ত্রিদেশীয় সিরিজ

ইনটেন্ট-ইমপ্যাক্টের জগাখিচুড়িতে বাংলাদেশের হার

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 07:40 শুক্রবার, 07 অক্টোবর, 2022

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান: ১৬৭/৫ (২০ ওভার) (রিজওয়ান ৭৮*, শান ৩১) (তাসকিন ২/২৫)

বাংলাদেশ: ১৪৬/৮ (২০ ওভার) (লিটন ৩৫, ইয়াসির ৪২*) (ওয়াসিম ৩/২৪) 

আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। তবে বিশ্বমঞ্চে নামার আগে প্রস্তুতির শুরুটা ভালো হল না নুরুল হাসান সোহানের দলের। সিরিজের প্রথম ম্যাচ পাকিস্তানের কাছে ২১ রানে হেরেছে লাল-সবুজের দলটি।

বাংলাদেশ ইনিংস:

১৬৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা সাবধানেই করেন দুই ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজ ও সাব্বির রহমান। পাকিস্তানি পেসারদের ভালোভাবে সামাল দিয়ে ৪ ওভারে স্কোরবোর্ডে ২৫ রান তুলে নেয় বাংলাদেশ। তবে মোহাম্মদ ওয়াসিমের বিপক্ষে বড় শট খেলতে গিয়ে ডিপ স্কোয়ার লেগে আসিফ আলির তালুবন্দি হন মিরাজ। ১১ বলে ১০ রান করেন তিনি।

পরের ওভারে হারিস রউফের গতি বুঝতে না পেরে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাব্বিরও। ৭৭ স্ট্রাইকরেটে ১৮ বলে ১৪ রান করে বিদায় নেন এই ব্যাটার। এরপর লিটনকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসেন আফিফ হোসেন। পাওয়ার প্লের শেষ থেকে দুজন বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে প্রতিপক্ষের বোলারদের খেলতে থাকেন।

তাদের ব্যাটে দলীয় ১০০'র দিকে হাটতে থাকে বাংলাদেশ। নিজেদের মধ্যে ৪০ বলে ৫০ রানের জুটিও গড়েন তারা। তবে মোহাম্মদ নাওয়াজকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে লিটন ফেরেন ৩৫ রানে। এরপরের বলে বলের লাইনের বিপক্ষে খেলতে গিয়ে এলবিডাব্লিউ হন মোসাদ্দেক হোসেন। গোল্ডেন ডাকে ফেরেন এই অলরাউন্ডার।

৮৭ রানে জোড়া উইকেট হারিয়ে বসা বাংলাদেশকে বিপদমুক্ত করতে পারেননি আফিফ ও সোহান। ২৫ রানে দলীয় ৯৯ রানের সময় আফিফ ফেরেন দাহানিকে উইকেট দিয়ে। খানিক পর ৯ বলে ৮ রান করে বিদায় নেন সোহান। এরপর ১৯তম ওভারে এসে পর পর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ ওয়াসিম।

শেষ ১০ বলে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন দাঁড়ায় ৪৮ রান। একপ্রান্তে ইয়াসির আলি লড়াই করে শুধু পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছেন। শেষ ওভারে হারিস রউফের বিপক্ষে ২০ রান নিলেও নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪৬ রান। ওয়াসিম শিকার করেন ৩ উইকেট। 

পাকিস্তান ইনিংস:

টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুর ওভারে তাসকিন আহমেদকে দেখে শুনে খেললেও দ্বিতীয় ওভার থেকে স্কোরবোর্ডে রান যোগ করতে থাকেন বাবর আজম-মোহাম্মদ রিজওয়ান। লম্বা ভ্রমণের ক্লান্তির কারণে এই ম্যাচ না  খেলা নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব হাসানের জায়গায় সুযোগ পাওয়া নাসুম আহমেদও নিজের প্রথম ওভারে ব্যাটারদের বিপদে ফেলতে পারেননি।

প্রথম ৪ ওভারে রোটেশন পলিসিতে ৪ বোলার দিয়ে বল করিয়েও লাভবান হননি নুরুল। পাওয়ার প্লে'তে কোন উইকেট না হারানো পাকিস্তান ৬.৩ ওভারে পায় ৫০ রানের পুঁজি। কিন্তু এরপরই অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে এসে উইকেট তুলে নেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তাকে সুইপ করতে গিয়ে মুস্তাফিজুর রহমানের তালুবন্দি হন বাবর। ২৫ বলে ২২ রান করেন পাকিস্তানি অধিনায়ক।

এরপর ক্রিজে নামা শান মাসুদকে শুরুতে চেপে ধরলেও পরবর্তীতে তা বজায় রাখতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। রিজওয়ানের সঙ্গে জুটি বেধে দেখে শুনে রান যোগ করতে থাকেন শানও। তবে দলীয় ১০০'র আগে ১৩তম ওভারে হাসান মাহমুদের তালুবন্দি হন শান। 

২২ বলে ৩১ রান করে নাসুমের শিকার হয়ে ফেরেন শান। তিনি ফিরলেও হায়দার আলিকে নিয়ে ১৪তম ওভারে দলীয় ১০০ রানের পুঁজি পায় পাকিস্তান। এর খানিক পর ক্রিজে নেমে ১৫তম ওভারের শেষ বলে তাসকিনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ইয়াসিরের তালুবন্দি হন হায়দার। ৬ বলে ৬ রান করেন তিনি। 

হায়দারের বিদায়ে ক্রিজে আসা ইফতেখার শুরু থেকেই হাত খুলে খেলতে থাকেন। তবে ৮ বলে ১৩ রান করে হাসানের প্রথম শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। এরপর আসিফ আলি এসে বড় রান করতে পারেননি। ৪ বলে ৪ রান করে তাসকিনকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ব্যাটারও।

সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝেও রানের চাকা সচল রাখেন রিজওয়ান। শেষের দিকে মোহাম্মদ নাওয়াজের ৫ বলে ৮ রানের ইনিংসের সুবাদে ১৬৭ রানের পুঁজি পায় পাকিস্তান। রিজওয়ান অপরাজিত থাকেন ৫০ বলে ৭৮ রানে। ২৫ রানে ২ উইকেট নেন তাসকিন।

পাকিস্তান একাদশ: বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শান মাসুদ, ইফতেখার আহমেদ, শাদাব খান, হায়দার আলী, আসিফ আলি, মোহাম্মদ নাওয়াজ, শাহনাওয়াজ দাহানি, হারিস রউফ, মহাম্মাদ ওয়াসিম।

বাংলাদেশ একাদশ: সাব্বির রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন, ইয়াসির আলি রাব্বি, লিটন দাস, নুরুল হাসান সোহান, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, নাসুম আহমেদ।