বাংলাদেশ

ব্যর্থতার ভয়ে লক্ষ্য সম্পর্কে বলতে পারি না: সোহান

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক

ক্রিকফ্রেঞ্জি ডেস্ক
প্রকাশের তারিখ: 15:34 বুধবার, 05 অক্টোবর, 2022

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

'আমি মনে করি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়নও হতে পারি আমরা, যদিও সে রাস্তাটা মোটেও সহজ হবে না।'-গত সেপ্টেম্বরেই এমন সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন। শুধুই যে বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর এমনটা বিশ্বাস করেন তা কিন্তু নয়। নুরুল হাসান সোহানও বিশ্বাস করেন বাংলাদেশ বিশ্বাকাপ জেতার সামর্থ্য রাখে, তবে সমালোচনার ভয়ে তা প্রকাশ করতে পারেন না। টি-টোয়েন্টি দলের সহ-অধিনায়ক মনে করেন, বিশ্বকাপ জেতার মতো লক্ষ্য বা উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকাটাও একটা দলের জন্য জরুরী। যা সামনের দিনের ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।

বিশ্বকাপ কিংবা এশিয়া কাপের মতো বড় আসরে বাংলাদেশের সাফল্যের হার খুবই কম। আর ফরম্যাট যদি হয় টি-টোয়েন্টি তাহলে সাফল্যের পারদটা আরও একধাপ নিচে নেমে আসে। এই যেমন সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে সদ্য সমাপ্ত এশিয়াপ কাপ সবগুলো আসরেই ব্যর্থ ছিল বাংলাদেশ। তারপরও আসন্ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্বাকাপে বড় স্বপ্ন নিয়েই মাঠে নামতে চায় টাইগাররা।

মনে বিশ্বকাপ জয়ের উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকলেও বাস্তব চিত্রে বাংলাদেশের জন্য কাজটা বেশ কঠিন। এমনিতেই অস্ট্রেলিয়ার মতো অচেনা আর বাউন্সি কন্ডিশন, তাছাড়া দলের সাম্প্রতিক ফর্মও টাইগারদের পক্ষে কথা বলে না। তারপরও সোহান মনে করেন, বাস্তব চিত্র যেমনই হোক অন্তত মনের মধ্যে এই বিশ্বাসটা রাখা উচিত যে, দল হিসেবে বাংলাদেশ পারবে।

তবে নিজেদের এমন স্বপ্নের কথা গণমাধ্যমে বলতে পারেন না ক্রিকেটাররা, এর কারণ হিসেবে সোহান দায়ী করেছেন এদেশের সংস্কৃতিকে। ক্রিকেট ভিত্তিক অনলাইন সংবাদ মাধ্যম ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে তিনি বলেন, 'আমাদের সংস্কৃতি এমন যে আমরা আমাদের লক্ষ্য বা উচ্চাকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে কথা বলতে পারি না, ব্যর্থতার ভয়ে।'

বিশ্বের যেকোনো অঞ্চলের চেয়ে এই উপমহাদেশে এখন ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বেশি। আর বাংলাদেশ সেই জনপ্রিয়তার দৌঁড়ে সম্ভবত সামনের সারিতেই থাকবে। এদেশের মানুষের ক্রিকেট প্রেম যেমন বেশি, ঠিক তেমনি ব্যর্থতার পর ক্রিকেটারদের সমালোচনা করতেও তারা এক কাঠি সরেস।

ক্রিকেট ভক্তদের এমন আলোচনা-সমালোচনায় মনযোগ না দিয়ে মাঠের ক্রিকেটে নিজেদের সেরাটা দিতে চান সোহান। তার মতে, খারাপ খেললে সমালোচনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তবে এই সমালোচনার ভয়ে স্বপ্ন দেখায় পিছপা হতে চান না। ইতিবাচক ক্রিকেট খেলে ভক্তদের মধ্যেও আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে চান তিনি।

সোহান বলেন, 'নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সত্ত্বেও আমাদের এই সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে। আমরা যখন ভালো খেলতে পারব না, তখন আমাদের সমালোচনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। কিন্তু আমাদের সাফল্যের কথা বলা শুরু করতে হবে; এটা আমাদের বিশ্বাস করতে হবে। আমরা তিন-চারজন যদি ফর্মে আসতে শুরু করি, তাহলে বাংলাদেশ ভালো ফলাফল পেতে পারে।'

বাংলাদেশ দল ওয়ানডে ক্রিকেটে যেকোনো পরিস্থিতে যেকোনো দলকে হারানোর সামর্থ্য রাখে, এই লাইনটার সঙ্গে সম্ভবত সবাই একমত হবেন। কারণ বাংলাদেশ দল তা করে দেখিয়েছে। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে এই আত্মবিশ্বাস অল্প দিনে তৈরি হয়নি। সোহানের মতে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও একদিন দল এমন আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমি যদি আজ বলি যে, আমরা বিশ্বকাপ জিততে চাই, তাহলে আমাদের এখনই এটি জিততে হবে এমন না। কিন্তু এমন কথা বলতে থাকলে হয়তো আমাদের পরের ব্যাচ বিশ্বকাপ জয়ের ব্যাপারে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে। হয়তো আমি তখন (দলের) আশেপাশে থাকব না, তবে আত্মবিশ্বাসটি সেখানে (দলে) থাকবে।'