর বাটলারকেও নিজের শিকার বানিয়েছেন রউফ। লেংথে পড়ে ডানহাতি এই পেসারের লাফিয়ে উঠা বলে উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাটলার। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক আউট হয়েছেন ২৬ রানে। এরপর জুটি গড়ে তোলেন স্টোকস এবং হ্যারি ব্রুক। তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ৩৯ রান।তাদের দুজনের জুটি ভাঙেন শাদাব খান। 

ডানহাতি এই লেগ স্পিনারের তৃতীয় বলটি উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে শাহীন আফ্রিদির হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ২০ রান করা ব্রুক। এরপর ১৩ বলে ১৯ রানের ইনিংস খেলে আউট হন মঈন। শেষ দিকে এসে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান স্টোকস। মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলে চার মেরে ৪৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। ওয়াসিমের বল মিড উইকেটে ঠেলে দিয়ে ইংল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করেন স্টোকস।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম ওভারেই আউট হতে পারতেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। বেন স্টোকসের বলে মিড অফে ঠেলে দিয়ে রান নেওয়ার জন্য দৌড় দিয়েছিলেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। দ্রুত থ্রো করলেও সরাসরি স্টাম্প ভাঙতে পারেননি জর্ডান। তাতে বাইরে থাকলেও জীবন পেয়ে যান রিজওয়ান। জীবন পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি পাকিস্তানের এই ব্যাটার।

স্যাম কারানের দারুণ এক ডেলিভারিতে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন ১৫ রান করা রিজওয়ান। তিনে নেমে এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি মোহাম্মদ হারিস। আদিল রশিদের ঝুলিয়ে দেয়া বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দেন তরুণ এই ব্যাটার। স্টোকস ক্যাচ নিলে মাত্র ৮ রানে ফিরে যান হারিস। এরপর শান মাসুদকে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন বাবর আজম।

তাদের দুজনের ৩৯ রানের জুটিও ভাঙেন রশিদ। ডানহাতি এই লেগ স্পিনারের গুগলি বুঝতে না পেরে রশিদের হাতেই ক্যাচ তুলে দেন পাকিস্তানের অধিনায়ক। সেমিফাইনালে সেমিফাইনাল করা বাবর এদিন আউট হয়েছেন ২৮ বলে ৩২ রান করে। পাঁচে নামা ইফতিখার আহমেদ সাজঘরে ফেরেন শূন্য রানে। স্টোকসের বলে ডিফেন্স করতে গিয়ে জস বাটলারের গ্লাভসে ক্যাচ দেন ডানহাতি এই ব্যাটার।

এরপর শাদাব ও মাসুদ মিলে জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও সেটা খুব বেশি বড় করতে দেননি কারান। বাঁহাতি এই পেসারের লেংথ ডেলিভারিতে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লিয়াম লিভিংস্টোনের হাতে ক্যাচ দেন ৩৮ রান করা মাসুদ। বাঁহাতি এই ব্যাটার ফেরার পর জর্ডানকে উইকেট দিয়ে আসেন ১০ রান করা শাদাব। 

শেষ দিকে মোহাম্মদ নওয়াজকে আউট করেন কারান। এরপর আর বেশি দূর এগোতে পারেনি পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত বাবরের দল থামে ১৩৭ রানে। ইংল্যান্ডের হয়ে কারান তিনটি এবং দুটি করে উইকেট নিয়েছেন রশিদ ও জর্ডান। এ ছাড়া একটি উইকেট নিয়েছেন স্টোকস। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান- ১৩৭/৮ (২০ ওভার) (মাসুদ ৩৮, বাবর ৩২, শাদাব ২০; কারান ৩/১২, রশিদ ২/২২)

ইংল্যান্ড - ১৩৮/৫ (১৯ ওভার) (স্টোকস ৫২*, বাটলার ২৬, ব্রুক ২০, মঈন ১৯; হারিস ২/২৩)